ভারতকে জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র ও এক্সক্যালিবার প্রজেকটাইলস বিক্রি করতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থার (ডিএসসিএ) বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৯ নভেম্বর) ডিএসসিএ এক ঘোষণায় জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ভারতকে ৯৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম ও এক্সক্যালিবার গাইডেড আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।

আরো পড়ুন:

দশম বারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতিশ কুমার

৬ দিনে অজয়-রাকুলের সিনেমা কত টাকা আয় করেছে?

আগস্টে নয়াদিল্লির রাশিয়ান তেল কেনার শাস্তি হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের ঘটনায় সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পর ওয়াশিংটনের বিদেশি সামরিক বিক্রয় কর্মসূচির অধীনে ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়।

ভারত নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি তেজাস যুদ্ধ বিমানকে আরো শক্তিশালী করার জন্য চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের ফাইটার জেট ইঞ্জিনের পুনঃঅর্ডার দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিল।

ডিএসসিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই প্রস্তাবিত ডিল যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে রয়ে যাওয়া একটি প্রধান প্রতিরক্ষা অংশীদারের নিরাপত্তা উন্নত করতে সহায়তা করে মার্কিন বৈদেশিক নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোকে সমর্থন করে।”

ডিএসসিএ জানিয়েছে, ভারত সরকার ২১৬টি এক্সক্যালিবার ট্যাকটিক্যাল প্রজেক্টাইল এবং ১০০টি জ্যাভলিন সিস্টেম কিনতে চেয়েছে।

এক্সক্যালিবার হলো জিপিএস গাইডেড অত্যাধুনিক ১৫৫এমএম কামানের গোলা যা নিখুঁত লক্ষ্যে গিয়ে আঘাত করতে পারে। এটা ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে।

জ্যাভলিন হলো একজন বহন করতে পারে এমন একটি মাঝারি পাল্লার ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ড এসস এ

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দিন অটো চালিয়েও জরিমানার টাকা ওঠে না, ট্রাফিক কার্যালয়ে বিক্ষোভ

রাজশাহী শহরে অটোরিকশার বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের চলমান অভিযানকে কেন্দ্র করে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এখন কোনো সার্জেন্ট অটোরিকশা ধরলেই চালকদের গুনতে হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা, যা আগে ছিল মাত্র ৩০০ টাকা।

হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এই জরিমানাকে আয়-উপার্জনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ দাবি করে রাজশাহী শহরের শতাধিক অটোরিকশাচালক বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তারা বলছেন, তিন দিন অটো চালিয়েও জরিমানার টাকা ওঠে না। এ জরিমানা তারা মানেন না।

বিক্ষোভকারীরা জানান, রাজশাহী শহরে এখন দুই শিফটে অটোরিকশা চলে। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে সবুজ রঙের অটোরিকশা এবং পরের শিফটে চলে মেরুন রঙের অটোরিকশা। গ্রাম থেকে অনেক সময় অটোরিকশা হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসে। শহর থেকে বের হতে হতে শিফট পরিবর্তন হয়ে গেলে সার্জেন্ট তাদের গাড়ি জব্দ করে মামলা দেন। সেই মামলার জরিমানাই দাঁড়ায় ২ হাজার ৬০০ টাকা। এতে একজন চালকের সারাদিনের আয় প্রায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।

তারা আরো জানান, গাড়ি জব্দ হওয়ার পরদিন জরিমানার টাকা জমা দিলেই কেবল তারা গাড়ি ফেরত পান। একই অভিযোগে দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে জরিমানা বেড়ে হয় ৫ হাজার টাকা। তৃতীয় ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৫০০ টাকা। 

অটোরিকশার চালকরা বলেন, এমন অস্বাভাবিক জরিমানা দিয়ে গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। এতে পরিবার–পরিজনসহ নিদারুণ কষ্টে আছেন হাজারো চালক।

বিক্ষোভে জাতীয়তাবাদী ইজিবাইক শ্রমিক দলের রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন বলেন, “অটোরিকশার বর্তমান জরিমানা ২ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকা, যা একজন চালকের সাপ্তাহিক আয়ের চেয়েও বেশি। এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ও এই জরিমানা ৩০০ টাকার বেশি ছিল না। এখন সেটি হঠাৎ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে চললে গাড়ি জব্দ হওয়ার পর চালকদের ভিক্ষা করে বাঁচতে হবে।”

সংগঠনটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেছেন, “আমরা মোট ১১ দফা দাবি জানিয়েছি। এগুলো কোনো বাড়তি সুবিধা নয়; এগুলো চালকদের ন্যায্য অধিকার। অযৌক্তিক জরিমানা, গাড়ি ডাম্পিং ও হয়রানির কারণে হাজারো পরিবার কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আমরা চাই, সহনশীল জরিমানা, নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা এবং নিবন্ধিত গাড়ির সুরক্ষা নিশ্চিত হোক।”

চালকদের দাবিগুলো হলো—ন্যায্য ভাড়া নির্ধারণ, হালনাগাদ ভাড়ার তালিকা প্রকাশ, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার বিরুদ্ধে তদারকি, নির্দিষ্ট পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামার স্থান নির্ধারণ, অনিবন্ধিত গাড়িকে আইনের আওতায় আনা, নকশা অনুযায়ী নিরাপদ গাড়ি উৎপাদন, সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নীতি, টাইম ওভার মামলার পুনর্বিবেচনা, চালকদের ট্রাফিক আইনবিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং মাসিক সমন্বয় সভা আয়োজন।

বিক্ষোভকালে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি গগন কুমার রায়, শাহ আলম ও মো. অনু, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হামিদ, দপ্তর সম্পাদক মো. আলমগীর, প্রচার সম্পাদক মো. রাসেলসহ অনেকে। দাবি না মানলে তারা আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমপি ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার নূর আলম সিদ্দিকী বলেছেন, “জরিমানা সফটওয়্যারে অটোমেটিক সেট করা। সেখানে কমানোর সুযোগ নেই। তবে, কোনো চালক নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে আমি বিষয়টি বিবেচনায় নিই। বৈধ কাগজপত্র থাকলে ২ হাজার ৬০০ টাকার জরিমানা কমিয়ে ৬৫০ টাকা করে দিই।”

তিনি আরো বলেন, “চালকদের আরো কিছু দাবি আছে, সেগুলো শুধু ট্রাফিক বিভাগ নয়, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ