ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির অপেক্ষায় স্বজনরা
Published: 13th, October 2025 GMT
হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি ও ২৮ জনের মরদেহ ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে আজ সোমবার ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি ও গাজা থেকে আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেবে।
ইতিমধ্যে ৭ জন জিম্মিকে রেডক্রসের কাছে হস্তাস্তর করেছে হামাস। ফিলিস্তিনি কোনো বন্দিকে এখনও মুক্তি দেয়নি ইসরায়েল। তাদের স্বজনরা অধীর অপেক্ষায় প্রিয়জনদের ফেরার জন্য।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া শুরু করেছে হামাস
গাজায় হামাস ও দুগমুশ গোত্রের সংঘর্ষে নিহত ২৭
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের আনা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা বলছেন, তারা মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের গ্রহণের জন্য অপেক্ষায় আছেন। পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের আগে তাদের চিকিৎসা পরীক্ষা করা হবে।
ফিলিস্তিনি মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের বরণ করতে নিতে তাদের স্বজনরা হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এখানকার পরিবেশ প্রত্যাশা ও স্বস্তির। গাজাজুড়ে পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের দেখার আশায় আসছে।
সর্বত্র এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, ‘আজ সত্যিই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দিন’।
চিকিৎসাকর্মীরা বলছেন, এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের অনেকেই অত্যন্ত অবসন্ন, ওষুধ ও খাবারের অভাবে দুর্বল এবং কঠিন জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে এসেছিলেন। ইসরায়েলি কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় তারা শারীরিক ও মানসিক নিযার্তনের শিকার হয়েছিলেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল বন দ দ র ইসর য় ল বলছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর
শহরের নিতাইগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। প্রথমে সে জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারকে দেখান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি ডাক্তারের কাছে।
কার্ডিওলজি ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করে এসে ডাক্তারের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৪ নভেম্বর (সোমবার) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত্যু ব্যক্তিটির নাম আব্দুল জব্বার। তিনি ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব সস্তাপুর এলাকায় অস্থায়ী বাসিন্দা। তার গ্রামের বাসা ময়মনসিংহ জেলায়। পেশায় তিনি ছিলেন মাছ বিক্রেতা।
এদিকে তার মৃত্যুবরণ হাসপাতালে এক প্রকার হৈচৈ পড়ে যায়। কারণ, তার সাথে কোন স্বজন ছিলো না। ফলে কার কাছে লাশটি বুুঝিয়ে দিবেন সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফলে শুরু হয় লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান। কিন্তু স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি রাখা হয় হিমঘরে।
গত দুইদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান করা হয়। কিন্তু কোনভাবেই স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি অজ্ঞাতভাবে লাফন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এ আবেদনটি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হাসপাতালের অফিস সহায়ক সাউদ নূরে শফিউল কাদের। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে যাওয়ার পর পরই তাকে হাসপাতাল থেকে কল করে বলা হয়, ‘লাশটির স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসুন।’
এদিকে জরুরী বিভাগের পাশে লাশকাটা ঘরের সামনে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়ে আছে মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তারা পিতা মারা গেছে। একদম জলজ্যান্ত মানুষটি বাসা থেকে অনেকটাই সুস্থভাবেই বেড়িয়ে আসলেন, অথচ তিনি আজ মৃত। এসব ভেবেই তিনি অনেকটাই দুঃখে শোকে কাতর। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ ছিলো না।
তবে এ বিষয়ে মৃত আব্দুল জব্বারের চাচাতো ভাই মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, যথারীতি ২৪ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন আব্দুল জব্বার। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাইনি। আমরা তাকে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছি।
কিন্তু পাই নি। আজ সকালে আমাদের এলাকারই এক মহিলা বলে, ওনাকে নাকি এ হাসপাতালে দেখছে। তার কথা শুনে আমরা এ হাসপাতালে এসে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে তিনি মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহে নিয়ে যাবো এবং ওখানে দাফন করবো।
এ ব্যাপারে হাসপাতালটির ওয়ার্ড মাষ্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি প্রথমে জরুরী বিভাগে আসেন। সেখান থেকে তাকে ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি স্যারের কাছে পাঠানো হয়। স্যার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্যারের রুমে মাটিতে পড়ে যান এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, আমরা তার স্বজনদের খোঁজ পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাই নি। আজ তাই ডিসি স্যারের কাছে লিখিত আবেদন নিয়ে পাঠিয়েছিলা যে, এ লাশটি এখন কি করবো। তার নির্দেশনা আসলে আমরা তাকে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করতাম।
আল্লাহ্’র রহমতে এর আগেই তার স্বজনরা চলে আসছে। আমরা মৃত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ও ছবির সাথে মিলিয়ে এবং যাচাই করে এ স্বজনদের হাতে লাশটি বুঝিয়ে দিচ্ছি।