৬ মাসে স্টারলিংকের ইন্টারনেট পাবে পাহাড়ের ১০০ স্কুল: পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা
Published: 9th, August 2025 GMT
পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এ কথা জানিয়ে বলেছেন, এ উদ্যোগ শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এক বিপ্লব হবে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসে অংশ নিতে পারবে। এতে শিক্ষার মানে সমতা নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, এ উদ্যোগ পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলবে, যা তাদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে জাতিগত জনগোষ্ঠীর মানসম্পন্ন শিক্ষার নিশ্চয়তা সম্পর্কে জানতে চাইলে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘আমার মূল চিন্তাভাবনা হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা। অন্য অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। আমরা সব সময় কোটা পাব না। প্রতিযোগিতা করতে হলে কিছু ভালো স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার প্রধান চিন্তা স্যাটেলাইট শিক্ষাব্যবস্থা। এ জন্য উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হোস্টেল নির্মাণ করতে হবে।’ সরকার পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৌশল কলেজ, একটি নার্সিং কলেজ, হোস্টেল, অনাথালয় ও ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনাও করছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ইউনিটে আসনশূন্য, বিশেষ মাইগ্রেশনের পর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি০৫ আগস্ট ২০২৫পার্বত্য এলাকার জনগণকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে সরকার তিন বছর মেয়াদি বাঁশ চাষ পরিকল্পনা এবং আরও পশুপালন ও মৎস্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানান পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি হবে বাঁশ চাষ। আমরা বাঁশের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়িয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই এবং এ অঞ্চলের পানি সংকট কমাতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকৃতি ও পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখেই পাহাড়ি অঞ্চল উন্নয়ন করতে চাই। পরিবেশ রক্ষায় বাঁশ একটি অত্যন্ত কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।’ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজু বাদাম, কফি ও ভুট্টার চাষেরও উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘আমরা পাহাড়ি জনগণ আর পিছিয়ে থাকতে চাই না। আমরা দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে একীভূত হতে চাই। সমাজে সবাই যেন ভূমিকা রাখে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সমাজ, ধর্ম ও রাষ্ট্র সম্পর্কে ভাবতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকবে হবে।’
আরও পড়ুনমাদ্রাসায়ও ফিরছে বৃত্তি, পরীক্ষা ৫ বিষয়ের ওপর০৭ আগস্ট ২০২৫সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, কাপ্তাই হ্রদের সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিত। তিনি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদকে সোনার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এ জলাশয় থেকে মাছ আহরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
সরকার পার্বত্য এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত ও সহায়ক ক্রীড়া পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
আরও পড়ুনজাপানি ভাষা শিক্ষা কোর্স, ভর্তি ফি মাত্র এক হাজার টাকা২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘হিলি বন্দরের অব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখা হবে’
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “হিলি পোর্টে কিছু অব্যবস্থাপনা রয়েছে। চেয়ারম্যানকে বলেছি, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। ২৪টি পোর্টের মধ্যে চারটি পোর্ট বন্ধ করা হয়েছে। অনেক পোর্ট রয়েছে, যেখান থেকে তেমন রাজস্ব আদায় হয় না।”
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে হিলি স্থলবন্দর পরিদর্শন এবং ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বিভিন্ন স্থলবন্দর প্রাইভেট সেক্টরে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ সরকার। সেই সাথে যেসব স্থলবন্দর দিয়ে সরকার কোন রাজস্ব পায় না, সেইসব স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৪টির মধ্যে চারটি স্থলবন্দর বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও চারটি স্থলবন্দর বন্ধের প্রক্রীয়াধীন রয়েছে। হিলি স্থলবন্দরের সমস্যাগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, রংপুর কাস্টমসের বিভাগীয় কমিশনার অরুন কুমার বিশ্বাস, হিলি কাস্টমসের সহকারী কমিশনার এএসএম আকরাম সম্রাটসহ অনেকে।
ঢাকা/মোসলেম/এস