মৎস্য অফিসে কর্মরত ছেলে ও আ.লীগ নেতার ইলিশ শিকার
Published: 6th, October 2025 GMT
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরগুনার তালতলী উপজেলা মৎস্য অফিসের মাঠ সহায়ক আবুল কাসেম রিঙ্কু ও তার বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জলিল ফকিরের বিরুদ্ধে সমুদ্রে ইলিশ মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে।
সমুদ্র থেকে শিকার করা বেশ কয়েক মণ ইলিশ মাছ রিঙ্কুর নেতৃত্বে সরিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আটক করে। ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য মা ইলিশ রক্ষায় গত ৪ অক্টোরব থেকে দেশের নদী-সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এ সময়ে ইলিশ ধরা, পরিবহন, কেনাবেচা বন্ধ থাকবে।
আরো পড়ুন:
মা ইলিশ রক্ষায় বরিশালে অভিযান শুরু
মা ইলিশ রক্ষায় বিমান বাহিনী ড্রোন দিয়ে কাজ করবে: উপদেষ্টা
রবিবার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশগুলো আটক করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার সোনাকাটা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাসেম রিঙ্কু ও তার বাবা জলিল ফকিরের দুটি ট্রলার সরকারি নির্শেনা অমান্য করে নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগের দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রে যায়।
স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা জলিল ফকির ও তার ছেলে রিঙ্কু সাগরে ইলিশ মাছ শিকার করেছেন।
রবিবার (৫ অক্টোবর) গভীর রাতে ইলিশ মাছ নিয়ে ওই ট্রলার দুটি ফকিরহাট ঘাটে আসে। পরে ট্রলারের লোকজন ইলিশ মাছ ড্রামে ও বস্তায় ভরে রিঙ্কুর মৎস্য আড়তে রাখে। স্থানীয় জেলে আমির হোসেন ও রুবেল আড়তে বস্তায় ভরে রাখা ইলিশ আটক করে। তখন তারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাননি। রাতে আড়ত থেকে ম্যানেজার আল আমিন, জলিল ফকির ও রিঙ্কু মাছ সরিয়ে ফেলে।
জেলে আমির হোসেন ও রুবেল বলেন, ‘‘ট্রলারের শব্দ পেয়ে মৎস্য ঘাটে এসে দেখি রিঙ্কু ও তার বাবার দুটি ট্রলারে অনেক ইলিশ মাছ। ট্রলারের জেলেরা ওই মাছ বস্তা ও ড্রামে ভরে রিঙ্কুর আড়তে নেয়। আমরা এর প্রতিবাদ করি। ওই মাছ রাতে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।’’
রিঙ্কুর আড়তের ম্যানেজার আল আমিন বলেন, ‘‘এই মাছ অনেক আগের। রাতে আড়ৎ থেকে মাছ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’’
অভিযোগের বিষয়ে রিঙ্কু বলেন, ‘‘আমার বাবার ইলিশ মাছের ব্যবসা আছে। রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করতে আমাকে জড়ানো হয়েছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’’
তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন, ‘‘আমি নদীতে টহলে ছিলাম। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে শুনেছি, আমার অফিসের মাঠ সহায়ক আবু কাসেম রিঙ্কু ও তার বাবার দুটি ট্রলার সাগর থেকে ইলিশ মাছ শিকার করে ঘাটে এসেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার অফিসের কেউ অনিয়ম করলে আমি এর দায়ভার নেব না। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/ইমরান/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মৎস য ত লতল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু উপদেষ্টার চরিত্রের শেষ দেখতে চান সারজিস
‘‘উপদেষ্টাদের অনেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছেন’’— জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম যাদের ব্যাপারে এমন মন্তব্য করেছেন, তাদের শেষটা দেখতে চান দলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। সারজিস বলেন, ‘‘তাদের সম্পর্কে আমাদের আহ্বায়ক বলেছেন। আমরা তাদের চরিত্রের শেষটা দেখতে চাই। কারণ বিপ্লবটাকে ধারণ করে তাদের যেভাবে একেকটা সংস্কার করার কথা ছিল, যেভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল, যে অপকর্মের বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, সেগুলো যখন আবার সামনে আসে, তখন এর দায় তাদের নিতে হবে। তাদের জায়গা থেকে যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিচার, রাজনীতি, আমলাতন্ত্র, সব জায়গায় ভূমিকা পেতাম, তাহলে এই অবস্থাটা দেখতে হতো না।’’
আরো পড়ুন:
শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করব, অন্য অপশন নেই: সারজিস
শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া ছাড়া প্রত্যাশিত আচরণ পাবে না ভারত: সারজিস
সারজিস আলম বলেন, ‘‘সবচেয়ে সমস্যা হয়েছে গোড়ায়। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সিভিল সার্ভিস থেকে শুরু করে প্রশাসন, পুলিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাহিনীতে যদি এক হাজারও কালপিট থেকে থাকে, যারা দলীয় বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে, তাদের বিচার হলে এ অবস্থা দেখা লাগত না। তারা (উপদেষ্টারা) ফেইল করেছেন ওই আগস্ট-সেপ্টেম্বরে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যারা উপদেষ্টারা আছেন, তারা হয়ত ভাবছেন এখন আবার কঠোর হয়ে সিদ্ধান্তটা নেওয়া দরকার, সেটা সম্ভব নয়। এ জন্য তারা কীভাবে একটা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে স্বসম্মানে যেতে পারেন, সেটা হয়ত ভাবছেন। কিন্তু ওই চিন্তা যেন তারা না করেন। এতবড় অভ্যুত্থানের পর তারা যদি এভাবে চলে যেতে চান, তাহলে তারা আর বাংলাদেশের মানুষের কাছে আশ্রয় পাবেন না। এভাবে চুপিচুপি দায়সারা চলে যাওয়ার চেয়ে, দেশের মানুষের জন্য কিছু করে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াটাও সম্মানের। আমরা অনুরোধ করব, তারা যেন অভ্যুত্থানটা ধারণ করে তাদের দায়িত্বটা ঠিকমত পালন করেন।’’
এর আগে সারজিস আলম জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা ও মহানগর কমিটির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরুতে তিনি জেলার নেতাদের সঙ্গে দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর দলীয় কার্যক্রম, আগামী দিনের রাজনীতি, সংকট-সম্ভাবনা নিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর মহানগর কমিটির নেতাদের সঙ্গে সভা করেন।
সভায় এনসিপির রাজশাহীর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল