ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যার বিচার এবং শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শাখা ছাত্রদল। এ সময় ইবি প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে তদন্তের অগ্রগতি দ্রুত জানাতে ১০ দিনের আলটিমেটাম দেয় সংগঠনটি।

মঙ্গলবারব (৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

আরো পড়ুন:

চাকসু: ছাত্রদলের জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

জিয়া উদ্যানের লেকে মাছের পোনা ছাড়ল ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, যুগ্ম-আহ্বায়ক আহসান হাবীব, আনারুল ইসলাম, আবু দাউদ, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ আহমেদ, নূর উদ্দিন, মিথুন হোসেন, স্বাক্ষর, উল্লাস মাহমুদ, সাইফুল্লাহ মামুন, তৌহিদ, রিফাত প্রমুখ।

এ সময় তাদের ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘আমি কে তুমি কে, সাজিদ সাজি’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাজিদ হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাস ছাত্রদলের অঙ্গীকার। আমরা সবাই একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার জন্য ছাত্রদল সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা জানতে চাই, কেন? প্রশাসন কেন খুনিদের এখনো ধরতে পারছে না।

তারা বলেন, প্রশাসন কোনোভাবেই সেদিকে যাচ্ছে না, এদিক ওদিক করে কাটাচ্ছে। এই প্রশাসন আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যদি আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করা না হয়, তাহলে ছাত্রদল রাজপথে ছিল, রাজপথে আছে, রাজপথে থাকবে।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “সাজিদ হত্যার ৮০ দিন হয়ে গেল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত কয়েক সপ্তাহ আগে এই হত্যা মামলার তদন্তভার দিয়েছে সিআইডির কাছে। আমি বিশ্বাস করি সিআইডি যত দ্রুত সম্ভব কাজ করছে। এই তদন্ত কাজ কতদূর আগালো, সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে আমাদের দ্রুত জানাতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা আগামী ১০ দিন সময় দিচ্ছি। ১০ দিন পরে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। সাজিদের খুনীদের যতদিন পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”

তিনি আরো বলেন, “শিক্ষক নিয়োগের বোর্ডে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব জায়গা ফ্যাসিজম কায়েম করতে চায়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অতিদ্রুত যেন শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বাদ দেওয়া হয়।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় নিশ্চিত করল ডিনেট

মৌলভীবাজারের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সুশাসন ও সরকারি সেবার মান নিশ্চিতে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) একটি পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিনেটের (Dnet) উদ্যোগে এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্থানীয় হোটেল রেস্ট ইনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ সভার লক্ষ্য হলো—প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন, চাহিদা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন এবং সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য মূল সরকারি বিভাগ ও স্থানীয় অংশীদারদের সহযোগিতামূলক সমর্থন নিশ্চিত করা।

সভায় বিশেষ অতিথি এবং প্যানেল আলোচনা অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মামুনুর রশীদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা)। তিনি বলেছেন, “মৌলভীবাজারে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। প্রথমত, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন, যা নিশ্চিত করবে যেন জনগণের বিকল্প কোনো পথের প্রয়োজন না হয়। দ্বিতীয়ত, চা শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া।” 

২৭ মাসব্যাপী ‘নাগরিক সমন্বয়’ প্রকল্পটি সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার (জিএসি) আর্থিক সহায়তায় সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের (নাগরিকতা) অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। ডিনেট চারটি স্থানীয় সহযোগী সংস্থার সঙ্গে অংশীদারত্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সংস্থাগুলো হলো—কমলগঞ্জে জনকল্যাণ কেন্দ্র (জে কে কে), শ্রীমঙ্গলে প্রগতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (পিএসইউএস), কুলাউড়ায় নিঃস্ব সহায়ক সংস্থা (এনএসএস) এবং বড়লেখায় প্রচেষ্টা।

প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো—মৌলভীবাজারের চার উপজেলা—বড়লেখা, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, যুব ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য ক্লাইমেট জাস্টিস এবং সরকারি সেবার সমতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

সভার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—প্রকল্পের চাহিদা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করা। এই গবেষণামূলক তথ্য স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি সেবার ঘাটতি এবং নাগরিক অংশগ্রহণের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্ণিত করেছে, যা সবার মধ্যে একটি অভিন্ন বোঝাপড়া তৈরি করবে এবং প্রকল্পের অ্যাডভোকেসি কৌশল নির্ধারণে মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

সভায় উপস্থাপিত মূল গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজার জেলায় অর্থনৈতিক বৈষম্য বেশ প্রকট। চা শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ৩৬ শতাংশ এখনো মারাত্মকভাবে অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পেতেও নাগরিকদের জটিলতা পোহাতে হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫৩ শতাংশ নারী জানিয়েছেন যে, ভাতা পেতে তাদের ঘুষ (১০০ থেকে ৩০০ টাকা) দিতে হয়েছে। জলবায়ুগত ঝুঁকির ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের মতো উপজেলাগুলোতে ৬৪ শতাংশ নারী বন্যা ও ভূমিধসের মতো জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে তাদের আয়ের প্রধান উৎস হারিয়েছেন।

ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদ হাসান বলেছেন, “আগামী দুই বছরে আমাদের লক্ষ্য—মৌলভীবাজারে এমন কিছু সাফল্যের গল্প তৈরি করা, যা এই প্রকল্পের পরবর্তী ধাপের যাত্রাকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে।”

নাগরিকতা ফান্ডের প্রতিনিধি ও জিএফএ কনসাল্টিং গ্রুপের লিড এক্সপার্ট– সিএসও সক্ষমতা উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কর্মকর্তা জনাব নুরুল ইসলাম বলেছেন, “নাগরিকতা কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য— ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৬ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছানো। তাই, আমরা চেষ্টা করছি এই কর্মসূচি ভৌগোলিক ও জনমিতিকভাবে সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে।” 

নাগরিক সমন্বয়ের প্রকল্প পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময় সভা পরিচালনা করেন।

ঢাকা/আজিজ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ