চট্টগ্রামে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একদল নেতা-কর্মী। নগরের খুলশী থানার সিডিএ অ্যাভিনিউ সড়কে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ মিছিল হয়েছে। সড়কের পাশে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় অবস্থিত। ওই কার্যালয়ের পাশাপাশি দামপাড়া পুলিশ লাইনসেরও অবস্থান।

ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, নগরের এমএম আলী রোডের মুখে জড়ো হয়ে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ২০ থেকে ২৫ জন। তাঁদের হাতে একটি ব্যানার ছিল। সেখানে লেখা, ‘শেখ হাসিনা ফিরবেই, বিজয় আসবেই।’ ব্যানারের নিচে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নাম লেখা ছিল। মিছিলটি পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে পেরিয়ে দামপাড়া বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে একটি পুলিশের গাড়ি দেখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ব্যানার নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিল করছেন ২০ থেকে ২৫ জন।

জানতে চাইলে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পরে দুপুরে সাংবাদিকেরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে বুধবার ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। ওই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ ঢাকায় মিছিল হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদের আইনের আওতায় আনতে। তারা যেন সহজে জামিন না পায়, সেদিকে লক্ষ রাখা হচ্ছে। নির্বাচনের সময় মিছিলের সংখ্যা বাড়বে, সবাই মাঠে নামবে। তবে ছোটখাটো এসব (ছাত্রলীগের) মিছিল আর হবে না।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সবুজে মোড়া পান বরজ, হাসি নেই চাষিদের মুখে

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় এ বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের মাধবপাড়া গ্রামজুড়ে এখন সবুজে মোড়া পানের বরজ। তবে, এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে চাষিদের দীর্ঘশ্বাস। ভালো ফলন সত্ত্বেও বাজারে দাম কমে যাওয়ায় পান চাষিদের আনন্দ পরিণত হয়েছে হতাশায়।

কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে হাকিমপুরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছ। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫৪০ মেট্রিক টন পান। এ অঞ্চলের বহু পরিবার প্রজন্ম ধরে পানচাষের ওপর জীবন-জীবিকা চালিয়ে আসছেন।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে মরছে টমেটো গাছ, কৃষক দিশেহারা 

কৃষি বিবর্তনের গল্প বলে যে জাদুঘর

বাংলার সংস্কৃতি, আতিথেয়তা ও সামাজিক আড্ডায় পান এক অপরিহার্য উপাদান। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা ভেবেছিলেন, এবার হয়তো দীর্ঘদিনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। বাজারে পানের দাম না থাকায় তাদের সব হিসাব-নিকাশ পানিতে ভেসে গেছে।

মাধবপাড়া গ্রামের পানচাষি মাইদুল শেখ বলেন, ‍“এখন পান বিক্রি করে লাভ তো নেই, উল্টো খরচই উঠছে না। সার, কীটনাশক, সেচ সবকিছুর দামই বেশি। আগে ৫০ টাকায় যে পান বিক্রি হতো, এখন সেই পান ২৫ টাকায় দিতে হচ্ছে।”

পান চাষি তারিকুল ইসলাম বলেন, “১০০ পিস পান ২৫-৩০ টাকায় বেচতে হচ্ছে। গত বছর এই দামে অর্ধেক পানও পাওয়া যায়নি। খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছি।”

ইমরান হোসেন নামে অপর চাষি বলেন, “পানচাষ আমাদের বাপ-দাদার পেশা। ফলন খুব ভালো, কিন্তু পাইকাররা ইচ্ছামতো দাম বলেন। বিক্রি না করলে তো পচে যাবে, তাই কম দামেই দিয়ে দিতে হচ্ছে।”

সোহরাব আলী বলেন, “পানের এমন ফলন বহুদিন দেখিনি। এমন খারাপ দামও কখনো দেখিনি। পান রাখার জায়গা নেই, বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।”

দামের কারণে বরজে কাজ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর শ্রমিকরাও। আগে প্রতিদিন কাজ মিললেও এখন অনেক বরজেই কাজ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, “চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে পানের ফলন ভালো হলেও দামের বিষয়টি বাজারের চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর করে। কৃষকের ক্ষতি যাতে কম হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ