নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর একটি সাধারণ সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন যুবদল নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে। হামলায় সান্দিকোনা ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সান্দিকোনা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। হামলার প্রতিবাদে ওই দিন রাত ১০টার দিকে কেন্দুয়া পৌর শহরের সোনালী ব্যাংক–সংলগ্ন জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা, দলীয় নেতা–কর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে সান্দিকোনা বাজারের একটি কোচিং সেন্টারে ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সভা চলছিল। সেখানে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্যসহ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের নিয়ে সভা করার অভিযোগ তুলে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। হামলায় ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম, জামায়াতের কর্মী নয়ন মিয়া ও শামীম মিয়া আহত হন। পরে মাজহারুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দুজন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

হামলার প্রতিবাদে রাত ১০টার দিকে উপজেলা জামায়াতের নেতা–কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা জামায়াতের আমির ছাদেকুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মো.

রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম ও বায়তুলমাল সেক্রেটারি মো. জহিরুল ইসলাম।

ছাদেকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের দলের সান্দিকোনা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ সভা চালাচ্ছিলেন। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বানোয়াট ইস্যু তৈরি করে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ যুবদল নেতা–কর্মী হামলা চালান। এতে ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ তিনজন আহত হন। এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা, আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা  ও ভবিষ্যতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের নিশ্চয়তার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি জানান, ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা দুইটায় কেন্দুয়া পৌর শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।

এদিকে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। যৌথ বিবৃতিতে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছ ও সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান নিন্দা জানিয়েছেন।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার রড–সিমেন্টের দোকানের পাশে একটি কোচিং সেন্টারে তারা মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে আমাদের দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছিল। পরে ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতা–কর্মী গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হলে বাজারের মুরব্বিরা থামিয়ে দেন। এতে আমিসহ যুবদলের আরও দুই কর্মী আহত হয়েছেন।’

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ব র রহম ন য বদল র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নেত্রকোনায় সাংবাদিক লুৎফুজ্জামান আলিফের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক নাজমুস শাহাদৎ, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি পারভেজ, হামলার শিকার লুৎফুজ্জামান আলিফ প্রমুখ।

লুৎফুজ্জামান আলিফ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রূপসী বাংলার নেত্রকোনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর দুপুরে লুৎফুজ্জামান আলিফ ও তাঁর সহকর্মী শাহজাহান শেখ জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে একটি ভাড়া মোটরসাইকেলে নদীর তেরিবাজার ঘাটে নামেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন ব্যক্তি সেখানে যান। তাঁদের মধ্যে দুজন চাপাতি হাতে লুৎফুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সঙ্গে থাকা শাহজাহান শেখ বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কোপানোর চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লুৎফুজ্জামানকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি পরে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে গতকাল বাড়ি ফেরেন।

এ ঘটনায় লুৎফুজ্জামান বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছেন। এতে দুর্গাপুর পৌরশহরের পশ্চিম মোক্তারপাড়া এলাকার ইমরান ইসলাম ওরফে ইমন (২৩) ও পুলিশ মোড় এলাকার মো. সৌরভের (২৩) নামোল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালে মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে ছাত্রদল নেতা খুনের নেপথ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব
  • নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন