শিক্ষা ক্যাডারে বদলি ও পদায়নে ১২ নির্দেশনা
Published: 8th, October 2025 GMT
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নে আবেদন করতে হয় অনলাইনে। এ আবেদনসংক্রান্ত ১২টি সংশোধিত নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। নিয়ম অনুযায়ী একবারে একজন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা যাবে। তবে একজন ক্যাডার তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার আবেদনের সুযোগ পাবেন না। গত সোমবার (৬ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের নিমিত্তে ‘সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি বা পদায়ন নীতিমালা-২০২০’ সংশোধনপূর্বক ‘সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি বা পদায়ন নীতিমালা ২০২৫’ গত ৩০ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। সে লক্ষ্যে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের বদলি বা পদায়ন সহজতর করার লক্ষ্যে ১২টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৬: বাংলাসহ তিন বিষয়ের প্রশ্ন কাঠামোয় এল পরিবর্তন০৫ অক্টোবর ২০২৫নির্দেশনাগুলো হলো—
১.
২. সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি বা পদায়ন নীতিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত সব পদের বদলি বা পদায়নক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত থাকবে;
৩. বদলিভিত্তিক পদায়নের আবেদনপত্র অধ্যক্ষ বা প্রতিষ্ঠানপ্রধান অগ্রায়ণ করবেন এবং কোনো আবেদন পেন্ডিং রাখা যাবে না।
৪. অনলাইন ব্যতীত অন্য কোনো উপায়ে পাঠানো বা উপস্থাপন করা আবেদন বিবেচনা করা হবে না।
৫. সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দাখিল করা আবেদন অধ্যক্ষ কর্তৃক অগ্রায়ণের পর মন্ত্রণালয় বা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত নিয়মে ১৫ দিন অন্তর মূল্যায়ন করবেন এবং বিচেনার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বরাবর পেশ করা হবে;
৬. কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা একবার আবেদন করলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আর আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন না।
৭. একজন আবেদনকারী তাঁর পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সুযোগ পাবেন। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মঞ্জুর করা আবেদনগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে ওয়েবসাইটে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বদলিভিত্তিক পদায়ন আদেশ জারি করবে।
৮. নন-ক্যাডার কর্মকর্তা কোনো ক্যাডার পদে বদলিভিত্তিক পদায়নের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
৯. বর্ণিত নীতিমালা বাস্তবায়নের নিমিত্তে জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক আদেশে সারা দেশে কলেজগুলো থেকে প্রয়োজনীয় পদ শূন্যকরণের ব্যবস্থা করবে।
১০. বর্ণিত প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো কর্মকর্তার বিভিন্ন মাধ্যমে রাজনৈতিক তদবির বা চাপ সৃষ্টি ও আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) উপস্থাপন অসদচারণ বলে গণ্য হবে।
১১. অসম্পূর্ণ এবং হালনাগাদ না করা পিডিএসগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং
১২. বদলিসংক্রান্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
আরও পড়ুনসুইজারল্যান্ডে মাস্টার্স : ইউনিভার্সিটি অব লুসানে স্কলারশিপের আবেদন শুরু৩ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদ য ন ন ত ম ল কর মকর ত পদ য ন র দ র বদল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘শিশুর জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, “তোমাদের মতো আমারো একটি স্বপ্ন আছে, একদিন এই দেশটি হবে শিশুদের জন্য। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ পরিচালনার নেতৃত্ব দেবে।”
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ২০২৫ ও শিশু অধিকার সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
সুন্দর সমাজ গঠনে মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ গড়ে তুলতে হবে: ডা. বিধান রঞ্জন
শিশু তায়েবা হত্যার বিচার দাবিতে আদালত চত্বরে মানববন্ধন
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “বিশ্ব শিশু দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর কথা শুনব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ’। এই স্লোগানকে সামনে রেখে এমন একটি দেশ গড়তে চাই, যেখানে সবাই বলবে এই দেশটি শিশুদের জন্য।”
তিনি বলেন, “একটি সুন্দর দেশ গড়ার জন্য আজ আমরা যে সংগ্রাম করছি এবং তোমরা যারা গত বছরের জুলাই-গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছ, তা এক বিশাল বীরত্বগাথা। এতে প্রমাণিত হয় তোমরাই এখন দেশের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছো।”
তিনি আরো বলেন, “যারা বছরের পর বছর দেশ শাসন করেছে, অন্যায়-দুর্নীতিতে জড়িয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে তোমরা আঙুল তুলে দেখিয়ে দিয়েছো এই দেশ অন্যায় মেনে নেবে না। সত্যি বলতে, জুলাই আন্দোলন না হলে আমরা বুঝতেই পারতাম না আমাদের কোমলমতি শিশুরা এই দেশটাকে এত ভালোবাসে।”
উপদেষ্টা বলেন, “আজকের শিশুরা একেকজন অকুতোভয় বীর সৈনিক, যারা অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করে মাথা উঁচু করে বাঁচতে জানে, লড়তে জানে। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আমরা একত্রিত হয়েছি একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে। তা হলো- শিশুদের মুখে হাসি, স্বপ্নের অনুপ্রেরণা, জীবনের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “১৯৫৪ সালে জাতিসংঘের ইউনিসেফ প্রথম বিশ্ব শিশু দিবস চালু করে শিশুদের কল্যাণ ও অধিকার সুরক্ষার জন্য। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদশিশুর চারটি মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করে। বেঁচে থাকার অধিকার, বিকাশের অধিকার, সুরক্ষার অধিকার ও অংশগ্রহণের অধিকার। যদিও বাংলাদেশ এসব অধিকারকে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, বাস্তবতার নিরিখে এখনো অনেকখানিই পিছিয়ে আছি। আমরা সেই ব্যবধান দূর করতে কাজ করছি।”
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার শিশুবান্ধব নীতিমালার বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশুভিত্তিক বিচার ব্যবস্থায় বিশেষ শিশু আদালত প্রতিষ্ঠা, ইউনিসেফ ও ইইউ এর সহায়তায় ১ হাজার ২০০ অতিরিক্ত সমাজকর্মী নিয়োগ, ২৪ নভেম্বর ২০২৪-এ চাইল্ড কেয়ার রোডম্যাপ চালুসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
“চলুন, আমরা সবাই মিলে এই প্রতিজ্ঞা করি শিশুরা নিরাপদে বেড়ে উঠুক, সুযোগ পাক, স্বপ্ন পূরণ হোক সেই দেশটিই আমরা গড়ব,” যোগ করেন উপদেষ্টা।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, ইউনিসেফ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এবং শিশু বক্তা রূপ সঞ্চারী চর্চা ও মো. সামিউল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) দিলারা বেগম।
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬২ জন শিশুর পরিবারকে সম্মাননা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
এর আগে, উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিউরো-ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আয়োজিত ‘বিশ্ব সেরিব্রাল পালসি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
সেখানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, সেরিব্রাল পালসি সম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী