ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে মারধরের শিকার সেই রিকশাচালকের জামিন
Published: 17th, August 2025 GMT
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর গ্রেপ্তার রিকশাচালক আজিজুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আজিজুর রহমানের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন।
ফারজানা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা পুরোনো হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার তাঁর মক্কেল রিকশাচালক আজিজুরের জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত শুনানি নিয়ে এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, একটি মামলায় গতকাল রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান। আদালত তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভেঙে দেওয়া বাড়িতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে ১৫ আগস্ট দুপুর সোয়া ১২টার দিকে যান আজিজুর রহমান। তিনি নিজেকে রিকশাচালক বলে পরিচয় দেন। ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ফুল দিতে এসেছেন। এ সময় কয়েকজন মারধর করলে ওই ব্যক্তিকে পুলিশ নিয়ে যায়।
এদিকে আজিজুর রহমানকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রিকশাচালককে ১৬ আগস্ট ধানমন্ডি থানার একটি নিয়মিত মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়। মামলাটি চলতি বছরের এপ্রিলে দায়ের করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে, আজিজুর রহমানকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে প্রচার করা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক।
ডিএমপি আরও বলেছে, আজিজুর রহমানকে যে মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে, সেটি একটি নিয়মিত মামলা। কিন্তু অনেকেই বিষয়টিকে হত্যা মামলা হিসেবে প্রচার করছেন, যা ভিত্তিহীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
এদিকে সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, রিকশাচালক মো.
দায়ের করা মামলায় আজিজুর রহমানের সম্পৃক্ততা তদন্ত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি সংশোধিত সিআরপিসির ১৭৩(এ) ধারা মোতাবেক অতিসত্বর প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনধানমন্ডি ৩২ থেকে রিকশাচালককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ওসির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার৫০ মিনিট আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আজ জ র রহম ন র রহম ন র আজ জ র র ধ নমন ড ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)