রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভায় দিনে ৮ থেকে ১০টি গরু জবাই করেন মাংস ব্যবসায়ীরা। ছুটির দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ থেকে ২০টিতে। কিন্তু এসব গরু জবাইয়ের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কোনো জবাইখানা নেই। ব্যবসায়ীদের কেউ নিজ বাড়ির উঠানে, কেউ–বা বাড়ি-সংলগ্ন খোলা জায়গায় গরু জবাই করেন। রংপুরে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের মধ্যে এভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলার বাসিন্দারা।

কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, অসুস্থ গরুর মাংস কাটা, নাড়াচাড়া ও খাওয়ার কারণে হারাগাছের ঠাকুরদাস গ্রামের চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন চারজনের মধ্যে দুজনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় বলছে, রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুরে মোট ১১ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসায় তাঁরা অনেকটা সুস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গবাদিপশুর মাংস যাতে মাংস ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে না পারেন, সে জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে কর্মী পাঠিয়ে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। অ্যানথ্রাক্স টিকা দেওয়ায় গবাদিপশুর নতুন করে সংক্রমণ নেই।

যত্রতত্র পশু জবাই

অ্যানথ্রাক্স শনাক্তের পর রংপুরে মাংসের দোকানগুলোর চিত্র সরেজমিনে দেখতে শুক্রবার ভোরে হারাগাছ পৌরসভায় যান প্রথম আলোর এ প্রতিবেদক। রংপুর ও আশপাশের এলাকার অনেকে হারাগাছে যান মাংস কিনতে। সকাল ছয়টার দিকে হারাগাছের সারাই বাজারে মাংস বিক্রেতা ইউনুছ আলীর দোকানে মাংস নিয়ে আসতে দেখা গেল। তিনি বলেন, পাশের বাবুখা গ্রামে তাঁর বাড়ির পেছনে একটি গরু জবাই করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কেউ ছিল কি না জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘প্রতিদিন এনামুল থাকেন। কিন্তু আজ এখনো আসেননি।’

এনামুল হক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এআই (কৃত্রিম প্রজনন) টেকনিশিয়ান। রংপুরে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ দেখা দেওয়ায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে হারাগাছ পৌর এলাকায় প্রতিদিন যেসব গরু জবাই করা হবে, সেগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গবাদিপশু জবাই করে কাটাকাটি করা হচ্ছে। শুক্রবার সকালে হারাগাছ পৌর এলাকার বাবুখা এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চাপ উপেক্ষা করে সত্য প্রকাশ করে যাচ্ছে প্রথম আলো

প্রথম আলো কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়। গরিব দরিদ্র অদম্য শিক্ষার্থীদের পাশে আছে সব সময়। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় এ পত্রিকা। যা কিছু ভালো তার সঙ্গে জুড়ে আছে প্রথম আলো। আবার সাহসের সঙ্গে সব চাপ উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক সংবাদ করে যাচ্ছে প্রথম আলো, যা প্রশংসনীয়।

প্রথম আলোর ২৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আসা নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রথম আলো সম্পর্কে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন, দেন নানা পরামর্শ।

রাঙামাটির রাজবাড়ির সাবারাং রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে আয়োজিত সমাবেশে রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মী, উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের লোকজন, নারী অধিকারকর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য নিরুপা দেওয়ান বলেন, নিজেকে প্রথম আলো পরিবারের একজন সদস্য মনে হয়। প্রথম আলো প্রতিটি ভালো কাজের সঙ্গে আছে। বহুমুখী কাজের সঙ্গে যুক্ত। সাহসের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা অপ তথ্যের ভিড়ে সত্য প্রকাশ করছে প্রথম আলো। প্রথম আলো পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনা বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করে। ভবিষ্যতেও এই ধারা যেন অব্যাহত রাখে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ায় প্রথম আলোকে অভিনন্দন জানান তিনি।

সুধী সমাবেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রো বেটার লাইফ (পিবিএল) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রণ জ্যোতি চাকমা বলেন, সারা দেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ প্রথম আলো পড়েন। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি মানুষ প্রথম আলো পড়েন। এই পত্রিকা সারা দেশের প্রায় সব ধরনের ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয়, সারা বাংলাদেশের সামনে বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প। সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করা মানুষদের এক জোট হতে হবে। প্রথম আলোকে সামনে রেখে সবাই এগিয়ে যাব। প্রযুক্তি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রথম আলো আরও বেশি বেশি সংবাদ প্রকাশ করবে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও নাট্যকার মৃত্তিকা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের যেসব জনজাতি রয়েছে, তাঁদের সৃজনশীল লেখা, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক নিয়ে প্রথম আলোর সাহিত্য পাতা প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর বিশেষ সংখ্যা করতে পারে। একই কথা বলেন কবি শিশির চাকমা।

রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের মধ্যে মানুষের সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য ও আস্থার পত্রিকা হলো প্রথম আলো। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের কাছে একমাত্র নির্ভরযোগ্য পত্রিকার স্বীকৃতি পেয়েছে প্রথম আলো। প্রথম আলো বছরের পর বছর ধরে সত্য প্রকাশ করে চলছে বলে এই আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় যখন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, তখন প্রথম আলো দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

অধিকার কর্মী আইনজীবী সুস্মিতা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক বিষয় সঠিকভাবে আসে না। প্রথম আলো যেন সেসব তুলে ধরে। পাহাড়ের সংবাদ যেন বেশি বেশি করে দেয়।

রাঙামাটিতে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন নারী অধিকার বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য নিরুপা দেওয়ান। আজ বিকেলে শহরের রাজবাড়ি সড়কের সাবারাং রেস্টুরেন্টে

সম্পর্কিত নিবন্ধ