বাবলাগাছে বসে রয়েছে এক পাখি
হয়তো হরিয়াল অথবা বেনেবউ,
দেখছি দূর থেকে এখনই উড়ে যাবে
নিকটে যাই যত, ততই দূরে যায়
আমিও ঘুরে ঘুরে দেখছি জঙ্গল
কোথায় আছে জল, কোথায় নীরবতা
যখনই ফাঁদ পাতি, শিকারি চোখ রাখি
নিকাব খসে পড়ে, প্রবল লজ্জায়
দোভাষী হয়ে আছে সঙ্গে কবুতর
ভাষার বদলে সে, শিখেছে ছলাকলা
হয় না যোগাযোগ কখনো কারও সাথে
তবু এ হেমন্তে, কেন যে হই ফানা
গুহার মুখে বসে দেখছি ঘন রাত
সাজানো তাঁবু এক পাশেই পড়ে থাকে
হিমেল হাওয়া আসে সাপের দেহ ছুঁয়ে
কুয়াশা বুনে যায় অসীম শূন্যতা
কত কী মনে পড়ে, কত কী ভুলে যাই
কখনো হয়তোবা নিজের পরিচয়—
হয়তো বেনেবউ অথবা হরিয়াল,
আমার নাম ধরে তখনো ডেকে যায়.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর’
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এই ফুটবল কিংবদন্তির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর মৃত্যুর পর প্রথম আলোতে ছাপা হওয়া উৎপল শুভ্রর লেখাটি আবার প্রকাশ করা হলো।
‘বন্ধু’র সঙ্গে স্বর্গে ফুটবল খেলতে চেয়েছেন পেলে। ডিয়েগো ম্যারাডোনা কি সেই অপেক্ষায় থাকবেন? নাকি মৃত্যুর ওপারের রহস্যময় ওই জগতে এরই মধ্যে বল নিয়ে কারিকুরি শুরু করে দিয়েছেন?
কল্পচোখে যখনই দেখতে চাইছি, ম্যারাডোনা এখন কী করছেন, যে ছবিটি চোখে ভেসে উঠছে, তাতে হয় তাঁর আকাশমুখী মাথায় বল নাচছে, নয়তো বাঁ পায়ে। আহ্, জাদুকরি সেই বাঁ পা!
খেলা ছেড়েছেন সেই কবে! ছাড়ার পরও কত কিছুই না করেছেন! কথায়, কাজে, সম্ভবত তার চেয়েও বেশি অকাজে নিত্যদিনই তিনি খবর। ম্যারাডোনা কোথাও গেছেন আর কোনো ঝামেলা বাধাননি, কই, এমন তো মনেই পড়ছে না। তারপরও সবকিছু ছাপিয়ে সবার মনে অনপনেয় যে ছবিটা আঁকা, তা ফুটবল পায়ে ম্যারাডোনার।আশ্চর্যই বলতে হবে, যাঁরা তাঁকে খেলতে দেখেননি, এমনকি তাঁদের মনেও।
ফুটবল ইতিহাসে বিখ্যাত বাঁ পা বললে প্রথমেই মনে পড়বে ফেরেঙ্ক পুসকাসকে। ‘ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্স’ নামে অমর হয়ে থাকা পাঁচের দশকের সেই হাঙ্গেরি দলের প্রাণভোমরা। ‘দ্য গ্যালোপিং মেজর’-এর ৮৫ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৮৪ গোল এখনো বিস্ময় জাগায়, কিন্তু স্পর্শের দূরত্বে গিয়েও তাঁর বিশ্বকাপ হাতে নেওয়া হয়নি।
জাদুকরি বাঁ পায়ের আধুনিকতম সংস্করণ লিওনেল মেসিকেও পুড়িয়েছে একই দীর্ঘশ্বাস (পরের বিশ্বকাপেই অবশ্য দীর্ঘশ্বাসকে মাটি দিয়ে বিশ্বকাপ হাতে তুলেছেন মেসি)। ডিয়েগো ম্যারাডোনার বাঁ পা এখানেই একমেবাদ্বিতীয়ম হয়ে যায়। কোনো ফুটবলারকে যাচাইয়ের চূড়ান্ত যে কষ্টিপাথর বিশ্বকাপ, সেখানেই ম্যারাডোনা দেখা দিয়েছেন পরিপূর্ণ মহিমায়। এক অর্থে যেখানে তিনি পেলের চেয়েও এগিয়ে। সংখ্যায় অবশ্যই নয়, পেলের তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড কেউ ছুঁতে পারেননি, কোনো দিন কেউ পারবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে দেওয়ায়ও কোনো ঝুঁকি দেখি না। কিন্তু প্রায় একক কৃতিত্বে ট্রফি জিতে একটা বিশ্বকাপকে নিজের নামাঙ্কিত করে রাখার কীর্তিতে পেলেও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নন। এখানে ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনা হতে পারে শুধু ১৯৬২ বিশ্বকাপের গারিঞ্চার।
ম্যারাডোনা এখনো ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে। ছবিটি তাঁর মৃত্যুর পর নেপলসে তোলা