নেত্রকোনায় জামায়াতের সাধারণ সভায় হামলার অভিযোগ, আহত ৩
Published: 4th, October 2025 GMT
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর একটি সাধারণ সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন যুবদল নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে। হামলায় সান্দিকোনা ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সান্দিকোনা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। হামলার প্রতিবাদে ওই দিন রাত ১০টার দিকে কেন্দুয়া পৌর শহরের সোনালী ব্যাংক–সংলগ্ন জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা, দলীয় নেতা–কর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে সান্দিকোনা বাজারের একটি কোচিং সেন্টারে ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সভা চলছিল। সেখানে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্যসহ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের নিয়ে সভা করার অভিযোগ তুলে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। হামলায় ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম, জামায়াতের কর্মী নয়ন মিয়া ও শামীম মিয়া আহত হন। পরে মাজহারুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দুজন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হামলার প্রতিবাদে রাত ১০টার দিকে উপজেলা জামায়াতের নেতা–কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা জামায়াতের আমির ছাদেকুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মো.
ছাদেকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের দলের সান্দিকোনা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ সভা চালাচ্ছিলেন। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বানোয়াট ইস্যু তৈরি করে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ যুবদল নেতা–কর্মী হামলা চালান। এতে ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ তিনজন আহত হন। এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা, আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা ও ভবিষ্যতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের নিশ্চয়তার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি জানান, ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা দুইটায় কেন্দুয়া পৌর শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এদিকে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। যৌথ বিবৃতিতে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছ ও সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান নিন্দা জানিয়েছেন।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার রড–সিমেন্টের দোকানের পাশে একটি কোচিং সেন্টারে তারা মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে আমাদের দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছিল। পরে ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতা–কর্মী গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হলে বাজারের মুরব্বিরা থামিয়ে দেন। এতে আমিসহ যুবদলের আরও দুই কর্মী আহত হয়েছেন।’
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ব র রহম ন য বদল র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।