মঙ্গল গ্রহ, তার লালচে আভার কারণে সৌরজগতের সবচেয়ে রহস্যময় গ্রহের মধ্যে অন্যতম। আমাদের পৃথিবীর যেকোনো পর্বতের চেয়ে বহুগুণ বড় অলিম্পাস মন্স নামের দৈত্যাকার এক আগ্নেয়গিরি রয়েছে সেখানে। মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠতলে রয়েছে সুবিশাল উপত্যকা, প্রাচীন নদী খাত এবং জমে যাওয়া লাভার প্রবাহ। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহে থাকা অলিম্পাস মন্স আগ্নেয়গিরির পাদদেশের চমকপ্রদ ছবি প্রকাশ করেছে। অলিম্পাস মন্স প্রায় ২৭ কিলোমিটার উঁচু ও এর ভিত্তি ৬০০ কিলোমিটারের বেশি চওড়া। এটি আমাদের সৌরজগতের বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি।

অলিম্পাস মন্স ১৯৭১ সালে নাসার মেরিনার ৯ মহাকাশযান আবিষ্কার করে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার প্রকাশিত ছবিতে অলিম্পাস মন্স থেকে প্রবাহিত লাভার জমে যাওয়া ছবি দেখা যায়। ধারণা করা হয়, মঙ্গল গ্রহের প্রাথমিক ভূতাত্ত্বিক যুগে, প্রায় ৩৫০ কোটি বছর আগে অলিম্পাস মন্স গঠিত হয়। আগ্নেয়গিরিটি বর্তমানে সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। সাম্প্রতিককালে সেখানে কোনো অগ্ন্যুৎপাত ঘটেনি। এর মৃদু ঢাল এবং উল্কাপিণ্ডের আঘাতের গর্তের অভাব দেখে অনুমান করা যায়, সেখানকার পৃষ্ঠতল তুলনামূলকভাবে নতুন।

আরও পড়ুনমঙ্গল গ্রহ লাল কেন০৪ মার্চ ২০২৫

মার্স এক্সপ্রেস অরবিটারের তোলা ছবিতে আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে লাভা প্রবাহের স্তর, খাড়া পর্বতখণ্ড  ও প্রাচীন ধসের চিহ্ন দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইএসএ জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরিকে ঘিরে থাকা ৯ কিলোমিটার পর্যন্ত উঁচু খাড়া ঢাল বিশাল ভূমিধসের ফলে গঠিত হয়েছে। এই ঢালের কারণে শত শত কিলোমিটার দূরে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে যায়। লাভার প্রবাহ এখন কঠিন শিলা। একসময় আগ্নেয়গিরির ঢাল বেয়ে নেমে এসেছিল। বিশাল ফ্যান বা পাখা-আকৃতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল চারদিকে। ঠান্ডা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে খাল ও নল তৈরি হয়। কিছু প্রবাহ সমতল ভূমিতে পৌঁছানোর আগে মসৃণ, গোলাকার জিহ্বার মতো আকার নিয়ে থেমে গিয়েছিল। নিচের সমভূমিতে একটি ঘোড়ার নালের আকারের চ্যানেল একসময় লাভা ও পানি বহনের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কাঠামো মঙ্গলের জটিল অতীতের ইঙ্গিত দেয়। এখানে সামান্য কিছু ছোট গর্ত থাকায় পৃষ্ঠটি ভূতাত্ত্বিকভাবে নবীন। সম্ভবত মাত্র কয়েক কোটি বছরের পুরোনো।

আরও পড়ুনমঙ্গল গ্রহে থাকা অদ্ভুত কাঠামো কি প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ০৮ এপ্রিল ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমি এখানে আমার সকালের দৌড়টি দিতে চাই। আরেকজন মন্তব্য করেছেন, আমি অবাক হয়ে ভাবছি এই বিশাল লাভা প্রবাহের কারণে মঙ্গল তার চৌম্বকক্ষেত্র হারিয়েছে কি না? একজন লিখেছেন, পরিষ্কার করা হলে এই ধাপে একটি ভালো শহর ও আগ্নেয়গিরিতে প্রবেশের পথ তৈরি করতে পারত।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ন য গ র র প রব হ গ রহ র

এছাড়াও পড়ুন:

সলিলের গানের ভেতরেই ছিল মিছিলের স্লোগান

‘গণসংগীত মানুষের রক্তে আগুন জ্বেলে দিয়েছে, উজ্জীবিত করেছে, মুক্তির পথ দেখিয়েছে’—আজ শহীদ মিনারে এই উচ্চারণে আবারও ফিরে এলেন সলিল চৌধুরী। বুধবার, সন্ধ্যায় উদীচীর আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হলো কিংবদন্তি গণসংগীতকার সলিল চৌধুরীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন ‘সতত সলিল’।
আলোচনা, গান, কবিতা ও নৃত্যে সজ্জিত এই আয়োজন ছিল একাধারে স্মরণ, শ্রদ্ধা ও চেতনার পুনর্জাগরণ। সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুল আলম। আলোচনায় অংশ নেন লেখক–গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েম রানা এবং উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সহসাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান।

সলিল চৌধুরী সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে আলোচকেরা বলেন, জাতির যে ঐতিহাসিক ধারাক্রম রয়েছে, সেই ধারার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের একজন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি ছিলেন সলিল চৌধুরী। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলার মানুষের প্রতিটি লড়াই–সংগ্রামে গণসংগীত মানুষের রক্তে আগুন জ্বেলেছে, মানুষকে উজ্জীবিত করেছে, মানুষকে তার মুক্তির পথ দেখিয়েছে। সলিল চৌধুরী ছিলেন সেই গণসংগীতের একজন কিংবদন্তি কারিগর। তাঁর হাত ধরে গণসংগীত পেয়েছে এক নতুন মাত্রা। তিনি কবিতাকে, মিছিলের স্লোগানকে যেমন গানে রূপান্তর করেছেন, তেমনি তাঁর রচিত সংগীত হয়ে উঠেছে মিছিলের স্লোগান। বক্তারা আরও বলেন, ‘গণমানুষের মুক্তির বাণী নিয়ে যে গান, তা আমাদের যুগে যুগে রাষ্ট্রব্যবস্থায় শাসকশ্রেণি থেকে শুরু করে অনেকেরই পছন্দের নয়। তাই হয়তো আমাদের সমাজে গণসংগীত যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। কিন্তু তারপরও মানবমুক্তির প্রতিটি লড়াইয়ে, প্রতিটি সংগ্রামে গণসংগীত আমাদের শক্তি জোগায়, সাহস জোগায়। বাংলা আধুনিক গানের অবিস্মরণীয় সুরস্রষ্টা ও গণসংগীতের প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তি সলিল চৌধুরীর তৈরি করা গণসংগীত সর্বকালের জন্য প্রাসঙ্গিক।’

আলোচনা শেষে আয়োজন মাতিয়ে তোলে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বৃন্দগান পরিবেশন করে উদীচী সংগীত বিভাগ ও ‘কোরাস’। একক গান করেন তানভীর আলম সজীব এবং মনসুর আহমেদ। বৃন্দনৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন; একক নৃত্যে অংশ নেন আদৃতা আনোয়ার প্রকৃতি। আবৃত্তিতে অংশ নেয় উদীচী আবৃত্তি বিভাগ; একক আবৃত্তি করেন শাহেদ নেওয়াজ।

আলোচনা শেষে আয়োজন মাতিয়ে তোলে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেনীতে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু
  • কামাল সিদ্দিকী: আমলাতন্ত্রের ঘেরাটোপ ভাঙা একজন দেশপ্রেমী
  • চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু
  • গাজার ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি আসলে কারা চালাচ্ছে
  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব, জমি ছাড়তে হবে ইউক্রেনকে
  • এলোমেলো শিক্ষা খাত, বাড়ছে সংকট
  • সৌদি যুবরাজের সমালোচক জামাল খাশোগি যেভাবে মারা হয়েছিলো
  • সলিলের গানের ভেতরেই ছিল মিছিলের স্লোগান
  • চাঁদে একসময় বরফ ছিল