চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচনের বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন বোর্ড। আজ রোববার এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে মোট ৬৩ জন বৈধ প্রার্থী হয়েছেন। তার মধ্যে সাধারণ শ্রেণিতে ৪১ জন, সহযোগী শ্রেণিতে ১৬ জন, টাউন অ্যাসোসিয়েশনে ৩ জন এবং ট্রেড গ্রুপে ৩ জনের প্রার্থিতা বৈধ হয়েছে। যদিও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন মোট ৭১ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্য থেকে ঋণখেলাপিসহ নানা বিবেচনায় বাদ পড়েছেন ৮ জন প্রার্থী।

এদিকে বৈধ তালিকা প্রকাশের পর এবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্যানেল বা দল গোছাতে শুরু করেছেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে ঋণ খেলাপের কারণে এক দলনেতা বাদ পড়ায় আলোচনায় আছে দুটি প্যানেল। চলতি সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা হতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সহকারী সচিব মোহাম্মদ তারেক জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক বাছাইয়ে ৩৫ জন প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকে ২৭ জন রিভিউর জন্য আবেদন করলে চূড়ান্তভাবে তাঁরা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, আগামী বুধবার বেলা একটা পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। একই দিন বেলা ৩টায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

এক দলনেতাসহ ৮ জন বাদ

এবারের নির্বাচনে দলনেতা হিসেবে আলোচনায় ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার ও দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক, পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সহসভাপতি এস এম নুরুল হক এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সভাপতি আমজাদ হোসেন চৌধুরী। আজ প্রকাশ হওয়া বৈধ প্রার্থীর তালিকায় আমজাদ হোসেন চৌধুরীর নাম নেই। এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশ হওয়া প্রাথমিক তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল না।

নির্বাচন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঋণ খেলাপের জন্য ও পুলিশের ছাড়পত্রের মূল সনদ না থাকায় তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে আমজাদ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ ছাড়া বৈধ তালিকা থেকে বাদ পড়া অন্য সাত প্রার্থী হলেন নেমসান কন্টেইনারের প্রতিনিধি শাহ নেওয়াজ মো.

আলী চৌধুরী, নিয়ালকো অ্যালয়সের প্রতিনিধি গাজী মোকাররম আলী চৌধুরী, অ্যাকর্ড হোল্ডিংসের প্রতিনিধি শাহজাহান মো. মহিউদ্দিন, মিল্টন ডেকোরেটরসের সিয়াজদুল আলম চৌধুরী, গ্রিন ওয়ার্ল্ড ইমপেক্সের মাহবুব রানা, ইমপালস ট্রেডিংয়ের মো. সেলিম উল্লাহ এবং জেডএআর ট্রেডের মো. জাহিদুল হাসান।

প্যানেলে ‘গোছাতে’ মনোযোগ

নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার এস এম নুরুল হকের প্যানেল থেকে ১৮ পদের বিপরীতে ২৩ জন এবং আমিরুল হকের প্যানেল থেকে ৩৬ জন মনোনয়ন জমা দেন। বৈধ তালিকায় আমিরুল হকের প্যানেল থেকে কেউ বাদ যাননি। তবে নুরুল হকের প্যানেল থেকে একজন বাদ পড়েছেন বলে জানা গেছে।

প্যানেল ঘোষণা নিয়ে কথা হয় দুই প্যানেল দলনেতা এস এম নুরুল হক ও আমিরুল হকের সঙ্গে। দুজনই জানিয়েছেন আগ্রহী প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা পর চলতি সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকবাবে প্যানেল ঘোষণা করা হতে পারে।

আনুষ্ঠানিকভাবে প্যানেল ঘোষণা না হলেও আমিরুল হকের অঘোষিত প্যানেল থেকে আগ্রহী বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পিএইচপি মোটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখতার পারভেজ, মেরিডিয়ান ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম কামাল, আটলান্টিক ট্রেডার্সের কর্ণধার শওকত আলী, ওয়াইএনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তওসিফ আহমেদ, ইস্টার্ন অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।

অন্যদিকে এস এম নুরুল হকের প্যানেলে চট্টগ্রামের পরিচিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ টি এম রেজাউল করিম, শাহ আমানত করপোরেশনের কর্ণধার আহমদুল আলম চৌধুরী, ডায়মন্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজুল হক, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আহমদ রশিদ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল হক র প য ন ল থ ক প রক শ দলন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত: আলী রীয়াজ

জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং গণভোট অনুষ্ঠানের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান–সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চতুর্থ দিনের আলোচনার শেষে এ কথা বলেন আলী রীয়াজ।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। আমরা এটিকে বাস্তবায়নপ্রক্রিয়ার প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।’

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, এর আগে ১১, ১৪ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তিনটি বৈঠকের পর দলগুলোর পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার জন্য কিছু সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় শেষে আজকের বৈঠকে এসে গণভোট ও সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে।

সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত নতুন আইনসভার কাঠামো সম্পর্কেও কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে। আলী রীয়াজ বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে যে আইনসভা গঠিত হবে, সেটিকে এমন বৈশিষ্ট্য দিতে হবে, যাতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংশোধনগুলো সহজে সম্পন্ন করা যায়। এ বিষয়েও কার্যত রাজনৈতিক দলগুলো একমত।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি জানান, আগে দলগুলোর একাংশ সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার কথা বললেও বর্তমানে অধিকাংশ দলই মনে করছে, এর আর প্রয়োজন না–ও হতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর ‘সহনশীলতা’ ও ‘অবস্থান পরিবর্তনের সাহসিকতা’কে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘তারা দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এটা বড় ধরনের অগ্রগতি।’

অগ্রগতির দিকটি সকালেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টা দ্রুততার সঙ্গে সুপারিশ চূড়ান্ত করার তাগিদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আজ রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ৭১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি গঠন
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত: আলী রীয়াজ
  • সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল কবির ঢাকায় গ্রেপ্তার
  • ঐকমত্য না হলে সনদ বাস্তবায়নে একাধিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রস্তাব দেবে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • শিগগির সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে ঐকমত্য কমিশন
  • নেত্রকোনায় জামায়াতের সাধারণ সভায় হামলার অভিযোগ, আহত ৩
  • ‘পাহাড়ের মানুষ এখন আতঙ্কে বসবাস করছে’