প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে বিশ্বকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে অবহিত করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।’

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এ কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গত ১৪ মাসে নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পদক্ষেপ তুলে ধরবেন।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘মূল বার্তা হলো ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মৌলিক নির্বাচন হবে। এটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হবে।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, বিশ্বনেতারা ইতিমধ্যেই আসন্ন নির্বাচনে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের মতোই জনগণ অবাধে ভোট দিতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব।

এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে তাঁর ভাষণে সরকারের কার্যক্রম, নির্বাচনের প্রস্তুতি, বিচার কার্যক্রম ও রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরবেন।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো দূরত্ব নেই। সরকার নিয়মিত তাদের সঙ্গে বৈঠক করছে।

আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আমরা দেখেছি, তারা কী করেছে। ১৫ বছরের শাসনামলে মানুষ হত্যা, গুম ও হাজার হাজার মিথ্যা মামলা হয়েছে।’

প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘এখন দেখুন আওয়ামী লীগের অবস্থা কোথায়? তাদের আর কোনো বন্ধু নেই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সবুজে মোড়া পান বরজ, হাসি নেই চাষিদের মুখে

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় এ বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের মাধবপাড়া গ্রামজুড়ে এখন সবুজে মোড়া পানের বরজ। তবে, এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে চাষিদের দীর্ঘশ্বাস। ভালো ফলন সত্ত্বেও বাজারে দাম কমে যাওয়ায় পান চাষিদের আনন্দ পরিণত হয়েছে হতাশায়।

কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে হাকিমপুরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছ। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫৪০ মেট্রিক টন পান। এ অঞ্চলের বহু পরিবার প্রজন্ম ধরে পানচাষের ওপর জীবন-জীবিকা চালিয়ে আসছেন।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে মরছে টমেটো গাছ, কৃষক দিশেহারা 

কৃষি বিবর্তনের গল্প বলে যে জাদুঘর

বাংলার সংস্কৃতি, আতিথেয়তা ও সামাজিক আড্ডায় পান এক অপরিহার্য উপাদান। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা ভেবেছিলেন, এবার হয়তো দীর্ঘদিনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। বাজারে পানের দাম না থাকায় তাদের সব হিসাব-নিকাশ পানিতে ভেসে গেছে।

মাধবপাড়া গ্রামের পানচাষি মাইদুল শেখ বলেন, ‍“এখন পান বিক্রি করে লাভ তো নেই, উল্টো খরচই উঠছে না। সার, কীটনাশক, সেচ সবকিছুর দামই বেশি। আগে ৫০ টাকায় যে পান বিক্রি হতো, এখন সেই পান ২৫ টাকায় দিতে হচ্ছে।”

পান চাষি তারিকুল ইসলাম বলেন, “১০০ পিস পান ২৫-৩০ টাকায় বেচতে হচ্ছে। গত বছর এই দামে অর্ধেক পানও পাওয়া যায়নি। খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছি।”

ইমরান হোসেন নামে অপর চাষি বলেন, “পানচাষ আমাদের বাপ-দাদার পেশা। ফলন খুব ভালো, কিন্তু পাইকাররা ইচ্ছামতো দাম বলেন। বিক্রি না করলে তো পচে যাবে, তাই কম দামেই দিয়ে দিতে হচ্ছে।”

সোহরাব আলী বলেন, “পানের এমন ফলন বহুদিন দেখিনি। এমন খারাপ দামও কখনো দেখিনি। পান রাখার জায়গা নেই, বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।”

দামের কারণে বরজে কাজ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর শ্রমিকরাও। আগে প্রতিদিন কাজ মিললেও এখন অনেক বরজেই কাজ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, “চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে পানের ফলন ভালো হলেও দামের বিষয়টি বাজারের চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে। কৃষকের ক্ষতি যাতে কম হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ