আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকার, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে আরো বলিষ্ঠ ও স্বচ্ছ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। 

তিনি বলেছেন, “নাগরিকদের মনে এখনো যে শঙ্কা ও ভীতি রয়েছে, তা দূর করা না গেলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।”

আরো পড়ুন:

সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা না গেলে দক্ষ জনশক্তি তৈরি বাধাগ্রস্ত হবে: বিআরটিএ চেয়ারম্যান

অপশক্তি নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না: আইজিপি

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) খুলনায় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। সকালে নগরীর হোটেল সিটি ইন-এ এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “জনগণ আস্থা না পেলে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রূপ পায় না। মুক্ত আলোচনা, স্বচ্ছতা ও সততার ভিত্তিতে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার আজ সময়ের দাবি। দেশ নির্বাচনমুখী হয়ে উঠছে, নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। আমরা কেমন নির্বাচন পাব- সেই প্রশ্ন জনগণের মনে রয়ে গেছে।”

খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভাবনা বহুদিন ধরে আলোচিত হলেও বাস্তবায়ন এখনো দৃশ্যমান নয়। পদ্মা সেতু চালুর পরে প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। জমির মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কর্মসংস্থান বা শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি বাড়েনি; সভায় এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন নাগরিকরা বলে জানান তিনি।

সিপিডির আহ্বায়ক বলেন, “নতুন প্রজন্মের শ্রমিককে আকৃষ্ট করতে অঞ্চলভিত্তিক শিল্পায়ন জরুরি। খুলনা অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্প, চিংড়ি ও মাছ উৎপাদন এবং পর্যটন খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সুন্দরবন ও সাংস্কৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠা সম্ভব।” এ বিষয়গুলো সভায় আলোচিত হয়েছে বলেও তিনি জানান।

খুলনা অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এলাকা থেকে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের অবশ্যই আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি ইশতেহারে দিতে হবে। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম পরবর্তীতে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে জবাবদিহিতা তৈরি করবে।”

“রপ্তানিমুখী অর্থনীতির জন্য দক্ষ বন্দর ব্যবস্থা অপরিহার্য। প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগ জরুরি হলেও তা অবশ্যই স্বচ্ছ পদ্ধতিতে হতে হবে”, যোগ করেন তিনি।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “সঠিক সংস্কার যদি বেঠিক পদ্ধতিতে করা হয়, তাহলে তার সুফল পাওয়া যায় না। বন্দর সংস্কারে যে দ্রুততা ও অস্বচ্ছতা দেখা গেছে, তাতে ভালো উদ্যোগও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে।”

ড.

দেবপ্রিয় জোর দিয়ে বলেন, “সংস্কার প্রয়োজন, বিনিয়োগও প্রয়োজন; কিন্তু তা হতে হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে, উন্মুক্ত আলোচনা ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। তাহলেই সংস্কার টেকসই হবে।”

সভায় আগামী নির্বাচনের প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক নেতৃবৃন্দ স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিরাপদ সড়ক, শিল্পের উন্নয়ন, পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জনসহ সুন্দরবনের পর্যটন শিল্পের বিকাশ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি। সভায় সমাপনী বক্তৃতা করেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর খুলনা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, এনসিপির ডা. আব্দুল্লাহ চৌধুরী। 

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর খ লন

এছাড়াও পড়ুন:

জাপা নির্বাচনের সুযোগ পেলে গণঅধিকার পরিষদ তা বর্জন করবে: রাশেদ

জাতীয় পার্টিসহ (জাপা) স্বৈরাচারের দোসরদের আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে গণঅধিকার পরিষদ নির্বাচন বর্জন করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

রাশেদ খান বলেছেন, ‘‘ভারতের মদদে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের চেষ্টা চালাচ্ছে। জাতীয় পার্টি ভারতের মদদে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফ্যাসিস্টের দোসরদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনগণ মানবে না। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’’

আরো পড়ুন:

জকসু নির্বাচন: নবীনদের ‘তরুণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা

জকসু: ছাত্রদলের বিদ্রোহীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে ঝিনাইদহের সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর বাজারে নির্বাচনি গণসংযোগ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। 

রাশেদ খান বলেন, ‘‘শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দিলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। ভারত যদি বাংলাদেশে নতুন করে হাসিনার মতো কাউকে তাবেদার শাসক বানাতে চায়, তাহলে জনগণ তা প্রতিহত করবে। বাংলাদেশের জনগণ আর কখনো ভারতের তাবেদার সরকার মেনে নেবে না।’’ 

ভারতের সঙ্গে সমতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক গঠন করা হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘‘ভারতের দাদাগিরি আমরা আর মানব না। ভারত নির্বাচন বানচালের জন্য আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থীদের স্বতন্ত্র সাজিয়ে ভোটের মাঠে নামাতে চাইছে। আমরা সেই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।’’ 

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর বাজারে নির্বাচনী গণসংযোগে অংশ নেন রাশেদ খান। এ সময় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মো. সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রিহান হোসেন রায়হান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/সোহাগ/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়, জনগণের জীবন বদলানোর বেলায় নেই
  • সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োজন
  • বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে: দীপেন দেওয়ান
  • গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পাস করলে কী হবে, ‘না’ পাস করলে কী হবে
  • মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিপ্লব যেভাবে নষ্ট করল চীন
  • জাপা নির্বাচনের সুযোগ পেলে গণঅধিকার পরিষদ তা বর্জন করবে: রাশেদ
  • যশোরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা: রিজভী
  • শেখ হাসিনার রায় দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে: গণসংহতি আন্দোলন