নির্বাচনের আগেই গণভোট দাবি: তৃতীয় ধাপে নতুন কর্মসূচি ইসলামী আন্দোলনের
Published: 12th, October 2025 GMT
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে জেলা জেলায় স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফা যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি শেষ করেছে ইসলামী আন্দোলন। এবার দাবি আদায়ে তৃতীয় ধাপে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৪ অক্টোবর ঢাকাসহ দেশের সকল বিভাগীয় শহরে সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও ১৫ অক্টোবর সারাদেশের সব জেলায় সকাল ১১টা থেকে ১২টা মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন:
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে ‘ঢাকা ঘেরাও’
২ দাবিতে ইবি ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান রবিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলের এক জরুরি বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পাঁচ দফা দাবি আদায়ে তৃতীয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, “গণঅভ্যূত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে জুলাই সনদে পিআর যুক্ত করে নির্বাচনের আগেই গণভোট দিতে হবে। ২৪ এর জুলাইয়ে রক্তের নজরানা দিয়ে ছাত্র-জনতা যে দাবির যথার্থতা প্রমাণ করেছে, সেই দাবির আইনি ও রাজনৈতিক স্বীকৃতি আদায়ে আমাদের রাজপথে লড়াই করতে হচ্ছে- এর চেয়ে দুঃখজনক বিষয় আর কিছু হতে পারে না। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাত্র-জনতার রক্তের দায় শোধ করতে রাজনৈতিক আন্দোলন চালিয়েই যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “পাঁচ দফা দাবি আদায়ে এর আগেও আমরা দুই দফায় কর্মসূচি পালন করেছি। দ্বিতীয় দফায় ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর দেশব্যাপী গণসংযোগ, ৯ অক্টোবর বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং আজকে সারাদেশের সব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। কর্মসূচিতে মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।”
“সরকারের পক্ষ থেকে জনতার যৌক্তিক এসব দাবির প্রতি ইতিবাচক সংবেদনশীলতা প্রদর্শন না করায় আমরা তৃতীয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছি,” বলেন আতাউর রহমান।
পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশের মাধ্যমে গণভোট প্রদান করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিকে জুলাই জাতীয় সনদের অন্তর্ভুক্ত করে গণভোট প্রদান করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা; স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, দলের যুগ্ম-মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ইফতেখার তারিক, যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ কাশফি, অধ্যাপক নাছির উদ্দিন, ডাক্তার শহিদুল ইসলাম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরি, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন গণভ ট ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় মদদ ও পরীক্ষার অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন জাতীয় ছাত্রশক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক কাজী মেহরাব। এতে বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার না করে গাদ্দারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আক্রোশের শিকার হয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘রেজাল্ট টেম্পারিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। এই প্রশাসন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে তারা শিক্ষক সিন্ডিকেট জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে এসব শিক্ষকের বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।
ইংরেজি বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক খন্দকার আল ফাহাদ বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রশাসন একটা কথা বলে যে, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। ঠিক কথা, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। কিন্তু তারা ঠিকই প্রতিবার শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করতে পারে; এমনটি আগেও করেছে, বর্তমানেও করছে। যে প্রশাসনকে আমরা একটি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসিয়েছি, তারা আজ এটিকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করছে।’
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক নাদিয়া রহমান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার যদি এই দেড় বছরে করা সম্ভব হয়, তাহলে মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার কেন এই দেড় বছরে করা সম্ভব নয়? তারা জাকসুর আগে মিটিংগুলোয় বলেছিল, জাকসু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিক্ষকের বিচার সম্ভব। কোথায় সেই বিচার? জাকসু হওয়ার পর আজ প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো ধরনের বিচারের তৎপরতা প্রশাসনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে না।
অবিলম্বে শিক্ষকদের বিচার না হলে এই প্রশাসনকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, এই শিক্ষকদের বিচার না হওয়ার পেছনে আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট জড়িত আছে। যে শিক্ষকেরা রেজাল্ট টেম্পারিং করছেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট। যদি প্রশাসন এসব শিক্ষকের বিচার না করে, তাহলে সাবেক ভিসি নুরুল আলমের প্রশাসন যেভাবে বিদায় নিয়েছিল, এই প্রশাসনকেও সেভাবে নামানো হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন প্রমুখ।