মৌসুমি বায়ু এখন যাই যাই করছে। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি বৃষ্টি ঝরানো এ বায়ু পুরোপুরি চলে যায়। ধীরে ধীরে শীত আসতে শুরু করে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। তাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বৃষ্টি হয়। বেশি বৃষ্টি হয় দেশের উত্তর জনপদের জেলাগুলোতে। তবে আজ মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বৃষ্টি কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র। তারা জানিয়েছে, আজ দুপুরের দিকে রাজধানীতে বৃষ্টি হতে পারে। দেশের, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি একটু বাড়তে পারে।

আজ সকাল থেকে রাজধানীর আকাশ তেমন মেঘলা ছিল না। তবে সকাল পৌনে নয়টার দিকে মেঘ বেড়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে রাজধানীতে কিছুটা বৃষ্টি হতে পারে। আবার সন্ধ্যার পরও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।

আজ মূলত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন শাহানাজ সুলতানা। তিনি বলেন, উপকূলীয় খুলনা বিভাগের কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। তবে উত্তরাঞ্চলে আজ বৃষ্টি কমে আসবে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, ১৩৬ মিলিমিটার। চলতি মাসের শুরু থেকেই সাগরের লঘুচাপটি ধীরে ধীরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশায় অবস্থান নেয়। আর এর প্রভাবে বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টি হয়। গতকাল উত্তরের রংপুর বিভাগে বেশি বৃষ্টি হলেও রাজশাহীতে বৃষ্টি কমে আসে।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। তবে খুব ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। এরপর বৃষ্টি অনেকটাই কমে আসবে। মাসের মাঝামাঝি সময়ের পর আবার একটি লঘুচাপের সম্ভাবনা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্পে আবাসিক হলের দেয়ালে নতুন করে ফাটল, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ভূমিকম্পে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের দেয়ালে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরে নিরাপত্তা চেয়ে ও হল পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হলের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তাঁরা হলটি পরিদর্শন করেন। এ সময় রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান, এজিএস এস এম সালমান সাব্বিরসহ ছাত্র সংসদের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিও হল পরিদর্শনে যান।

হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসিক হলটি অনেক পুরোনো। বিভিন্ন জায়গায় ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছিল। আজকের ভূমিকম্পের পর হলের পশ্চিম ব্লকের একাংশ হেলে পড়েছে বলে তাঁদের দাবি। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অজুহাত দেখাচ্ছে। তাঁরা দ্রুত অন্য হলে পুনর্বাসনের দাবি জানান।

শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী খালিদ আল হাসান বলেন, ‘ঘুম থেকে ওঠার পরই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরপর দেখি হলের পশ্চিম ব্লকের একাংশ হেলে পড়েছে। আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের কথাবার্তা ছিল হতাশাজনক। তারা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বোঝাচ্ছে। আমাদের জীবনের মূল্যের চেয়ে কী আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বড়? আমরা যে ৩০০ ছাত্র এখানে আছি, কোথায় যাব?’

আবাসিক শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন বলেন, ‘১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলটি কাঠামোগতভাবেই দুর্বল। এখানে কোনো আরসিসি কলাম নেই, ইটের পিলারের ওপর ছাদ। ভূমিকম্পের সময় মনে হচ্ছিল ছাদ ভেঙে পড়বে। বিভিন্ন রুমের পলেস্তারা খসে পড়ছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমাদের কথা ভেবে রাতেই যেন নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়।’

ভূমিকম্পের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানকে নিয়ে হল পরিদর্শনে যান সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বেও উপাচার্য মহোদয়সহ আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং টিম নিয়ে এই হল পরিদর্শন করেছিলাম। তখনই মনে হয়েছিল, বিল্ডিংটা একটু হেলে গেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। আজকের ভূমিকম্পের পর অবস্থা আরও খারাপ মনে হচ্ছে। বিষয়টি গভীর এবং সহজ নয়। আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং টিমকে টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্টের দায়িত্ব দিয়েছি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।শুক্রবার দুপুরে

সম্পর্কিত নিবন্ধ