তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীতে তামাক কোম্পানি স্টেক হোল্ডার হতে পারবে না ব‌লে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তি‌নি বলেছেন, ‘‘তামাক কোম্পানি কোনোভাবেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের স্টেকহোল্ডার হতে পারবে না। সরকারও জনস্বার্থবিরোধী এমন কোনো কাজে কোনো অবস্থাতেই যুক্ত হবে না।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘যদি দেশের মানুষের সুস্থতার কথা সত্যিকার অর্থে চিন্তা করতে হয়, তবে তামাক বন্ধ করতেই হবে।’’ 

আরো পড়ুন:

পঞ্চগড়ে সেনা অভিযানে মাদকসহ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

জাবিতে হলের ছাদে মদ ও গাঁজা সেবন করছিলেন ছাত্রদল নেতাসহ ১৫ শিক্ষার্থী

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্‌প) আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া পরিমার্জনের লক্ষ্যে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সদস্য ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘দেশে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সংশোধিত হলেও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘‘জনসমাগমস্থল সম্পূর্ণভাবে ধূমপানমুক্ত করা জরুরি। ধূমপানের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণের কোনো সুযোগ রাখা যাবে না- এ বিষয়টি সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’’ 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘তামাক কোম্পানির নানা অপকৌশলের কারণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দীর্ঘদিন বিলম্ব হয়েছে। তামাক কোম্পানি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের কোনো নৈতিক মনোবল নেই। ফলে যতই চেষ্টা করুক না কেন, তারা সফল হতে পারবে না।’’ 

ই-সিগারেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সরকার শুরু থেকে এর আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছে।’’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তামাক পণ্যের ক্ষতিকর দিক প্যাকেটের দৃশ্যমান স্থানে প্রকাশ করতে হবে। পরোক্ষ ধূমপানও ধূমপান সেবনের মতোই ক্ষতিকর।’’

তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে  তিনি বলেন, “আপনারা যদি সচেতন হন, তবে শুধু নিজেরাই ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন না, বরং অন্যদেরও এ অভ্যাস থেকে বিরত রাখতে পারবেন। কেবল আইন করলেই হবে না, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে তরুণদের সোচ্চার হতে হবে।” তিনি তরুণ সমাজকে তামাকমুক্ত ও সুস্থ বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনাগুলো হলো, পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, সকল ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা বৃদ্ধি করে শতকরা ৯০ ভাগ করা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য করেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সদস্য সাবেক সচিব মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক আখতারউজ-জামান, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা.

গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, তামাক বিরোধী যুব প্রতিনিধি আয়েশা আকতার শিল্পী এবং নাইমুর রহমান ইমন প্রমুখ।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডর্‌প’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এএইচএম নোমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডর্‌প’র প্রকল্প সমন্বয়কারী জেবা আফরোজা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/বকুল     

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ষ দ ধ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দেশটির স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ট্রাম্পের আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তখন সাক্ষাতে ট্রাম্পকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি: প্রধান উপদেষ্টা 

আগামী নির্বাচন সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টা বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমন্ত্রণে তিনি এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত সার্জিও গরের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ