বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দীর্ঘ ৩৪ দিনের স্থবিরতার অবসান ঘটতে চলেছে। আগামীকাল রবিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ে যথারীতি ক্লাস পরীক্ষা শুরু হবে।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ আবাসিক হলসমূহে উঠতে শুরু করেছে।

আরো পড়ুন:

দেশে ২২ শতাংশের বেশি শিশু ও নারী ভিটামিন-ডি ঘাটতিতে ভুগছে

বাকৃবির ননী ফল সুপার ফুড নাকি লিভারের জন্য হুমকি?

গত ৩১ আগস্ট কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেদিন রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরদিন গত ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়র আবাসিক হলে অবস্থানরত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হয়। 

এর আগে, একইদিন (৩১ আগস্ট) সকাল ১১টায় কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে একটি একাডেমিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দুপুর দেড়টায় শিক্ষা পরিষদ তিন ডিগ্রির প্রস্তাব করলে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় উপস্থিত শিক্ষকদের ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।

অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে গত ২৩ সেপ্টেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং হল বন্ধের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়। ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড.

মো. হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “আগামীকাল থেকে ক্যাম্পাসে খুলছে। দীর্ঘ বিরতির পর খুলছে, অতীতে কি হয়েছে আমরা আর পিছনে না তাকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ইতিবাচকভাবে আমরা সবাই অগ্রসর হই, এটাই এখন সবচেয়ে প্রয়োজন। আমাদের লক্ষ্য হবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং আগের চেয়েও উন্নত এক বাকৃবি গড়ে তোলা।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশাসনের আশ্বাসে মাদারগঞ্জে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার

জামালপুরের মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতি থেকে আমানতের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি প্রশাসনের আশ্বাসে প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার রাতে স্থানীয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনার পর সাত দিনের জন্য এ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।

এর আগে টানা সাত দিন ধরে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে প্রশাসনিক সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, থানায় স্থানীয় প্রশাসন, বড় দুটি সমিতির মালিকপক্ষের লোকজন ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। আলোচনায় আগামী সাত দিনের মধ্যে বড় বড় সমিতির মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন। পরে সাত দিনের জন্য কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আমানতের অর্থ উদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। আমরাও তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। আলোচনায় টাকা উদ্ধারে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রশাসন আমাদের জানিয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে বড় বড় সমিতি থেকে টাকা উদ্ধারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তাঁদের কথায় আমরাও আশ্বস্ত হই। তবে আগামী সাত দিনের মধ্যে টাকা উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি দেখাতে না পারলে, আবারও ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ বলেন, ‘আলোচনায় টাকা উদ্ধারের কিছু অগ্রগতি আন্দোলনকারীদের দেখানো হয়েছে। এতে তাঁরা সন্তুষ্ট। ইতিমধ্যে বড় দুটি সমিতির মালিকপক্ষ গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং দুটি সমিতির কেনা অনেক জমির দলিল দিয়েছেন। ওইসব জমি বিক্রি করে গ্রাহকদের মধ্যে টাকা দেওয়া হবে। চেষ্টা করব, সাত দিনের মধ্যে যাতে টাকা উদ্ধারে আরও অগ্রগতি বাড়ে।’

১১ নভেম্বর থেকে ‘মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতিতে আমানতকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য সহায়ক কমিটি’র ব্যানারে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হচ্ছিল। এতে ভুক্তভোগীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও অংশ নেন। এক বছর ধরে এই ব্যানারে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল, মশালমিছিল, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও একাধিকবার উপজেলা পরিষদ ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কিন্তু কোনো গ্রাহকই টাকা ফেরত পাননি।

জেলা সমবায় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকের ৭৩০ কোটি টাকা সমবায় সমিতিগুলোয় ছিল। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দাবি, ২৩টি সমিতির মধ্যে আল–আকাবা, শতদল, স্বদেশ, নবদীপ, হলিটার্গেট ও রংধনু অন্যতম। ছয়টি সমিতির কাছে জমা আছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি। শুধু মাদারগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি হিসাব করে দেখা গেছে, প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা সমিতিগুলোয় আছে। এ ছাড়া ইসলামপুর, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী ও জামালপুর সদরে কয়েক হাজার গ্রাহক আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ