রোহিতের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া নিয়ে সৌরভ, ‘আমার সঙ্গেও হয়েছে, দ্রাবিড়ের সঙ্গেও হয়েছে’
Published: 10th, October 2025 GMT
রোহিত শর্মাকে সরিয়ে শুবমান গিলকে ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়াকে ভুল মনে করছেন না ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে রোহিতের বয়স হবে ৪০।
রোহিতকে সরানোর মূল কারণ এটাই বলে মনে করেন গাঙ্গুলী। তিনি ও রাহুল দ্রাবিড়ও একই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছেন বলেও দাবি করেছেন বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি।
শুক্রবার কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সৌরভ বলেন, ‘আমি জানি না রোহিতকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, নাকি অন্য কিছু। তবে মনে হয়, এটা দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। কারণ, রোহিত একজন অসাধারণ অধিনায়ক। গত দুই বছরে রোহিত টি-২০ বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে। সুতরাং রোহিতের পারফরম্যান্স নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। নির্বাচকদের মনে যা এসেছে, তা হলো—দুই বছর পর বিশ্বকাপের সময় রোহিতের বয়স হবে ৪০।’
রোহিত এ মুহূর্তে শুধু ওয়ানডে সংস্করণ খেলছেন। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন, গত মে মাসে ছেড়েছেন টেস্ট ক্রিকেট। প্রসঙ্গ টেনে গাঙ্গুলী বলেছেন, ‘রোহিত টি-২০ ক্রিকেট খেলে না, তাই ২০২৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ও খেলবে না। কিন্তু ২০২৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় রোহিতের বয়স হবে ৪০। খেলাধুলায় এটা অনেক বড় সংখ্যা। রোহিত দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের হয়ে খেলছে। কিন্তু ৪০ বছর বয়সে রোহিত খেলতে পারবে কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। তাই আমি মনে করি, এটা খারাপ সিদ্ধান্ত নয়।’
গাঙ্গুলীর দাবি, রোহিতের মতো একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তিনি নিজেও গিয়েছেন। একই অভিজ্ঞতা রাহুল দ্রাবিড়েরও। নতুন দায়িত্ব পাওয়া গিলও সামনে একই পরিস্থিতিতে পড়বে বলেও ধারণা তাঁর, ‘এমনটা সবারই হয়। আমি যখন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে গেলাম, তখন বয়স ৩৭। রাহুল দ্রাবিড়ের ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছে। আমরা সবাই ওয়ানডেতে ১০-১১ হাজারের বেশি রান করেছি। সুতরাং এমনটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। ১০ বছর পর, শুবমানও ৪০-এর কাছাকাছি এসে ১২-১৩ হাজার রান করলে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। কারণ, খেলাধুলায় সবারই একদিন শেষ করতে হয়, সেটা রজার ফেদেরার, পিট সাম্প্রাস, রাফায়েল নাদাল বা ডিয়েগো ম্যারাডোনা হলেও।’
ভারতের সাবেক অধিনায়ক আরও বলেন, ‘সুতরাং শুবমানকে দায়িত্ব দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত নয়। তিনি ইংল্যান্ডে প্রতিভার প্রমাণ রেখেছেন। এই তরুণদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমার মনে হয়, এটা রোহিতের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য এটা সঠিক সিদ্ধান্ত। রোহিত খেলতে থাকবেন, আর এ সময়ে একজন তরুণ অধিনায়ককে প্রস্তুত করা হবে।’
রোহিত ও বিরাট কোহলি ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতে পারবেন কি না—এই প্রশ্নে গাঙ্গুলী বলেন, ‘এটা ওদের ফিটনেস এবং পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করবে। যে সুযোগ পাবে, তারা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবে। কারণ, ক্রিকেট এমন একটি খেলা, যেখানে নিয়মিত খেলা জরুরি। না খেললে ফর্ম হারিয়ে যায়।’
গিলের নেতৃত্বে ভারত প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামবে ১৯ অক্টোবর, পার্থে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হামাস-ইসরায়েল, আগামী কয়েকদিনে যা ঘটবে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার রাতে এক ঘোষণায় বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাস গাজা শান্তি চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, এর মাধ্যমে গাজায় হামাস কর্তৃক বন্দী সকল জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারণ করা একটি সীমানায় সরিয়ে আনবে।
আরো পড়ুন:
গাজা শান্তি চুক্তি নিয়ে যা বলছেন বিশ্বনেতারা
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘বিশ্বের জন্য একটি মহান দিন’: ট্রাম্প
এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল কর্তৃক বন্দী কিছু ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
আগামী কয়েক দিনে যা ঘটবে-
বৃহস্পতিবার
ইসরায়েলি সরকার গাজা শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবের ওপর সংসদে ভোট গ্রহণের জন্য জেরুজালেম সময় দুপুর ২টায় বৈঠক করবে। প্রস্তাবিটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদে অনুমোদিত হলে, যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ইসরায়েলি সেনারা একটি সম্মত রেখায় প্রত্যাহার শুরু করবে।
প্রথম পাঁচ দিন ৪০০টি করে ত্রাণ ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার
বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার শেষ করতে সম্ভবত ২৪ ঘন্টারও কম সময় লাগবে।
এটি সম্পন্ন হলে, গাজায় তাদের বন্দী থাকা জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের ৭২ ঘণ্টা সময় শুরু হবে।
সোমবার
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা সিবিএসকে বলেছেন, সোমবার থেকে জিম্মিদের মুক্তি শুরু হবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে। তবে, তারা বলেছে, সম্ভব হলে হামাস আরো আগেই জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এ ঘটনায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন বলে দাবি করে ইসরায়েল। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো গাজায় রয়েছেন। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সেনারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।
ঢাকা/ফিরোজ