সিলেটের নাজুক যোগাযোগব্যবস্থার প্রতিকার চেয়ে গণজমায়েতের ডাক দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে এক খুদে বার্তা পাঠিয়ে তিনি সিলেটবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানান।

খুদে বার্তায় জানানো হয়, গণজমায়েতের অংশ হিসেবে আগামী রোববার বেলা ১১টায় সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় এক সমাবেশ হবে। এতে অংশ নিতে বৃহত্তর সিলেটবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান বিএনপির এই নেতা।

আরিফুল হক বলেন, ‘বৃহত্তর সিলেটের যোগাযোগব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুর্ভোগ, অনিয়ম ও চরম নৈরাজ্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সহজ, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল যাতায়াতে জনগণের অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই অব্যবস্থাপনা ও অবিচারের প্রতিবাদে এবং একটি যথাযথ উন্নয়নমূলক, স্বচ্ছ ও টেকসই যোগাযোগব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরা সবাই একত্র হব। আসুন, দলমত–নির্বিশেষে আমরা সবাই একত্র হই, আমাদের প্রিয় সিলেটের অধিকার আদায়ের এই ন্যায্য আন্দোলনে।’

আরও পড়ুনক্ষোভ জানিয়ে বেহাল সড়কে দাঁড়িয়ে সিলেট বিএনপি সভাপতির লাইভ ৪ ঘণ্টা আগে

এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেট–ঢাকা মহাসড়ক ও রেল যোগাযোগের দুরবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আরিফুল হক। দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু না হলে সিলেটবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে আরিফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেট–ঢাকা মহাসড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তিন থেকে চার ঘণ্টায় ওই মহাসড়ক দিয়ে আগে সিলেট থেকে ঢাকায় যাওয়া যেত, এখন ১৫ থেকে ২৪ ঘণ্টাও লাগছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চললেও সমাধানে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ নেই। এই অবস্থা নিরসনে আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। দলমত–নির্বিশেষে সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ আমরা কামনা করছি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ দীর্ঘ আট বছর ধরে চলছে। সম্প্রতি ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা দেশে ফিরে যান। তিন মাস পর তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে আবার কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে তাঁদের অনেক মালামাল খোয়া গেছে। এতে কাজের গতি কমেছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

কানাডা বাংলাদেশকে গাড়ির সম্ভাবনাময় বাজার ভাবছে

কানাডা অটোমোটিভ তথা গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের নতুন বাজার খুঁজছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় বাজার হতে পারে। দেশটির সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডেপুটি মিনিস্টার (ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড) ও চিফ ট্রেড কমিশনার সারা উইলশো আজ রোববার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেছেন।

ডিসিসিআইয়ের গুলশান সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে ডিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহসভাপতি মো. সালেম সোলায়মান ও পরিচালকগণ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, কাউন্সিলর ও সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেবরা বয়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারা উইলশো বলেন, অটোমোটিভ শিল্প এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত—উভয় ক্ষেত্রেই কানাডার শক্ত অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশকে বৈশ্বিকভাবে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠতে সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নয়নে সহায়তা করতেও আগ্রহী কানাডা।

সারা উইলশো আরও বলেন, কানাডার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই)। দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায় এবং কানাডার অধিকাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগও (এফডিআই) যুক্তরাষ্ট্রে যায়। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডাও সবচেয়ে বেশি এফডিআই পেয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে রপ্তানি, রপ্তানির বাজার এবং পণ্যের বৈচিত্র্য নিশ্চিত করা জরুরি। এ ছাড়া শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন খাতেও দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী বলেন, ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও কানাডার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২২২ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের আমদানি ছিল ৯০ কোটি ১০ লাখ ডলারের পণ্য এবং রপ্তানি ছিল ১৩২ কোটি ডলার।

রাজিব এইচ চৌধুরী আরও বলেন, কানাডা বাংলাদেশের ২০তম বৃহত্তম বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশে কানাডার মোট বিনিয়োগ ১৩ কোটি ২৮ লাখ ডলারের বেশি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সেবা, তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজিটাল অবকাঠামো, স্মার্ট লজিস্টিকস পরিষেবা ও কোল্ড চেইন ব্যবস্থাপনা—এসব খাতে কানাডার উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প, সাইকেল, তৈরি পোশাক, সিরামিকস, ফার্নিচার, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত ও হিমায়িত খাদ্যপণ্য, সফটওয়্যার ও বিপিও সেবা ইত্যাদি আরও বেশি পরিমাণে আমদানি করতে পারে কানাডা।

কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং বলেন, দুই দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে হলে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো জরুরি। কানাডা বাংলাদেশে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী। দক্ষতা উন্নয়ন, কারিগরি সহায়তা, ভকেশনাল ট্রেনিং, নার্সিং, অ্যাগ্রো-টেক শিল্প ও ব্যবসা সহজীকরণে বাংলাদেশে কাজ করতে চায় কানাডা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ