শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের মুনাফা সাড়ে ৫ শতাংশ বা প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা কমে গেছে। গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৬৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটি আজ রোববার শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মুনাফার এই তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে তা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। তাতে মুনাফার এই তথ্য পাওয়া যায়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ৬৪ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। তাতে একজন শেয়ারধারী একটি শেয়ারের বিপরীতে ৬ টাকা ৪০ পয়সা করে লভ্যাংশ পাবেন। বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে অনুমোদনের পর এই লভ্যাংশ শেয়ারধারীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেওয়া কোম্পানিটির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে তা রেকর্ড। ডিএসইতে ২০০৯ সাল থেকে কোম্পানিটির লভ্যাংশের তথ্য রয়েছে। তাতে দেখা যায়, এবারই কোম্পানিটি সর্বোচ্চ ৬৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর আগে সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ৬৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি যে লভ্যাংশের প্রস্তাব করেছে, তাতে এ বাবদ ব্যয় হবে প্রায় ২০ কোটি টাকা, যা কোম্পানিটির গত অর্থবছরের মোট মুনাফার প্রায় এক–তৃতীয়াংশ। যার মধ্যে বড় অংশই পাবেন কোম্পানিটির উদ্যোক্তা–পরিচালকেরা। কারণ, এটির শেয়ারের প্রায় ৪৫ শতাংশই রয়েছে তাঁদের হাতে। তাই ঘোষিত লভ্যাংশবাবদ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা–পরিচালকেরা পাবেন প্রায় ৯ কোটি টাকা। বাকি শেয়ারের মধ্যে ব্যক্তি শ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ শেয়ার। সেই হিসাবে ব্যক্তি শ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ঘোষিত লভ্যাংশবাবদ পাবেন প্রায় ৬ কোটি টাকা। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ শেয়ার। তাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশবাবদ পাবেন প্রায় ৫ কোটি টাকা।

এদিকে রেকর্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও মুনাফা কমে যাওয়ায় আজ শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে। রোববার লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় এটির প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ২ টাকার বেশি কমে ৩০৫ টাকায় নেমে আসে। এ সময়ে কোম্পানিটির ১৭ হাজার শেয়ারের হাতবদল হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

চার মাসে শুল্ক–কর আদায়ে ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

শুল্ক-কর আদায় প্রতিবারের মতো এবারও পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআরের হিসাব অনুসারে, গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ১৭ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের হালনাগাদ চিত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি অর্থবছর এনবিআরকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ১৫ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে (জুলাই-অক্টোবর) ১ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি হয়েছে আয়কর খাতে। চার মাসে ঘাটতি হয় ৯ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। এই খাতে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয়েছে ৩৭ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা।

আমদানি খাতে চার মাসে ৪১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকার লক্ষ্যের বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ৬ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।

গত জুলাই-অক্টোবরে ভ্যাট বা মূসক আদায়েও লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এই খাতের লক্ষ্য ছিল ৪৮ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। ভ্যাট আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। এ সময়ে এই খাতে ঘাটতি ১ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা।

এনবিআরের কর্মকর্তা বলছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতি থাকায় রাজস্ব আদায় তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে বছরের শেষ দিকে রাজস্ব আদায়ে গতি বাড়বে বলে মনে করেন তাঁরা। তারা বলেন, করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন নিশ্চিতকরণ, কর ফাঁকি প্রতিরোধ এবং ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার করার কাজ করছে এনবিআর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার মাসে শুল্ক–কর আদায়ে ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা