প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে থাকবেন সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী
Published: 24th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) প্রয়াত সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। তিনি ছিলেন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদীদের অন্যতম একজন। এ জন্য তাঁকে দীর্ঘ ১৭ মাস কারাবরণ করতে হয়েছে। তিনি প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে থাকবেন।
সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতারা এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বিএনপি সমর্থিত অংশ।
আলোচনা সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ বলেন, ‘সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর ত্যাগ, নিষ্ঠা ছিল বিরল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপসহীনভাবে যে কাজ করে গেছেন, তা সবার অনুসরণীয়। তাঁর মতো নেতা বর্তমানে আমরা খুঁজে পাই না।’
রুহুল আমিন গাজীর প্রতিবাদী বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, সমসাময়িক সাংবাদিকদের মধ্যে নেতৃত্বগুণে তিনি অনবদ্য ছিলেন। ফ্যাসিবাদ আমলে যখন পদলেহন সাংবাদিকতা চলেছে, সেখানে রুহুল আমিন গাজী অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের অগ্রনায়ক ছিলেন।
বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরের জন্য রুহুল আমিন গাজীকে দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়েছে। তিনি ছিলেন দেশ ও স্বাধীনতার প্রশ্নে আপসহীন।
আলোচনা সভায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী সৎসাহস নিয়ে সাংবাদিকদের পক্ষে তথা সত্যের পক্ষে লড়ে গেছেন। তিনি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। আপসহীন এই নেতার আদর্শ আমাদের সবার ধারণ করতে হবে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়ে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী ১৭ মাস কারাবরণ করেছেন। তাঁকে ঠিকমতো চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। তাঁর এই অকাল চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’
পরিবারের পক্ষ থেকে রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আফফান আবরার আমিন স্মৃতিচারণা করেন। তিনি বলেন, তাঁর বাবা দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। কারাগারে তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে একরকম হত্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রুহুল আমিন গাজীর ছেলে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম। ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি সরদার ফরিদ আহমেদ, বিএফইউজের সহসভাপতি এ কে এম মহসিন ও মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের লাবিন রহমান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র হ ল আম ন গ জ র ব এফইউজ ইউজ র স ড ইউজ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় সন্ত্রাসী হামলায় দুই সাংবাদিক আহত
খুলনা মহানগরীতে ‘আমার দেশ’ পত্রিকার দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে সুলতান ডাইন রেস্টুরেন্টের নিচে তাদের ওপর হামলা হয়।
আহতরা হলেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার খুলনা ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন ও স্টাফ রিপোর্টার কামরুল হোসেন মনি। তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়নি কেউ
রাউজানে হামলায় বিএনপির ৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ
হামলার ঘটনায় সাংবাদিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা ও বিএফইউজে খুলনা ইউনিটের নেতারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। দুই সংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা ও খুলনা প্রেস ক্লাব যৌথভাবে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আহত সাংবাদিক এহতেশামুল হক শাওন বলেন, “একটি নিউজের বক্তব্য নেওয়ার জন্য ০১৭১১-৮৯৩৩০৯ নম্বরে কল করা হয়। ফোন রিসিভ করে কথা বলার সময় অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে শান্ত হলে আমি বলি, আপনি কোথায় আছেন। তিনি বলেন, আমি শিববাড়ি মোড়ের সুলতান ডাইন রেস্টুরেন্টের নিচে আছি। তখন আমি (শাওন) বলি, সামনা সামনি কথা বললে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। তখন তিনি (জনৈক বিপ্লব আবির) বলেন, আসেন আমি এখানে আছি। আসেন এক সাথে চা খাব। আমি আর আমার দেশ-এর স্টাফ রিপোর্টার মনি মোটরসাইকেলে সেখানে যাই।”
তিনি বলেন, “সেখানে গিয়ে দেখি, ৭-৮ জন অপেক্ষা করছেন। কথা বলার এক পর্যায়ে ব্যুরো চীফ কে জানতে চাই, তখন আমি এগিয়ে যাই, সাথে সাথে তারা আমার ওপরে হামলা করে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমি দৌঁড়ে পাশ্ববর্তী টাইগার গার্ডেনে গিয়ে আশ্রয় নেই। আর মনিকে তারা মারতে মারতে মাটিতে ফেলে পাড়াতে থাকে। আশপাশের লোকজন চলে আসলে তারা পালিয়ে যায়।”
সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন বলেন, “সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। অপরাধীদের চিহিৃত করে দ্রুত আটক করা হবে।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ