জুলাই জাতীয় সনদ অবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে তা শুধু একটি ‘কাগজের দলিল’ হিসেবেই থেকে যাবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। যারা জুলাই সনদের আন্দোলনে নেই, তাদের সঙ্গে এ মুহূর্তে আমাদের কোনো রাজনৈতিক বোঝাপড়ার প্রশ্নই ওঠে না। আর জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথে যারা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে, তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার ঐক্যের সম্পর্ক আমাদের থাকতে পারে না।’

আজ শনিবার রাজধানীতে দলের এক প্রশিক্ষণ মজলিশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক এসব কথা বলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনে অবস্থিত ফেনী সমিতি মিলনায়তনে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ তাঁর দলের ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি সাধারণ মানুষের বোধগম্য ভাষায় উপস্থাপনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান মামুনুল হক।

মামুনুল হক বলেন, ‘এ মুহূর্তে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হবে—এমন প্রত্যাশাই করছি। জুলাই সনদ যদি অবিলম্বে বাস্তবায়ন না হয়, তবে তা কেবল একটি কাগজের দলিল হিসেবেই থেকে যাবে। ভবিষ্যতের কোনো সরকার এটি বাস্তবায়ন করবে, এমন ভরসা নেই। সুতরাং, জুলাই বিপ্লবকে সার্থক করতে হলে জুলাই সনদ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এর ভিত্তিতেই আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি।’

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদের টার্গেটভিত্তিক কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দুটি টার্গেটে কাজ করছে—একটি দীর্ঘমেয়াদি এবং একটি স্বল্পমেয়াদি। দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা, রাষ্ট্রে ও সমাজে সর্বত্র ইসলামি অনুশাসন কায়েম করা। আর স্বল্প মেয়াদে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলা এবং আনুগত্যশীল ও সুশৃঙ্খল কর্মিবাহিনী তৈরি করা। সর্বোপরি সব পর্যায়ের জনশক্তিকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেখানে আলোচনায় অংশ নেন দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী এবং নেতা মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী। কর্মশালা শেষে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সর্বোচ্চ স্তরের জনশক্তি ‘নকিব’ হিসেবে বেশ কয়েকজনকে শপথ পাঠ করান মামুনুল হক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ র ম ম ন ল হক আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘জনশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করতে শিক্ষা সংস্কারের বিকল্প নেই’

বাংলাদেশের জনশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করতে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবির) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

পাবনায় আন্তর্জাতিকমানের সাইকিয়াট্রিক ইনস্টিটিউট গড়ে উঠবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নাফাখুম ঝর্ণায় নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার 

ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “আমাদের জনসংখ্যাকে সম্প‌দে প‌রিণত করতে হবে। দেশের ১৮ কো‌টি মানুষকে জনসম্পদে প‌রিণত করতে সম‌ন্বিত ও বহুমুখী উদ্যোগ প্রয়োজন। এসব উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে চাই শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল সংস্কার।”

ফ্যাসিবাদ পরবর্তী বাংলাদেশে শিক্ষা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আগে একটা কথা প্রচ‌লিত ছিল, যে জা‌তি যত বে‌শি শি‌ক্ষিত সে জা‌তি তত বে‌শি উন্নত। কিন্তু হাসিনা আমাদের কণ্ঠরোধ করতে হীরক রাজার নীতি অবলম্বন করেছিল। হীরক রাজার নীতি ছিল- যে যত বে‌শি জানে সে তত কম মানে। তাই জনগণকে বাধ্যানুগত করে রাখতে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে আমাদের জানার পরিধি সংকুচিত করে রেখেছিল পতিত সরকার। সেই ফ্যাসিস্ট শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষা সংস্কারের বিকল্প নেই।”

ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ।

এ সময় বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “আমরা শুধু রূপান্তরের কথা বলব, কিন্তু সুযোগ সুবিধা ও বাজেট বরাদ্দ না দিলে তো সেটা হবে না। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভারতে শিক্ষা খাতে বাজেট অনেক বেশি। জিডিপির প্রায় ৬ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি ২ শতাংশের কম।”

তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে হলে আইসিটিসহ ল্যাব এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করতে হবে। যাতে করে শিক্ষার্থীদেরকে জব মার্কেটে সহজে কাজে লাগানো যায়। এক কথায় দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। দক্ষতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। আমি বিশ্বাস করি বিএনপি সরকার গঠন করলে সেই বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিবে।”

সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এমএ কাউসার ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ, ঢাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস, অধ্যাপক আতাউর রহমান মিয়াজী, ড. মো. নূরুল আমিন, চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় দে রিপন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক জাফর আহমেদ প্রমুখ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘জনশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করতে শিক্ষা সংস্কারের বিকল্প নেই’