রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে সময়ের আলোর প্রতিনিধি মুহাম্মদ ইলিয়াছ নির্বাচিত হয়েছেন।

তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি দৈনিক রাঙামাটির সম্পাদক আনোয়ার আল হক এবং কোষাধ্যক্ষ রাইজিংবিডির প্রতিনিধি শংকর হোড়সহ ১২ পদে অন্যান্যরা নির্বাচিত হয়েছেন।

আরো পড়ুন:

নবীনদের বরণ করে নিল রাবি প্রেসক্লাব

আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাইনবোর্ড

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রেস ক্লাবে সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিনিধি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সহ-সভাপতি ইউএনবির প্রতিনিধি অলি আহম্মদ, যুগ্ম-সম্পাদক চ্যানেল আই ও বাসসের প্রতিনিধি মনসুর আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক বাংলা নিউজের প্রতিনিধি মো.

মঈন উদ্দিন, পাঠাগার ও প্রচার সম্পাদক জিটিভির প্রতিনিধি মিল্টন বাহাদুর, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রথম আলোর সুপ্রিয় চাকমা, বিটিভির জাহেদা বেগম, একাত্তর টিভির উচিংছা রাখাইন ও দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের প্রতিনিধি শাহ আলম।

এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে ১৩টি পদের মধ্যে ১২টি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে মো. হান্নান ক্রীড়া সম্পাদক পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মুহাম্মদ ইলিয়াছ ও আলমগীর মানিক। বুধবার এই পদে মুহাম্মদ ইলিয়াছ ১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী মানিক ভোট পান ৮। এছাড়া চারজন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি।

দ্বি-বার্ষিক এই নির্বাচনে আহ্বায়ক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জোবাইদা আক্তার, সদস্য সচিব হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. খোরশেদ আলম ও সদস্য হিসেবে রাঙামাটি পাবলিক কলেজের প্রভাষক মুকুল কান্তি ত্রিপুরা দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা/শংকর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীকে নীল বিন্দু খেতাব দিয়েছিলেন যে বিজ্ঞানী

জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল স্যাগান মহাবিশ্বের সৌন্দর্যকে জনসমক্ষে নিয়ে আসার জন্য আলোচিত। তিনি ১৯৩৪ সালের ৯ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। কিংবদন্তি জ্যোতির্বিজ্ঞানী, লেখক ও বিজ্ঞান প্রচারক হিসেবে কার্ল স্যাগান আলোচিত। বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলোকে সহজ ও কাব্যিক ভাষায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে তিনি বিশ্বকে মহাবিশ্বের বিস্ময়কর সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে শিখিয়েছেন। তাঁর কাজ কেবল বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানেই সীমাবদ্ধ ছিল না।

কার্ল স্যাগানের সবচেয়ে বড় অবদান বলা যায় বিজ্ঞানবিষয়ক নানা বিষয়কে লেখালেখি ও টেলিভিশনের মাধ্যমে সবার সামনে ছড়িয়ে দেওয়া। ১৯৮০ সালে প্রচারিত তাঁর যুগান্তকারী টেলিভিশন সিরিজ ‘কসমস: এ পার্সোনাল ভয়েজ’ বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ দর্শককে মহাবিশ্বের রহস্যের প্রতি আকৃষ্ট করে। এই সিরিজ বৈজ্ঞানিক ধারণাকে এমনভাবে উপস্থাপন করে, যা গভীর অথচ সহজে বোধগম্য। স্যাগানের বিখ্যাত উক্তি, ‘আমরা সবাই স্টারডাস্ট বা তারাধূলি দিয়ে তৈরি।

একজন পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে স্যাগানের গবেষণা মূলত ছিল গ্রহবিজ্ঞান নিয়ে। তিনি শুক্র, বৃহস্পতি গ্রহসহ অন্যান্য গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ওপর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে ছিল শুক্র গ্রহের তীব্র তাপমাত্রা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা, যা পরে প্রমাণিত হয়। স্যাগান মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অনুসন্ধান এবং এর পরিবেশ নিয়ে ব্যাপক কাজ করেন। তিনি নাসার মেরিনার, ভয়েজারসহ বিভিন্ন গ্রহ অনুসন্ধানকারী মিশনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। মঙ্গলের পৃষ্ঠে থাকা রহস্যময় ক্যানালি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ক ছিল। স্যাগান বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করেন, এসব এলিয়েনদের তৈরি খাল নয়, বরং প্রাকৃতিক ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য।

দূরবর্তী মহাজাগতিক প্রাণীর কাছে পৃথিবীর অস্তিত্ব জানান দিতে স্যাগান দুটি ঐতিহাসিক প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে উৎক্ষেপিত পাইওনিয়ার ১০ মহাকাশযানে একটি বিশেষ ফলক সংযুক্ত করার ধারণা দেন স্যাগান।

এই প্লেটে মানব জাতির চিত্র, আমাদের সৌরজগতের অবস্থান এবং মহাকাশযানের উৎক্ষেপণের সময়কাল চিহ্নিত করা হয়। এ ছাড়া ভয়েজার গোল্ডেন রেকর্ড পাঠানোর সময় তাঁর ভূমিকা ছিল। এটি ছিল স্যাগানের নেতৃত্বাধীন সবচেয়ে বিখ্যাত প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৭৭ সালে উৎক্ষেপিত ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২ মহাকাশযানে পৃথিবীর ছবি, শব্দ, সংগীত এবং বিভিন্ন ভাষার শুভেচ্ছাবার্তা নিয়ে তৈরি এই সোনালি রেকর্ড পাঠানো হয়। কার্ল স্যাগান ১৯৯৬ সালে আমাদের ছেড়ে চলে যান।

ভয়েজার ১ মহাকাশযান থেকে তোলা একটি ছবিকে জনপ্রিয় করেন তিনি। সেই ছবিতে পৃথিবীকে একটি ফ্যাকাশে নীল বিন্দুর মতো দেখায়। ৬০০ কোটি কিলোমিটার দূর থেকে ধারণ করা ছবিটি বিশ্বকে চমকে দেয়। ছবিটি তুলতে স্যাগান নাসাকে উৎসাহিত করেছিলেন। কার্ল স্যাগানের চিন্তায় প্রথমবারের মতো মানব জাতি বুঝতে পারে, মহাবিশ্বের বিশালতার পরিপ্রেক্ষিতে মানবজাতির গুরুত্ব ও ক্ষুদ্রতা কত নগণ্য।

ভয়েজার ১ মহাকাশযান থেকে পৃথিবীকে আলোর রশ্মিতে ঝুলে থাকা এক ফোঁটা নীল ধূলিকণার মতো মনে হয়। স্যাগান সেই ছবির বর্ণনায় বলেন, এই ক্ষুদ্র বিন্দুর ওপরই বাস করছে আপনার পরিচিত প্রতিটি ব্যক্তি। আমাদের সব হাসি-কান্না, আমাদের হাজারো ধর্ম, মতাদর্শ, অর্থনৈতিক বিশ্বাস, সভ্যতার উত্থান-পতন, রাজা-প্রজা, প্রেমিক-প্রেমিকা, উদ্ভাবক আর আমাদের প্রজাতির ইতিহাসে যত পাপি ও সাধু এসেছে সবাই। তারা সবাই ছিল সূর্যের আলোয় ভেসে থাকা ধূলিকণার এক কণামাত্র।
তথ্যসূত্র: আমেরিকান সায়েন্টিস্ট

সম্পর্কিত নিবন্ধ