ব্রাজিল থেকে তিনটি বন্দর ঘুরে চট্টগ্রামে আসা একটি কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়েছে। গত ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরে পৌছাঁর পর বন্দরের ‘রেডিয়েশন ডিটেকশন সিস্টেম’-এ তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়ে। 

চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ মারুফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হওয়ার পর কনটেইনারটির পণ্য খালাস স্থগিত রেখে এটি নিরাপদ স্থানে আলাদা করে রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ব্রাজিলের মানাউস থেকে সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক শিপিং কোম্পানি এমএসসির একটি কনটেইনারে পুরাতন লোহার স্ক্র্যাপ লোড করে কয়েকটি জাহাজ পরিবর্তন হয়ে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি হয়। ঢাকার আল আকসা স্টিল মিলস লিমিটেড এই স্ক্র্যাপ আমদানি করে। সর্বশেষ গত ৩ আগস্ট মাউন্ট ক্যামেরন নামে একটি জাহাজে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। 

আরো পড়ুন:

বুড়িমারী স্থলবন্দরে নিরাপত্তাকর্মী ছাঁটাইয়ের চেষ্টা

সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম বন্দরের ‘মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ রেডিয়েশন ডিটেকশন সিস্টেম’- এর মাধ্যমে এই কনটেইনারটিতে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়। এর পরপরই কনটেইনারটি নিরাপদ স্থালে আলাদা করা হয় এবং পণ্য খালাস স্থগিত করা হয়।

বন্দর সূত্র জানায়, কনটেইনারে থাকা কোনো লোহার টুকরো বা স্ক্র্যাপে তেজস্ক্রিয়তা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই তেজস্ক্রিয়তা কতোটা ক্ষতিকর তা নিরূপন করা জন্য বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রবিবার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, “পরমাণু শক্তি কমিশনকে আমরা ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি। অনুরোধ করেছি, একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানোর জন্য। বিশেষজ্ঞ টিম এসে কনটেইনারটি পরীক্ষা করবে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারন করা হবে।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেল অফিসে দেড় মাস ধরে নামজারি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গ্রাহকদের সেবায় হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।

এলআর (লোকাল রিলেশন্স) ফান্ডের টাকা নিয়ে এসিল্যান্ড ও ওই কার্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দে নামজারী বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

ভূমি কার্যালয়ে সেবা গ্রহিতাদের দাবি, নামজারি বন্ধ থাকার কারণে জমি রেজিষ্ট্রি বন্ধ হয়ে আছে। ফলে তাদের দূরারোগের চিকিৎসা,মেয়ের বিয়েসহ আর্থিক জরুরী কাজ কর্ম করতে পারছেন না।

জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা অঞ্চল গঠিত। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের সোনারগাঁওয়ে একটি ভূমি কার্যালয় ছিল। পরবর্তীতে গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ২০২৩ সালে জামপুর,সাদিপুর,নোয়াগাঁও, বারদী ও কাঁচপুর ইউনিয়নকে আলাদা করে কাঁচপুর সার্কেল অর্ন্তভূক্ত করা হয়।

বিগত সময়ে কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেলে ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হলেও বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম যোগদানের পর থেকে জটিলতা তৈরি হয়। ওই রাজস্ব সার্কেল অফিসে সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত এলআর ফান্ডের টাকা বন্টন নিয়ে এসিল্যান্ড ও কর্মচারীদের মধ্যেদ্বন্ধ তৈরি হয়।

বিগত দিনে এলআর ফান্ড থেকে মাস শেষে এসিল্যান্ড ৫০শতাংশ ও কর্মচারী, অফিস খরচ এবং ওমেদারদের সম্মানী বাবদ ৫০ শতাংশ খচর করা হতো। এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম যোগদান করার পর এলআর ফান্ড থেকে ৭০শতাংশ তিনি দাবি করেন।

কর্মচারীরা ৩০ শতাংশ টাকায় তাদের খরচ যোগান দেওয়া সম্ভব না বলে দাবি করেন। এসিল্যান্ড তার ৭০শতাংশ টাকা ছাড়া তিনি কোন নামজারি করবেন না বলে কর্মচারীদের জানিয়ে দেন। ফলে দেড় মাস ধরে নামজারি বন্ধ হয়ে আছে। এসিল্যান্ডের আইডি থেকে দেড় মাস ধরে সেকেন্ড অর্ডার দিচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কার্যালয়ে এক কর্মচারী জানান, এসিল্যান্ড আসার পর ওই কার্যালয়ে ওমেদারদের অপসারণ করা হয়। এলআর ফান্ডের টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। তাই নামজারী হচ্ছে না। তবে দু’একটি নামজারী হলেও সেগুলো মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে গোপনে হচ্ছে।  

হুমায়ুন কবির নামে এক সেবা গ্রহিতার দাবি, বর্তমানে এলআর ফান্ডের টাকা দ্বিগুন করা হয়েছে। আগে নামজারির জন্য নামজারি থেকে নামজারি করতে হলে আড়াই হাজার টাকা দিতে হতো। এখন ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। মূলজোত থেকে আগে বিঘা প্রতি ৫ হাজার দিতে হতো। এখন সেটা ১১হাজার করা হয়েছে। বর্তমান এসিল্যান্ড যোগদান করার পর থেকে এ নিয়ম করা হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়গুলোতেও দ্বিগুন টাকা নেওয়া হয়েছে।

সেবা গ্রহিতাদের দাবি, এক/দেড় মাস আগে নামজারির আবেদন করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নামজারী দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিলেও এসিল্যান্ড সেকেন্ড অর্ডার করছেন না। ফলে নামজারী করার প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে আটকে আছে। এসব সমাধানের জন্য কেউ দেখার নেই।

সেবা গ্রহিতার আব্দুল মজিদ মিয়া জানান, বারদী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের আওতায় লাধুরচর মৌজায় তার ২৬ শতাংশ জমি নামজারির জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে আবেদন করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা প্রস্তাব পাঠালেও এসিল্যান্ড সেকেন্ড অর্ডার না করার কারনে নামজারি হচ্ছে না। ৫দিন এসিল্যান্ড অফিসে ঘুরেও কোন সাড়া পাচ্ছেন না।

কাঁচপুর ইউনিয়নের বেহাকৈর এলাকার তাহমিনা আক্তার জানান, ১৪ই নভেম্বর তার মেয়ের বিয়ে। জমি বিক্রি করে সকল ব্যয় বহন করবেন। জমি নামজারি না হওয়ার তার মেয়ের বিয়েতে ঋণ করতে হচ্ছে। পরবর্তীতে জমি বিক্রি করে ঋণের সুদসহ ফেরত দিবেন।

কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাইরুজ তাসনিমকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে নামজারির রেকর্ড খতিয়ে দেখা হবে। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌন হয়রানি: বেরোবি শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি
  • সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী
  • জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা
  • হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার অপসারিত