কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা ও বর্তমানে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক খুদে বার্তায় এ তথ্য জানান।

ডিএমপির খুদে বার্তায় বলা হয়, রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে অজয় কর খোকনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

কী অভিযোগে বা কোন মামলায় অজয় কর খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে ডিএমপির খুদে বার্তায় কিছু বলা হয়নি।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ডিবির প্রধান মো.

শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে গুলশান থেকে অজয় কর খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। এখন তাঁকে গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

অজয় কর খোকন ১৯৯৮-২০০২ মেয়াদে ‎ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। তবে মনোনয়ন পাননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ড এমপ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইলিশভর্তি পিকআপ ভ্যানটি ডাকাতির পর কেটে টুকরা টুকরা করেন তাঁরা

চট্টগ্রাম নগরে সড়ক থেকে মাছভর্তি একটি পিকআপ ভ্যান ডাকাতির পর নেওয়া হয় সাগরপাড়ে। সেখানে ডাকাতি করা মাছ বিক্রি করে দেয় ডাকাত দল। পরে পিকআপ ভ্যানটি ডাকাত দল নিয়ে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এরপর গাড়িটি কেটে টুকরা টুকরা করে পুকুরে ডুবিয়ে রাখেন ডাকাত দলের এক সদস্য। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ২৭ আগস্ট রাত একটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার লতিফপুর টোল রোডে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির ঘটনায় পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে তিনি এ ঘটনার বিবরণ দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁর তথ্যের সূত্র ধরে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কেটে ফেলা পিকআপ ভ্যানটির ১০টি টুকরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

রায়হান মূলত ডাকাতি হওয়া গাড়ি কেটে টুকরা টুকরা করে বিক্রি করেন। তিনিও ডাকাত দলের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। কেউ যাতে এসব টুকরা খুঁজে না পায়, সে জন্য পুকুরে লুকিয়ে রাখতেন তিনি। পরে গ্রাহক খুঁজে টুকরা করে বিক্রি করতেন।আরিফুর রহমান, ওসি, আকবরশাহ থানা

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৩২ মণ ইলিশ চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে কিনে নিয়ে পিকআপ ভ্যানটিতে করে নোয়াখালী নিয়ে যাচ্ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন। চট্টগ্রাম নগরের লতিফপুর এলাকায় ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্রের মুখে পিকআপ ভ্যানটি ডাকাতি করেন। তখন পিকআপ ভ্যানে গাড়িচালক ও কামাল উদ্দিনসহ চারজন ছিলেন। তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে তিন ঘণ্টা পাশের একটি জঙ্গলে বসিয়ে রাখে ডাকাত দল। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরদিন কামাল উদ্দীন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে এ ঘটনায় আকবর শাহ থানায় মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি এমন স্থানে ঘটেছে যেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। কোনো সূত্রও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে ভুক্তভোগীদের একজন জানান, জঙ্গলে বসিয়ে রাখার সময় তিনি শুনেছেন ডাকাত দলের একজন বলছেন—‘তাঁদের (ভুক্তভোগীদের) আমাদের খালেকের টং চায়ের দোকানের সামনে নামিয়ে দাও’। এ কথার সূত্র ধরে খালেকের টং চায়ের দোকানটি খুঁজে বের করে সন্দেহবশত মো. দীপু নামে স্থানীয় এক বাসিন্দাকে আটক করা হয়, যাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির ঘটনায় আগেও মামলা রয়েছে। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ডাকাত দলের বিষয়ে খোঁজ মেলে। দীপু ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অপর চারজন হলেন মো. মাহফুজ, বশির আহাম্মদ, মো. রায়হান ও আবু বক্কর। এর মধ্যে রায়হানের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাকিরা নগরের আকবরশাহ ও এর পার্শ্ববর্তী উপজেলা সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির বাসিন্দা।

ঘটনাটি এমন স্থানে ঘটেছে, যেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। কোনো সূত্রও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে ভুক্তভোগীদের একজন জানান, জঙ্গলে বসিয়ে রাখার সময় তিনি শুনেছেন ডাকাত দলের একজন বলছেন, ‘তাঁদের (ভুক্তভোগীদের) আমাদের খালেকের টং চায়ের দোকানের সামনে নামিয়ে দাও’।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার রায়হান মূলত ডাকাতি হওয়া গাড়ি কেটে টুকরা টুকরা করে বিক্রি করেন। তিনিও ডাকাত দলের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। কেউ যাতে এসব টুকরা খুঁজে না পায়, সে জন্য পুকুরে লুকিয়ে রাখতেন তিনি। পরে গ্রাহক খুঁজে টুকরা করে বিক্রি করতেন। ওসি বলেন, ডাকাত দলটির নেতা মো. আজাদ নামে এক ব্যক্তি। তাঁকেসহ দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আকবর শাহ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতির ঘটনায় প্রথমে গ্রেপ্তার হওয়া দীপু আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন—আজাদের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির পর গাড়িটি চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে যান আবু বকর। রবিউল হোসেন আরও বলেন, গাড়িতে চালকের আসনের নিচে একটি মুঠোফোন রয়ে যায়। সেটিও রায়হানের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ডাকাতির শিকার পিকআপ ভ্যানটির চালক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণত ডাকাতেরা গাড়িতে থাকা মালামাল ডাকাতি করে। ইলিশ মাছ ডাকাতি করে গাড়িটি দিয়ে দেবে ভেবেছিলাম, কিন্তু তারা ৩২ মণ মাছসহ পিকআপটিও নিয়ে যায়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে আমাদের। কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে এসেছিলাম। আমি ডাকাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ