চট্টগ্রাম থেকে একসঙ্গে তিন জাহাজ রপ্তানি হচ্ছে আমিরাতে
Published: 20th, November 2025 GMT
চট্টগ্রামভিত্তিক জাহাজ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড একসঙ্গে তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ বা ছোট আকারের জাহাজ রপ্তানি করতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই তিনটি জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় জাহাজ নির্মাণ কারখানাটির সামনে কর্ণফুলী নদীর তীরে জাহাজ তিনটির একটি ‘মায়া’তে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই তিনটি জাহাজ হস্তান্তর করা হয়। জাহাজ তিনটির নাম মায়া, এমি ও মুনা। তিনটি জাহাজই মূলত ল্যান্ডিং ক্রাফট। ল্যান্ডিং ক্রাফট হলো ছোট আকারের জাহাজ। ল্যান্ডিং ক্রাফট ধরনের জাহাজের পানির নিচে গভীরতা কম থাকায় অগভীর নৌপথেও এগুলো চলাচল করতে পারে। আবার খুব সহজেই মালামাল নিয়ে তীরের কাছে রসদ পরিবহনে ব্যবহার করা যায়।
জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আল হমোদি বলেন, ‘দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। আশা করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ আরব আমিরাতে রপ্তানি হবে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২৩ সালে ওয়েস্টার্ন মেরিন সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের সঙ্গে আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করেছিল। এই আটটি জাহাজের মধ্যে রয়েছে দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দুটি ট্যাংকার। এই চুক্তির আওতায় এ বছর ৬৫ টন ও ৮০ টন বোলার্ড পুল ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি টাগবোট ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ এবং ‘রায়ান’ নামের একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট রপ্তানি হয়। এখন তিনটিসহ ছয়টি জাহাজ রপ্তানি হচ্ছে। বাকি দুটি রপ্তানি হবে আগামী বছর।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, সব মিলিয়ে এই আট জাহাজের রপ্তানিমূল্য ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে রপ্তানি হতে যাওয়া এই তিন জাহাজের রপ্তানিমূল্য ২২ লাখ ডলার।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) প্রশাসক আবদুর রহিম খান ও ওয়েস্টার্ন মেরিনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েস্টার্ন মেরিনের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, জাহাজ নির্মাণ একটি শ্রমঘন ও উচ্চ প্রযুক্তির ভারী শিল্প। জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব।
ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, দেশে এই শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বরাদ্দ। পুঁজি পেলে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং দেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে জাহাজনির্মাণ শিল্প খাত।
বাংলাদেশ থেকে প্রথম জাহাজ রপ্তানি করে ঢাকার আনন্দ শিপইয়ার্ড। ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ডেনমার্কে জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে এই অভিযাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০১০ সালে জাহাজ রপ্তানিতে যুক্ত হয় চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের নাম। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটি জার্মানিতে একটি সমুদ্রগামী জাহাজ রপ্তানি করে। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১১টি দেশে মোট ৩৬টি জাহাজ রপ্তানি করেছে, যার বাজারমূল্য ১৩ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জয়ার ‘কমফোর্ট জোন’ আবির
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত দাপুটে অভিনেত্রী জয়া আহসান। ওপার বাংলাতেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। গত এক যুগে ভারতীয় সিনেমায় নিজের শক্ত অবস্থান গড়েছেন। ২০১৩ সালে ‘আবর্ত’ সিনেমা দিয়ে ভারতীয় বাংলা সিনেমায় পা রাখেন জয়া। অভিষেক সিনেমায় সহশিল্পী হিসেবে পান আবির চ্যাটার্জিকে। তারপর অনেক সিনেমায় একসঙ্গে রোমান্সে মেতেছেন এই জুটি।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আবির চ্যাটার্জির জন্মদিন। এ উপলক্ষে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে কথা বলেছেন জয়া। অন্যতম সেরা বন্ধুকে নিয়ে নানা তথ্য জানিয়েছেন ‘বিসর্জন’খ্যাত এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘১৫ হাজার সেফটিপিন শাড়িতে লাগালেও, তারা খুঁত বের করবে’
দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে নাম জড়াল নোরার, অভিনেত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি
জয়া আহসান বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিতে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হয়। আবির হলো তাদের মধ্যে অন্যতম। অত্যন্ত নির্ঝঞ্ঝাট একজন মানুষ। ওর সঙ্গে আমার সবচেয়ে বেশি কাজ। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ইন্ডাস্ট্রিতে আমার সবচেয়ে কমফোর্ট জোন আবির। পর্দায় তো আমাদের একসঙ্গে অনেক রোমান্টিক কাজ করতে হয়, ও আমার এতটাই ভালো বন্ধু, এত দুষ্টুমি আর মজার সম্পর্ক ওর সঙ্গে যে, কাজ নিয়ে ভাবতেই হয় না; সবকিছু খুব সহজ হয়ে যায়।”
মানুষকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেন না আবির। এ তথ্য উল্লেখ করে জয়া আহসান বলেন, “আমি কখনো দেখিনি ও কোনো আড্ডায় বা কখনো কোথাও কাউকে নিয়ে সমালোচনা করছে। কেউ কষ্ট পেতে পারে এরকম কথা আমি আবিরকে কখনো বলতে শুনিনি। তাই ওর জায়গা আমার জীবনে অনেকটা উপরে। একটু বেশিই সমালোচনাহীন মানুষ। যদিও মাঝেমধ্যেই একটু টক-ঝাল গল্প হলে সকলেরই খুব ভালোলাগে। তবে ওর মধ্যেও নিশ্চয়ই সেটা আছে, নয় সেটা কেউ খুঁজে পায় না অথবা আমরা দেখতে পাই না।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনা বর্ণনা করে জয়া আহসান “পুতুল নাচের ইতিকথার জন্য আমরা কিছু দিন আগে যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলাম। ওরে বাবা! আবির ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সে যা হলো। আমাদের দিকে আর কে তাকাবে, আমাদের কথা কারো তখন কান দিয়ে মাথা পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। সকলে শুধু ওর দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। মুগ্ধ নয়নে সকলে আবিরকে দেখছে। আমিও দেখছিলাম যে, আহা কী অপূর্ব এই দৃশ্য। ওর জন্য অনুরাগীরা কতটা পাগল। এই ভক্তদের সামলে রাখা এবং সবটা এমন যত্নে রাখাও খুব কঠিন কাজ। আবির খুব সুন্দরভাবে সামাল দিতে পারে।”
“আসলে আবিরের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। সংসার, কর্মজীবন পাশাপাশি চালিয়ে যাওয়া খুব সহজ কাজ নয়। আবির খুব সুন্দরভাবে পরিবারকে প্রাধান্য দিয়ে সংসার জীবনটা মেইনটেন করে। শুধু তাই নয়, কাজের জায়গাটাও ব্যালান্স করে।” বলেন জয়া আহসান।
পেশাগত জায়গা ও পরিবার একই সঙ্গে দক্ষ হাতে সামলান আবির। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জয়া আহসান বলেন, “আসলে ওর মতো একজন মানুষকে বন্ধু হিসেবে পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার। ওর অনুভূতি খুব মন থেকেই আসে সেটা যার জন্যই হোক এবং এই বিষয়টা কিন্তু ফেক নয়। আমি চাই, ও যেন সারাজীবন এমনই থাকে। আমরা যা করতে পারিনি বা পারি না সেটাই ও অতি যত্নে করে দেখায়। কত অবলীলায় আমরা বলে ফেলি, কর্মজীবন ও পরিবার একসঙ্গে সামলানো কঠিন, ও সেটা বার বার ভুল প্রমাণ করে দেখিয়েছে।”
ঢাকা/শান্ত