যুক্তরাজ্যে ভিসা জালিয়াতির শাস্তি ১০ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
Published: 25th, November 2025 GMT
ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য যদি কেউ ভিসা জালিয়াতি কিংবা অবৈধ পথ অবলম্বন করেন, তবে তাঁকে ১০ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাজ্য সরকার।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে যুক্তরাজ্যের ঢাকা হাইকমিশন থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাল ভিসার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য থেকে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বার্তায় সারাহ কুক বলেন, ভিসা জালিয়াতি সাধারণ মানুষের স্বপ্ন ধ্বংস করে। সেই সঙ্গে পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। অপরাধমূলক এ কাজে সহায়তাকারীরা মানুষের উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষাকে পুঁজি করেন, তাঁদের অর্থ চুরি করে গুরুতর ক্ষতির ঝুঁকিতে ফেলেন।
ভিসাপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে হাইকমিশনার জানান, শুধু সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করে সঠিক রুটের মাধ্যমে বৈধ ভিসা আবেদনগুলো স্বাগত জানায় তাঁর দেশ। তবে যাঁরা জালিয়াতির চেষ্টা করেন, তাঁদের গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ১০ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।ভিসাপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে হাইকমিশনার জানান, শুধু সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করে সঠিক রুটের মাধ্যমে বৈধ ভিসা আবেদনগুলো স্বাগত জানায় তাঁর দেশ। তবে যাঁরা জালিয়াতির চেষ্টা করেন, তাঁদের গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ১০ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।
অপরাধী ও প্রতারকদের প্রতারণামূলক কার্যকলাপের ফলে প্রতিবছর লাখ লাখ পাউন্ডের ক্ষতি হয় এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে দুর্বল মানুষেরা শোষণ, আর্থিক ক্ষতি ও আইনি পরিণতির ঝুঁকিতে পড়েন।
বিশ্বব্যাপী ভিসা জালিয়াতি ও অবৈধ অভিবাসন সুবিধা প্রদান উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অপরাধী চক্রগুলো সম্ভাব্য ভিসা আবেদনকারীদের প্রতারিত করতে ক্রমবর্ধমান পরিশীলিত কৌশল ব্যবহার করছে। প্রায়শই অতিরিক্ত ফির বিনিময়ে নিশ্চিত ভিসা, যথাযথ যোগ্যতা ছাড়াই চাকরি বা দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ভুক্তভোগীদের।
বাস্তবতা হলো, প্রতিশ্রুতি পূরণের পরিবর্তে হয় আর্থিক ক্ষতি, ভিসা প্রত্যাখ্যান, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং সবচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে পাচার ও শোষণ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর জ য
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতাদের পদত্যাগের হিড়িক
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে সখীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি ও বহিষ্কৃত সভাপতিসহ ছয় নেতা দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে তাদের পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
পদত্যাগকারীরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ মাস্টার, সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সাজু, সদস্য আশরাফুল ইসলাম বাদল, উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রউফ ও বহুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ মিয়া।
তারা ২১ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাপত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে নানা আলোচনা ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
ছয়জনের পদত্যাগপত্রে একই ধরনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তারা পদত্যাগপত্রে লিখেছেন “বিগত ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার অবৈধ সরকারের আমলে দলের সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে আসছি। যে কারণে আওয়ামী লীগের পেটুয়া পুলিশ বাহিনী দ্বারা মিথ্যা মামলা-হামলায় একাধিকবার জেল জুলুমসহ নানাবিধ অত্যাচার সহ্য করে দলীয় আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে দলের সকল কর্মসূচি পালন করে আসছি।
‘বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান দ্বারা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের দোসরদের দলীয় কার্যক্রমে সামনের সারিতে এনে পূনর্বাসন করার প্রতিবাদ করলে তিনি বিএনপির এই নেতাকর্মীদের সাথে বিমাতা সুলভ অনাকাক্ষিত অসদাচরণ করেন। যা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী।”
সেখানে আরো লেখা ছিল, “তার মত একজন জাতীয় নেতা কর্তৃক বিমাতাসুলভ অসাংগাঠনিক আচরণের জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে এই ছয় নেতা দলীয় সকল প্রকার পদ-পদবী থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এই পদত্যাগপত্রের অনুলিপি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে দেওয়া হয়।”
বাসাইল-সখীপুর আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর আগে থেকেই তিনি নির্বাচনী গণসংযোগ, জনসভা, উঠান বৈঠক, সামাজিক অনুষ্ঠান ও ওয়াজ মাহফিলে অংশগ্রহণ করে আসছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই বাসাইল ও সখীপুর উপজেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একটি পক্ষের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কোন্দল সৃষ্টি হয়ে আছে।
আহমেদ আযম খান মনোনয়ন পেলেও দুই উপজেলার বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একটি পক্ষ তার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না। এরআগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সখীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সাজুকে তার দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা বিএনপি। তার অব্যাহতিতে আহমেদ আযম খানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এ কারণে সখীপুর উপজেলা বিএনপির মধ্যে নতুন করে ভেতরে ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই ছয় নেতার পদত্যাগের পর কোন্দল আরো প্রকাশ্যে এসেছে।
অপরদিকে, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারের আহ্বায়ক আব্দুল খালেক মন্ডলকে আহমেদ আযম খানের হুমকি ও অশালিন ভাষায় কথা বলার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মানববন্ধন করে বীরমুক্তিযোদ্ধারা। এরআগে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমকে নিয়েও সমালোচনা করা হয়। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে আহমেদ আযম খান নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন। এসব বিষয় নিয়ে আহমেদ আযম খান বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
সদ্য পদত্যাগ করা সখীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ মাস্টার বলেন, ‘‘বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আহমেদ আযম খান জিয়ার আদর্শের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমিসহ এ পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০জন পদত্যাগ করেছি। প্রায় ২০০ নেতাকর্মী পর্যায়ক্রমে পদত্যাগ করবে। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাব।’’
সখীপুর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজিম উদ্দিন মাস্টার বলেন, ‘‘তাদের পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’’
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘‘ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা এখনো কোনো কাগজ পাইনি। এটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। ধানের শীষের প্রার্থীর জনপ্রিয়তার ঈর্শান্বিত হয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। ইনশাআল্লাহ আবার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে।’’
ঢাকা/কাওছার/এস