খাগড়াছড়ির সহিংস ঘটনার পেছনে পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) হাত রয়েছে— এমন ইঙ্গিত করে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘‘খাগড়াছড়িতে জুম্ম ছাত্র জনতার ব্যানারে যারা আন্দোলন করেছেন, তাদের ৬ নেতার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে ইউপিডিএফের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের অপরিপক্ক আন্দোলনের কারণে খাগড়াছড়িতে এমন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ফলে আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিয়েছে। আন্দোলন একটি ইস্যুতেই থাকা উচিৎ।’’

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাঙামাটি শহরের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করবে: সেতু উপদেষ্টা

পশ্চিমবঙ্গের সহিংসতার বিষয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য নাকচ ভারতের

পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘‘পাহাড়িরা সব সময় একটি স্লোগান দেয় পাহাড় থেকে ‘সেনা হঠাও’। এই দুনিয়াতে কিছু বাস্তবতা আছে, তার বাইরে আমাদের যাওয়ার সুযোগ থাকে না। এমন দিন আসবে, আমরা চাইলেও তারা (সেনাবাহিনী) এখানে থাকবে না। এমনও সময় আসবে, আমার তাদের জড়িয়ে থাকব। আবার সময় আসবে, তখন তাদের বলব, চলে যাও। সুতরাং বাস্তবতাকে বুঝতে হবে। শর্ত যখন পরিপূর্ণ হবে, তখন আমরাই অনুধাবন করব, তারা থাকবে না চলে যাবে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সব মিলে কেন ভালো দিকে এগিয়ে যেতে পারছি না। মা দুর্গার আশীর্বাদে এই প্রার্থনা করি, আমরা যে সবাই শান্তিতে, ভালোভাবে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে থাকতে পারি। এটাই আমার কামনা ও বাসনা।’’ 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড.

এস এম ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষেদর সদস্য বৈশালী চাকমা, সাগরিকা রোয়াজাসহ সনাতনী নেতারা।
 

ঢাকা/শংকর/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ