পরকীয়া ও ছিনতাইয়ের জালে প্রাণ গেল সায়েদুরের
Published: 23rd, September 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমান হত্যা ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা (পিবিআই)। দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় সদর আলী ও আলমগীর নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পরকীয়া সম্পর্ক ও অর্থসংকটের জটিল টানাপোড়েন থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
গত ২০২৩ সালে ২৮ নভেম্বর সকালে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার কেষ্টখালী গ্রামের জনৈক ফজলে মাহবুবের ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের লাশ। এই ঘটনায় ধামরাই থানার এসআই আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় এসআই পাভেল মোল্লাকে।
তদন্তে সনাক্ত হয় অজ্ঞাত লাশের পরিচয়। তার নাম সায়েদুর রহমান। পেশায় অটোরিকশা চালক। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে ন্যস্ত হয় এবং এসআই আনিসুর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন।
পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার কুদরত-ই-খুদা জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের হত্যা ও অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সদর আলী ওরফে সোহরাবকে (৪৭) গ্রেপ্তার করে আদালতে মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার মূল আসামি আলমগীরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তারা।
পিবিআই বলছে, আসামিদের জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) ও আলমগীর (২৫) এবং আসামি জুয়েল একই বাসায় পাশাপাশি রুমে বসবাস করতো। আলমগীর এবং জুয়েল অবিবাহিত ছিল। পরবর্তীতে সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) এর স্ত্রী ও আসামি জুয়েলের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং জুয়েল, আলমগীরের সহায়তায় সদর আলীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়।
পরে আসামি সদর আলী ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের চেষ্টা করে এবং আলমগীরও ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়াতে চায়। সদর আলীর স্ত্রী জুয়েলের সাথে ছয় মাস থাকার পর আবার সদর আলীর কাছে ফিরে আসে।
নগদ টাকার প্রয়োজন হলে সদর আলী সদর আলী, আলমগীর ও জুয়েল অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সায়েদুর রহমানকে ফুসলিয়ে গান শোনার অজুহাতে বাইরে নিয়ে যায়। ফেরার পথে ধামরাই থানাধীন কেষ্টখালি গ্রামের নির্জন স্থানে গামছা দিয়ে মুখ, হাত ও পায়ে রশি বেঁধে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
হত্যাকাণ্ডের পর তারা সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে এবং উক্ত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে।
এ বিষয়ে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো.
ঢাকা/সাব্বির/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স য় দ র রহম ন র গ র প ত র কর সদর আল আলমগ র ছ নত ই প ব আই তদন ত পরক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার বংশালে বৃষ্টির জমা পানিতে পড়ে অচেতন, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা
রাজধানীর বংশালের নাজিরাবাজার এলাকার রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে পড়ে অচেতন হন তিনি। স্থানীয় লোকজন বাঁশ দিয়ে পানির ভেতর থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম আমিন হোসেন (৩০)। তিনি একটি বেকারি দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজধানীতে গতকাল রোববার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। আজ ভোরের দিক থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। এ কারণে ঢাকার অনেক সড়কে পানি জমে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। এর মধ্যে বংশালের নাজিরাবাজার এলাকায় একজন মারা গেলেন।
বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজল রায় প্রথম আলোকে বলেন, নাজিরাবাজার এলাকা দিয়ে আমিন বাইসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন। বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে পড়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় লোকজন বাঁশের সাহায্যে পানির ভেতর থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এসআই সজল রায় আরও বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমিন মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ময়নাতদন্তের জন্য আমিনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান এসআই সজল রায়।
আমিনের দুলাভাই সুমন মিয়া বলেন, বেকারির মালামাল সরবরাহ করতে সকালে সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলেন আমিন। পরে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন। হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এক মাস আগে আমিন বিয়ে করেছিলেন বলে জানান সুমন মিয়া। আমিনের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায়। তাঁর বাবার নাম বাদশা আকন।