‘অভ্যুত্থানের পর আন্তরিকতার অভাবে পুলিশি সেবা বন্ধ ছিল’
Published: 4th, October 2025 GMT
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আন্তরিকতার অভাবে থানাগুলোতে পুলিশি সেবা বন্ধ ছিল বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। তিনি বলেছেন, ‘‘১৮৭৮ সালে পুলিশ থানা প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ২৪ ঘণ্টা থানাগুলো সার্ভিস দিয়ে গেছে, কিন্তু ২৪ এর আন্দোলনের সময় এর ব্যত্যয় ঘটেছে। এ সময় মেধা ও দক্ষতার ঘাটতি ছিল না, ঘাটতি ছিল আন্তরিকতার।’’
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে রাজশাহী পিটিআই মিলনায়তনে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ফ্লোটিলা নৌবহর থেকে ২০ সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল
বাগেরহাটে ছুরিকাঘাতে সাংবাদিক হায়াতকে হত্যা
নাসিমুল গনি বলেন, ‘‘অসৎ লোকের কাজকর্মে কখনো সমাজ ধ্বংস হয় না, ধ্বংস হয় সৎ লোকের নীরবতায়। দেশের ৪০ শতাংশ হচ্ছে জেন-জি, তারাই ৩৬ জুলাই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। তারা আমাদের কাছে সুবিচার প্রত্যাশা করে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মের চাহিদার মতো করে দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। তারা যে সুবিচার চায় তা শুধু বিচারকদের বিষয় নয়, সিভিল সার্ভিসে যারা আছেন; তাদের সবার জন্য এটা প্রযোজ্য। আর এ কাজের জন্য অ্যাটিচিউড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি চাকরি শুধু টাকা বানানোর মেশিন নয়, এটা হচ্ছে জনগণের প্রতি এবং স্রষ্টার প্রতি কর্তব্য পালন।’’
পবিত্র কুরআনের সুরা ছোয়াদের ২৬ নম্বর আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘‘আল্লাহ দাউদ (আ.
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারসহ বিভাগের আট জেলার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশাসনের আশ্বাসে মাদারগঞ্জে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার
জামালপুরের মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতি থেকে আমানতের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি প্রশাসনের আশ্বাসে প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার রাতে স্থানীয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনার পর সাত দিনের জন্য এ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে টানা সাত দিন ধরে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে প্রশাসনিক সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, থানায় স্থানীয় প্রশাসন, বড় দুটি সমিতির মালিকপক্ষের লোকজন ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। আলোচনায় আগামী সাত দিনের মধ্যে বড় বড় সমিতির মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন। পরে সাত দিনের জন্য কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আমানতের অর্থ উদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। আমরাও তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। আলোচনায় টাকা উদ্ধারে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রশাসন আমাদের জানিয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে বড় বড় সমিতি থেকে টাকা উদ্ধারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তাঁদের কথায় আমরাও আশ্বস্ত হই। তবে আগামী সাত দিনের মধ্যে টাকা উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি দেখাতে না পারলে, আবারও ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ বলেন, ‘আলোচনায় টাকা উদ্ধারের কিছু অগ্রগতি আন্দোলনকারীদের দেখানো হয়েছে। এতে তাঁরা সন্তুষ্ট। ইতিমধ্যে বড় দুটি সমিতির মালিকপক্ষ গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং দুটি সমিতির কেনা অনেক জমির দলিল দিয়েছেন। ওইসব জমি বিক্রি করে গ্রাহকদের মধ্যে টাকা দেওয়া হবে। চেষ্টা করব, সাত দিনের মধ্যে যাতে টাকা উদ্ধারে আরও অগ্রগতি বাড়ে।’
১১ নভেম্বর থেকে ‘মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতিতে আমানতকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য সহায়ক কমিটি’র ব্যানারে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হচ্ছিল। এতে ভুক্তভোগীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও অংশ নেন। এক বছর ধরে এই ব্যানারে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল, মশালমিছিল, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও একাধিকবার উপজেলা পরিষদ ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কিন্তু কোনো গ্রাহকই টাকা ফেরত পাননি।
জেলা সমবায় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকের ৭৩০ কোটি টাকা সমবায় সমিতিগুলোয় ছিল। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দাবি, ২৩টি সমিতির মধ্যে আল–আকাবা, শতদল, স্বদেশ, নবদীপ, হলিটার্গেট ও রংধনু অন্যতম। ছয়টি সমিতির কাছে জমা আছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি। শুধু মাদারগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি হিসাব করে দেখা গেছে, প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা সমিতিগুলোয় আছে। এ ছাড়া ইসলামপুর, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী ও জামালপুর সদরে কয়েক হাজার গ্রাহক আছেন।