শিক্ষার্থীদের শেখার অভ্যাস আরও অনুসন্ধানমূলক ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) ‘গাইডেড লার্নিং’ সুবিধা চালু করেছে গুগল। গুগলের শিক্ষা ও গবেষণাভিত্তিক ভাষা মডেল লার্নএলএমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে সুবিধাটি। গুগলের তথ্যমতে, গাইডেড লার্নিং শিক্ষার্থীদের চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি যেকোনো বিষয় বোঝাতে ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা দিতে পারে। এমনকি ব্যবহারকারীদের শেখার ধরন বুঝে তথ্যও উপস্থাপন করে।

গুগল জানিয়েছে, গাইডেড লার্নিং সুবিধা এমন প্রশ্ন উপস্থাপন করে যেগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্লেষণমূলক চিন্তার বিকাশ ঘটে। এতে ছবি, ডায়াগ্রাম, কুইজ ও ভিডিওর সমন্বয়ে শেখার বিষয়গুলোকে আরও সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা হয়। গাইডেড লার্নিং এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ও বন্ধুসুলভ পরিবেশে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা যেসব প্রশ্ন শ্রেণিকক্ষে জিজ্ঞাসা করতে সংকোচ বোধ করে, সেসব প্রশ্নের উত্তর সহজেই পাওয়া যায়।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের সহজে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার সুযোগ দিতে শিক্ষকরাও গাইডেড লার্নিং সুবিধার নির্দিষ্ট লিংক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন। আবার শিক্ষার্থীদের সরাসরি গুগল ক্লাসরুমের সঙ্গেও যুক্ত করতে পারবেন তাঁরা। ফলে শ্রেণিকক্ষের বাইরেও শিক্ষার্থীদের শেখার সুযোগ তৈরি হবে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে থাকা লালনের গানের পাণ্ডুলিপি ফেরত চাইলেন কুষ্টিয়ার ডিসি

কুষ্টিয়ার আশ্রম থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ভারতের কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।  ঐতিহাসিক সেই গানের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ভোলপুর শহরে অবস্থিত শান্তি নিকেতন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছিলেন লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও গবেষকরা। তবে তা ফেরত পাওয়া যায়নি। 

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন একাডেমিতে পাণ্ডুলিপিগুলো ফেরত চেয়েছেন। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন পাঠানো হয়েছে।

লিখিত আবেদনে ডিসি উল্লেখ করেছেন, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন আশ্রম থেকে লালন শাহের গানের একটি খাতা কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যা বর্তমানে শান্তি নিকেতনে সংরক্ষিত আছে। প্রায় ১৩৫ বছরের পুরোনো উক্ত খাতায় লালন শাহের ৩১৪টি গান রয়েছে। ইতোপূর্বে শান্তি নিকেতন থেকে লালন শাহের গানের পাণ্ডুলিপির একটি অনুলিপি প্রেরণ করা হলেও, মূল পাণ্ডুলিপি সেখানেই রয়ে গেছে। 

প্রতি বছর লালন তিরোধান দিবস ও লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে লক্ষ লক্ষ দেশ-বিদেশি লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের আগমন ঘটে। তাদের সবার পক্ষ থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত আনার দাবি উঠেছে। তদুপরি সরকার ১৭ অক্টোবর লালন তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং জাতীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় লালন তিরোধান দিবসের গুরুত্ব আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের দাবির প্রেক্ষিতে লালন গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। 

এমতাবস্থায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত এনে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “লালনের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি। আমরা কলকাতা থেকে সেগুলো দ্রুত কুষ্টিয়ায় ফেরত আনতে চাই। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।” 

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ