ফতুল্লায় দু’পা বিচ্ছিন্ন নয়ন হত্যা মামলার ৭ আসামি গ্রেপ্তার, রিমান্ড মঞ্জুর
Published: 8th, October 2025 GMT
ফতুল্লায় ড্রামের ভেতর থেকে দু পা বিচ্ছিন্ন অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। মূলত আর্থিক ও পরকীয়া প্রেমের কারণেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলে জানায় পুলিশ।
সেই সাথে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ৭ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুৃর করেছে আদালত। বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুর মোহসিন সাতা আসামীর মধ্যে পাচঁজনকে চারদিন করে এবং দুই নারী আসামীকে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, নয়নের দ্বিতীয় স্ত্রী ও হত্যার পরিকল্পনাকারি সাবরিনা, পরকীয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল, সাবরিনা ও রাসেলের সহযোগি জুয়েল, চয়নম রোমান ওরফে মানিকের চারদিন করে এবং সাবরিনা আগের সংসারের দুই মেয়ে সুমাইয়া ও সানজিদা সুজার দৃুই করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
মঙ্গবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শিয়ারচর একটি মার্কেটে পেছনের নির্জন জায়গা থেকে চাঞ্চল্যকর মোঃ নয়ন (৪৯) হত্যা নামে এক ব্যক্তির দু’পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারেরে ৬ ঘন্টার ব্যবধানে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী সাবরিনা (৪০) তার দুই মেয়ে সুমাইয়া (২০),সানজিদা (১৮) ও পরকিয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল(৪৫) চয়ন (৪০) জুয়েল (২৮) নোমান ওরফে মানিক (২৮) সহ মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপর আসামী সামির পলাতক রয়েছে।
নিহত নয়ন ফতুল্লার ননন্দলালপুর এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে। পেশায় মাদক কারবারি নয়ন একটি মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। আড়াই বছর কারাভোগের পর গত ১৯ সেপ্টম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন তিনি।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুৃপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফ্রি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এসব তথ্য জানান। এদিকে নয়নের দ্বীতীয় স্ত্রী সাবরিনা দেখনো মতে মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে পিলকুনি সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পেছনের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে ব্যাগ থেকে বিচ্ছিন্ন পা দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, মাদক মামলায় সাজা প্রাপ্ত নয়ন মিয়া জেলে যাওয়ার পর সাবরিনা সাথে স্থানীয় যুবক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেলের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। জমিনে বের হয়ে স্ত্রী পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পেরে নয়ন সাবরিনাকে জিজ্ঞাসা করে ।
এতে তাদের দুজনের মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্ট হয় । তারই ধারাবাহিকতায় র্পূব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ অক্টোবর দুপুর সাড়ে বারোটার সময় ফতুল্লার পশ্চিম দেলপাড়া অকিল উদ্দিনের বাড়ির পঞ্চম তলায় দ্বিতীয় স্ত্রী সাবরিনার ভাড়া বাসায় পরকীয়া প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেলের কথাকাটাকাটি হয়।
এসময় সাবরিনা দুই মেয়ে সানজিদা সাজু , সুমাইয়া উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে সাবরিনা ও ঠোঙ্গা রাসেল মিলে ফ্লাটের একটি কক্ষে নয়নকে আটকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং ধারালো ছোড়া দিয়ে কুপিয়ে নিন্মাংশ জখম করে হত্যা নিশ্চিত করে।
পরে দিন ৬ অক্টোবর পরস্পরের সহযোগিতায় চয়ন, জুয়েল, নোমান, সুমাইয়া, সানজিদা, সামির সহ আরো দুই তিনজন মিলে হত্যাকান্ড ধামাপাচা দিতে হেক্সব্লেড দিয়ে দুই পা বিচ্ছিন্ন করে মৃত দেহ উপরের অংশ হাত রশি দিয়ে বেধে পলিথিন ও স্কচটেপ দিয়ে পেচিয়ে ড্রামে ভরে শিয়াচর একটি মার্কেটের পেছনে নির্জন জায়গায় ফেলে দেয়।
বিচ্ছিন্ন পা দুটি পিলকুনি প্রাইমারী স্কুলের পেছনে পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে দেয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক ভাবে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুস সালাম বাদি হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসনিম আক্তার, তারেক আল মেহেদী, হাসিনুর রহমান, ফতুল্লা থানার ওসি আনোয়ার হোসেসহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ হত য ক ন ড র স ল ওরফ উদ ধ র র কর ছ স বর ন পরক য়
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে পুলিশ সুপারের সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিময়
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে জেলা পুলিশ সুপারের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নিউজরুমে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, পিপিএম (বার) সাংবাদিকদের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতা, তথ্য বিনিময় এবং সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের অন্যতম প্রধান সমস্যা যানজট নিরসনে সমস্যার কারন চিহ্নিত করেছে পুলিশ। যানজট নিরসন করতে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সার্বিক দিক বিবেচনা করে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। মাদক, ছিনতাই,ডাকাতি, কিশোর গ্যাংয়ের রাহাজানি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড জিরো টলারেন্সে আনতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।পরিচ্ছন্ন শান্তিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলতে পুলিশ বদ্ধপরিকর। এ কাজে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন পুলিশ সুপার।
এসময় উপস্থিতি ছিলেনজেলাপুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাসমিন আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ইসরাত জাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোঃ সোহেল রানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মোঃ হাসিনুজ্জামান। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব যানজট নিরসনে জেলা পুলিশকে সবধরণের সহযোগিতা করার আশ^াস প্রদান করেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টির সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, কার্যকরী পরিষদ সদস্য একেএম মাহফুজুর রহমান, রফিকুল ইসলাম জীবন, আবদুস সালাম ও প্রণব কৃঞ্চ রায়।
মতবিনিময়ের সময় আরো উপস্থিত ছিলেননারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতিরুমন রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আশরাফ, সিনিয়র সদস্য সাইদুর রহমান, তমিজ উদ্দিন আহমদ, হাফিজুর রহমান মিন্টু, মাকসুদুর রহমান কামাল, সালাম জুবায়ের, রফিকুল ইসলাম রফিক, আমির হুসাইন স্মিথ, মো: শফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হাসান, জামাল উদ্দিন বারী, হাসান উল রাকিব, দিলীপ কুমার মন্ডল, মোশতাক আহমেদ শাওন, হাবিবুর রহমান শ্যামল, এমরান আলী সজীব, সাবিত আল হোসেন ও মো: সাইফুল ইসলাম সায়েম।
সভা শেষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে, পিপিএম (বার) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।