মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত: ২১ জুলাইকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শোক দিবস’ পালনের দাবি
Published: 23rd, September 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই দিনটিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শোক দিবস’ হিসেবে পালন করার দাবি জানিয়েছে হতাহত ব্যক্তিদের পরিবার। এ ছাড়া তারা বলেছে, নিহত সবাইকে শহীদের মর্যাদাসহ প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায়।
হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে—ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হেলথ কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। নিহত ব্যক্তিদের কবর সংরক্ষণ করতে হবে। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে উত্তরায় একটি মসজিদ নির্মাণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন দুর্ঘটনায় নিহত নাজিয়া ও নাফির বাবা আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর যখন বাচ্চাদের পেয়েছেন, তখন তাঁরা তাদের চিনতে পারেননি। অনেক দিন হলো তাঁরা ঘরে রান্না করতে পারেন না। তাঁর স্ত্রী বিছানা থেকে উঠতে পারেন না, কারও সঙ্গে দেখা করেন না।
নিহত সবাইকে শহীদের মর্যাদা দেওয়ার দাবির প্রসঙ্গে আশরাফুল ইসলাম বলেন, শুধু পাইলট আর শিক্ষক শহীদ হতে পারেন না। সবাই শহীদ। সবাই ইউনিফর্ম পরা ছিল। শিক্ষার্থীরা কেন বৈষম্যের শিকার হবে?
নিহত তাসমিয়া হকের বাবা নাজমুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, সন্তানদের মধ্যে যারা আহত, তাদের অনেকের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তারা আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে কি না তা তাঁরা জানেন না। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁরা খুবই উদ্বিগ্ন। আবার অনেকে আছে, যাদের দীর্ঘ সময় চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে। কয়েকজন আহত শিক্ষক আছেন, যাঁরা আর কখনো কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারবেন না, অথচ তাঁদের ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।
আরও পড়ুনমাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত: দগ্ধ দুই শিশু চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছে২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বলে, তারা অবর্ণনীয় ট্রমার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। অনেকের জীবন-জীবিকা থমকে গেছে। বর্তমানে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কেউ তাদের খোঁজখবর নিচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা তিনজন শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি।
রেজাউল করিমের ছেলে সামিউল এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এই বাবা বলেন, তাঁরা ভালো নেই। দুই মাস ধরে তাঁরা ঘুমাতে পারেন না। এ দেশে এত মানুষ, তবু পাশে কি কাউকে তাঁরা পাবেন না? এই মুহূর্তে তাঁদের স্কুলের বারান্দায় থাকার কথা ছিল। কিন্তু এখন এখানে। সরকার তাঁদের পাশে আসেনি। চোখের সামনে ছেলেকে লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন তিনি, যা ভুলতে পারেন না।
সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রেজাউল করিম। তিনি বলেন, লাশের সঙ্গে একটা কপি পেয়েছেন। এরপর আর কারও কোনো যোগাযোগ নেই।
আরও পড়ুনমাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে১১ আগস্ট ২০২৫সানজিদা বেলায়েতের মেয়ে জায়ানা মাহবুব এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। এই মা বলেন, ‘আমার মেয়েটা পরিপাটি ছিল। হাতে মেহেদি দিত, ব্রেসলেট পরত। ওর হাত পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সে বলে, হাত জম্বির মতো হয়ে গেছে। ওর প্রশ্নের উত্তর আমি কী দেব? এই বাচ্চাগুলোকে সমাজ কোন চোখে দেখবে? কারও হাতে কলম উঠবে না।’
সানজিদা বেলায়েত আরও বলেন, আরেক বাচ্চা বসতে পারে না। তার ফিজিওথেরাপি দরকার। সেই বাচ্চার বাবা নেই। সে কার কাছে যাবে? আবিদুর রহিম নামের এক বাচ্চা কী যে কষ্ট পাচ্ছে। তার শরীরে আর কোনো জায়গা নেই যে চামড়া নেবে। একটা বাচ্চা মানসিক সমস্যা নিয়ে আবার ভর্তি হয়েছে। শব্দ শুনলে সে চিৎকার দেয়। অনেকে কানেও শোনে না। কয়েকজন শিক্ষকও আহত। তাঁরা কি কর্মজীবনে ফিরতে পারবেন?
আরও পড়ুনবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যা যা জানা গেল২১ জুলাই ২০২৫আহত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান সানজিদা বেলায়েত। তিনি আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর দাবি জানান।
আহত রায়ান তৌফিকের বাবা সুমন বলেন, তাঁদের কান্না শুকিয়ে গেছে। সরকারের কাউকে তাঁরা পাশে পাননি। তাই বাধ্য হয়ে এখানে এসেছেন।
গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় যুদ্ধবিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ম ন ব ধ বস ত দ র পর ব র ম ইলস ট ন দ র ঘটন য় ২১ জ ল ই সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সভা থেকে বাজারের তালিকা—সব কাজ করবে গুগল ক্রোম
গুগলের ওয়েব ব্রাউজার ক্রোমে যুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) নতুন সুবিধা। এআই এজেন্ট এখন ব্রাউজারের ভেতর থেকেই ব্যবহারকারীর হয়ে নানা কাজ করে দেবে। আপাতত শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন। তবে শিগগিরই অন্য দেশেও এটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্রোমে এআই–সুবিধা আসছে গুগলের জেমিনির মাধ্যমে। এর সাহায্যে ব্যবহারকারীরা কোনো পণ্য শনাক্ত করা, জটিল প্রশ্নের উত্তর বের করা কিংবা মুঠোফোনে স্ক্রিন শেয়ার করে সমস্যা সমাধানের মতো কাজ করতে পারবেন। এবার সেসব কাজ সরাসরি করে দেবে ক্রোমের এআই এজেন্ট। ওয়েব ও ম্যাকওএস উভয় প্ল্যাটফর্মেই এ সুবিধা চালু হবে। গুগলের এআই এজেন্ট মূলত ব্যবহারকারীর দৈনন্দিন সহজ কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য দেবে, যাতে তাঁরা সময় বাঁচিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ দিতে পারেন। বাজারের তালিকা তৈরি, পণ্য বাছাই কিংবা অর্ডার দেওয়ার মতো কাজ করবে। সাধারণত এসব কাজ করতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়, যা এআই এজেন্ট তা কয়েক সেকেন্ডেই সম্পন্ন করবে। শুধু কেনাকাটাই নয়, ভ্রমণের পরিকল্পনায়ও সাহায্য করবে এআই। বিমানের টিকিট খোঁজা, হোটেল বুকিং কিংবা সেরা অফার বেছে নেওয়ার মতো কাজও সহজ হয়ে যাবে। একাধিক ট্যাব খোলা রেখে শুধু নির্দেশ দিলেই প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে এনে ব্যবহারকারীর সামনে সাজিয়ে দেবে ক্রোম।
ক্রোমের এআই এজেন্ট ইউটিউব, ম্যাপস ও ক্যালেন্ডারের মতো গুগলের অন্যান্য সেবার সঙ্গেও সমন্বয় করে কাজ করবে। হয়তো ক্যালেন্ডারে একটি মিটিং ঠিক করা আছে, তখন ম্যাপসের মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছানোর সঠিক পথ জানিয়ে দেবে এআই। আবার ইউটিউব ভিডিওর নির্দিষ্ট অংশ থেকে দরকারি তথ্যও সরাসরি খুঁজে পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে তৃতীয় পক্ষের বেশ কয়েকটি ব্রাউজারে এআই এজেন্ট চালু হয়েছে। পারপ্লেক্সিটির কমেট, ফায়ারফক্স ও অপেরা তাদের মধ্যে অন্যতম।
সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম