রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের নেতৃত্বে আনোয়ার-ইলিয়াছ-শংকর
Published: 24th, September 2025 GMT
রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে সময়ের আলোর প্রতিনিধি মুহাম্মদ ইলিয়াছ নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি দৈনিক রাঙামাটির সম্পাদক আনোয়ার আল হক এবং কোষাধ্যক্ষ রাইজিংবিডির প্রতিনিধি শংকর হোড়সহ ১২ পদে অন্যান্যরা নির্বাচিত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
নবীনদের বরণ করে নিল রাবি প্রেসক্লাব
আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাইনবোর্ড
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রেস ক্লাবে সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিনিধি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সহ-সভাপতি ইউএনবির প্রতিনিধি অলি আহম্মদ, যুগ্ম-সম্পাদক চ্যানেল আই ও বাসসের প্রতিনিধি মনসুর আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক বাংলা নিউজের প্রতিনিধি মো.
এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে ১৩টি পদের মধ্যে ১২টি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে মো. হান্নান ক্রীড়া সম্পাদক পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মুহাম্মদ ইলিয়াছ ও আলমগীর মানিক। বুধবার এই পদে মুহাম্মদ ইলিয়াছ ১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী মানিক ভোট পান ৮। এছাড়া চারজন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি।
দ্বি-বার্ষিক এই নির্বাচনে আহ্বায়ক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জোবাইদা আক্তার, সদস্য সচিব হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. খোরশেদ আলম ও সদস্য হিসেবে রাঙামাটি পাবলিক কলেজের প্রভাষক মুকুল কান্তি ত্রিপুরা দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা/শংকর/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ দর-কষাকষির দক্ষতা বাড়াতে পারেনি
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, বাণিজ্য-সংক্রান্ত চুক্তির জন্য আলোচনা ও দর-কষাকষির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষতা বাড়াতে পারেনি; বরং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য-সুবিধা পেয়ে আসছে। এতে দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী। শুল্ক চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশ কীভাবে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারে, তা নিয়ে সেমিনারটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো এলডিসিতে যোগ দেয়নি। এর পরিবর্তে তারা শুরু থেকেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও দক্ষ ট্রেড নেগোসিয়েশন টিম গড়ে তুলেছে। আমরা (বাংলাদেশ) সেটা করিনি। বাণিজ্য আলোচনায় আমাদের দক্ষতা কম। এ কাজে সরকারের ওপরই অত্যধিক নির্ভরশীল থাকতে হয়।’
এলডিসি উত্তরণ পেছানো সহজ কাজ হবে না বলে জানান আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এখন অনেকেই এলডিসি উত্তরণ পেছানোর কথা বলছেন। কিন্তু বিষয়টি শুধু সরকারের হাতে নেই। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এ নিয়ে ভোটাভুটি হয়। সেখানে ১৯৩টি দেশের মধ্যে আমাদের অন্তত ৯৭টি দেশের সমর্থন (ভোট) লাগবে। এটা এত সহজ নয়। কারণ, অন্য দেশগুলো আমাদের সুবিধার জন্য কেন ভোট দেবে? আমরা এলডিসির সর্বাধিক সুবিধা ভোগ করি। এ নিয়ে অন্য দেশগুলো আমাদের ঈর্ষা করে। তাই আমাদের বাস্তবধর্মী হতে হবে।’
ডব্লিউটিওর নিয়ম না মেনে কোনো দেশের সঙ্গে একতরফা শুল্ক বা অশুল্ক বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়। আমাদের কিছু এফটিএ, কিছু পিটিএ ও কিছু ইপিএ আলোচনা চলমান রয়েছে। বিশেষ করে এলডিসি উত্তরণের আগে বা পরে দেশের বাজার রক্ষা করতে আমাদের এসব চুক্তি করতে হবে।—মাহবুবুর রহমান, বাণিজ্যসচিবআনিসুজ্জামান চৌধুরী জানান, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী পরিবর্তনের সময় অনেক শিল্প খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জন্য নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলতে হবে। সরবরাহ, জ্বালানি, বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ প্রভৃতি খাতে দ্রুত সংস্কার আনতে হবে। পাশাপাশি কর-জিডিপি অনুপাতও বাড়াতে হবে। এ ছাড়া শ্রমিকের কর্মঘণ্টা কমানো বা মজুরি বাড়ানোর মতো পদক্ষেপগুলো শুরুতে বাড়তি খরচ মনে হলেও তা পরে উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সার্বিক বিষয়ে জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমরা প্রায়ই সরকারকে সব দোষ দিই, কিন্তু নিজেরা সহযোগিতা করি না। রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনো ঔপনিবেশিক মানসিকতায় আটকে আছে। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্যানার বসানো, জাতীয় সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম চালুসহ সংস্কারের সফল উদাহরণ আছে।’
বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বহুপক্ষীয় বিশ্বে কাজ করছি। ফলে ডব্লিউটিওর নিয়ম না মেনে কোনো দেশের সঙ্গে একতরফা শুল্ক বা অশুল্ক বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়। কারণ, আমাদের কিছু এফটিএ, কিছু পিটিএ ও কিছু ইপিএ আলোচনা চলমান রয়েছে। বিশেষ করে এলডিসি উত্তরণের আগে বা পরে দেশের বাজার রক্ষা করতে আমাদের এসব চুক্তি করতে হবে।’
উদাহরণ দিয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের মোটরযানকে আমরা শুল্কমুক্ত করি, তাহলে জাপানও স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই সুবিধা ভোগ করবে। এটাই নিয়ম। আমরা নিয়মভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বাস করি। তাই নিয়মের বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়। এটাই আমরা বোঝাতে চেষ্টা করেছি এবং আংশিক সফল হয়েছি। এ ছাড়া যেকোনো পক্ষ চাইলে ছয় মাসের নোটিশ দিয়ে শুল্ক চুক্তি থেকে বের হতে পারবে। এটি আমরা শুল্ক চুক্তির খসড়ায় যুক্ত করতে পেরেছি। এটিও বাংলাদেশের বড় সাফল্য।’
বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রসুল ও তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান।
বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে অনেক ব্র্যান্ড চীন থেকে তাদের উৎপাদন সরিয়ে নিচ্ছে। নতুন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য আমাদের সামনে এটি একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। এ নিয়ে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ইনামুল হক খান আরও বলেন, ‘মার্কিন ক্রেতারা পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য, ট্রেসেবিলিটি ও কমপ্লায়েন্সের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এসব বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে। পণ্য তৈরিতে বাংলাদেশ এখনো তুলা থেকে তৈরি সুতার ওপর ৭০ শতাংশ নির্ভর করে। কিন্তু বাজারে প্রতিযোগিতামূলক থাকতে হলে কৃত্রিম তন্তুর ব্যবহারও বাড়াতে হবে।’