মাদারীপুরে বিএনপির দুই নেতার সমর্থকদের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা
Published: 7th, October 2025 GMT
মাদারীপুরের কালকিনিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দুই শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার মধ্যরাতে দুই পক্ষের অনুসারীরা কালকিনি থানায় আলাদা দুটি মামলা করেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মাদারীপুর-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর (অব.
কালকিনি থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও দুই পক্ষ পুলিশের উপস্থিতিতে দুই দফা সংঘর্ষে জড়ান। এই সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় মামলা করেছে। রেজাউল করিমের পক্ষে মামলা করেছেন তাঁর অনুসারী আবু জাফর ব্যাপারী। এ মামলায় ৯ জনকে এজাহারভুক্তসহ ৩০ থেকে ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে আনিসুর রহমান তালুকদারের অনুসারী মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ১৫ জনকে এজাহারভুক্ত ও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ মামলা দুটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন স র ব এনপ র ক লক ন স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আলোচিত বিএনপি নেতা ফজলুরের আসনে প্রার্থী হতে চান আরেক ফজলুর
পদ স্থগিত হওয়া আলোচিত বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের নির্বাচনী আসনে (কিশোরগঞ্জ-৪) দলের মনোনয়ন চান আরেক ফজলুর রহমান। শনিবার দুপুরে জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে মো. ফজলুর রহমান শিকদার এ ঘোষণা দেন।
ফজলুর রহমান শিকদার জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও মিঠামইন উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাওর-অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন গঠিত। এ আসনে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদ সদস্য হন। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ (তৌফিক) আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ইমদাদুল হক, ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে ফরহাদ আহমেদ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে আবদুল লতিফ ভূঁইয়া সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
পদ স্থগিত হওয়া নেতা ফজলুর রহমান এ আসনে ১৯৯৬ সালে স্বতন্ত্র হিসেবে, ২০০১ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে এবং ২০০৮ ও ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমানের প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সব ধরনের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য নেতারা এত দিন নীরব থাকলেও তাঁর পদ স্থগিতের পর প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছেন। আসনটিতে বিএনপি থেকে প্রায় ১০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আজ সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ফজলুর রহমান শিকদার পদ স্থগিত ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। বিএনপির এই মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের কারণে তিনিসহ দলের অনেক ত্যাগী নেতা মূল্যায়ন পাননি। কার্যত তাঁদের নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা চাইলেও দলে ভূমিকা রাখতে পারেননি। এই আসনে (কিশোরগঞ্জ-৪) দলের অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় দলীয় অবস্থান শক্ত করতে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। পদ স্থগিত ফজলুর রহমানের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফজলুর রহমান বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। এরপর একসময় যাঁরা বিএনপির দুর্দিনে দলকে ধরে রেখেছিলেন, তাঁদের অনেককে কোণঠাসা করে দেন তিনি। এমনকি তাঁর পছন্দ না হওয়ায় অনেককে জেলা বিএনপির কোনো পদ-পদবিতে রাখা হয়নি। তিনি স্বৈরতান্ত্রিকভাবে দল চালিয়েছেন।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘ফজলুর রহমান বিএনপিতে যোগদানের পর আমাদের যে অপমান-তিরস্কার করা হয়েছে, সে জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা চাই, বিএনপির আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে ধারণ করে সর্বজনগৃহীত এমন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হোক, যাঁর দ্বারা হাওরবাসীর কল্যাণ হবে। এ ছাড়া আজ যিনি (ফজলুর রহমান শিকদার) প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন, তাঁকে স্বাগত জানাই।’
জানতে চাইলে পদ স্থগিত বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, যে কেউ প্রার্থিতা ঘোষণা করতে পারেন। এতে তাঁর কিছু যায় আসে না। তিনি তাঁর কাজ করে যাবেন।