জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এ মামলার ৫৪তম সাক্ষী মো. আলমগীরের জেরা শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত হলো। আগামী রোববার এ মামলায় যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।

এই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি আরও দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

বিচারপতি মো.

গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১–এ এই মামলার বিচার চলছে। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

সাক্ষী আলমগীর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক। জবানবন্দি দেওয়ার পর চার দিন তাঁকে জেরা করেন আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই জেরা শেষ হয়।

তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরায় আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, আলমগীর সঠিকভাবে তদন্ত করেননি। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর বলেন, এটি সত্য নয়।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিকেলে রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী আমির হোসেন ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, এ মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান খালাস পাবেন বলে মনে করেন। তিনি সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

আমির হোসেন আরও বলেন, তিনি মনে করেন, নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব প্রমাণ হাজির করা হয়েছে, সেগুলো ভুয়া। তবে ট্রাইব্যুনাল কী মনে করবেন, তা তিনি জানেন না।

এক প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন বলেন, সামনে আর প্রমাণ করার কিছু নেই। যুক্তিতর্কে বলতে পারবেন, তবে প্রমাণের জায়গা আর নেই। প্রমাণ করতে হলে তাঁকে ডিডব্লিউ (আসামিপক্ষের সাক্ষী হাজির) দিতে হবে। ডিডব্লিউ দেওয়ার কোনো সুযোগ তাঁর নেই।

আমির হোসেন বলেন, ‘এ কথাও সত্য, ডিডব্লিউ দিতে পারলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসত। উনারা (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান) থাকলেও অনেক কিছু বেরিয়ে আসত। উনারা নেই দেখে অনেক কিছু তিনি বের করতে পারছেন না।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ষ য গ রহণ আম র হ স ন তদন ত কর আলমগ র

এছাড়াও পড়ুন:

আলবেনিয়ায় আদালতের মধ্যেই বিচারককে গুলি করে হত্যা

আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানার আপিল আদালতে বিচার চলাকালীন এক ব্যক্তির গুলিতে এক বিচারক নিহত হয়েছেন। গুলিতে আরো দুজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দেশটিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। 

আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত হলে এমপি হওয়া যাবে না, প্রজ্ঞাপন জারি

নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার, ৬ জেলেকে জরিমানা

পুলিশ জানিয়েছে, আপিল আদালতের বিচারক অ্যাস্ট্রিট কালাজা একজন অভিযুক্তের মামলার শুনানি করছিলেন, তখন অভিযুক্ত হঠাৎ গুলি চালায়। পুলিশের এক বিবৃতি অনুসারে, ‘বিচারককে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পথেই তিনি মারা যান।’

মামলার বাদী এবং তার ছেলেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

পুলিশের মতে, ৩০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ব্যক্তি যিনি গুলি চালিয়েছিলেন, তাকে পালানোর চেষ্টা করার সময় গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম এলভিস শকাম্বি বলে জানিয়েছে। 

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মামলাটি সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের সাথে জড়িত। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে অভিযুক্ত ব্যক্তি আশঙ্কা করেছিলেন তিনি মামলাটি হেরে যাবেন, তাই তিনি বিচারকের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। তবে, কর্তৃপক্ষ এখনো সন্দেহভাজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি।

আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা বিচারক কালাজার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বলেছেন, “বিচারকের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক আগ্রাসনের জন্য নিঃসন্দেহে আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

তিনি দেশের আদালতের ভেতরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার জন্য কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন।

বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা সালি বেরিশা বলেছেন, বিচারক কালাজার হত্যাকাণ্ড ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একজন বিচারককে ‘তার কর্তব্য পালনের সময়’ হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, “আজ পুরো আলবেনীয় সমাজের জন্য একটি গভীর শোকের দিন।”

আদালত কক্ষে বিচারকদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র হামলার ঘটনা বিরল। এক দশক আগে, ইতালির মিলানের প্যালেস অব জাস্টিসের একজন বিচারককে দেউলিয়া মামলায় বিচারাধীন এক ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করেছিল।

বন্দুকধারী পালিয়ে যাওয়ার আগে একজন আইনজীবী এবং তার সহ-আসামিকেও হত্যা করেছিল, কিন্তু পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বিচারক কালাজা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনজীবী ছিলেন। ২০১৯ সালে তিরানার আপিল আদালতে নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি প্রথমে একটি জেলা আদালতে বিচারক ছিলেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহিদুলকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের
  • আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলেই নির্বাচনে অযোগ্য হবে
  • বন্দরে হোসিয়ারী শ্রমিক আলমগীর হত্যা মামলার মুল পরিকল্পনাকারিসহ গ্রেপ্তার ২
  • তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার বিশ্বকে আস্থা দিয়েছে, তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম: মির্জা ফখরুল
  • আলবেনিয়ায় আদালতের মধ্যেই বিচারককে গুলি করে হত্যা
  • সোনমকে গ্রেপ্তার নিয়ে মোদি সরকারকে নোটিশ দিলেন সুপ্রিম কোর্ট
  • ভারতের প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের দিকে জুতা ছুড়ে মারলেন আইনজীবী
  • চুয়াডাঙ্গা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিপলু মারা গেছে
  • বন্দরে হোসিয়ারী কর্মী ও শ্রমিকদল নেতা আলমগীর হত্যার ঘটনায় মামলা