বাড়িভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রতি জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসের সংহতি
Published: 13th, October 2025 GMT
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস ও ইনকিলাব মঞ্চ। তারা সরকারকে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।
আজ সোমবার বিকেলে এসব রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেওয়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। এরপর তাঁরা বক্তব্য দেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য শিক্ষকদের যে ভূমিকা, তাঁরা যে চেষ্টা করে থাকেন, এটা গোটা জাতির জন্য বিরাট একটা আমানতস্বরূপ। কিন্তু আজকে শিক্ষকদের যদি রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়, তাঁদের দাবি যদি না মানা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে, তা কারও জন্য কল্যাণকর হবে না।’
শিক্ষক–কর্মচারীদের আন্দোলন ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিবেশ তৈরি হলে সেই দায় সরকারকে বহন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সরকার ও উপদেষ্টাদের মূল কাজ হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। তার জন্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে, তাঁদের সহযোগিতা নিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন করতে হবে। সে জন্য এখন যদি তাঁদের দাবি মানা না হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে অন্যভাবে কোনো পরিবেশ তৈরি হলে সেটার জন্য দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়া, শিক্ষক ও কর্মচারী উভয়ের জন্য চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা করা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা—এই তিন দফা দাবিতে গতকাল রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেখানে তারা বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে শিক্ষক–কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে তাঁরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন। ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট’–এর ব্যানারে তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করছেন।
শিক্ষক–কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানায় জামায়াত–সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন ‘বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন’। সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল এ বি এম ফজলুল করিম বলেন, শিক্ষক–কর্মচারীদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।’
শিক্ষকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। আপনাদের দাবি আমাদেরও দাবি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই শিক্ষকেরা আর ঘরে ফিরে যাবেন না।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেন, ‘আমরাও শিক্ষকের সন্তান। তাই শিক্ষকদের কষ্ট দেখার জন্য পত্রপত্রিকা দেখতে হয় না। এই কষ্ট দেখতে দেখতেই আমরা বড় হয়েছি।’ তিনি অবিলম্বে শিক্ষক–কর্মচারীদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন। তিনি বলেন, শিক্ষকেরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। অথচ তাঁদের দাবি আদায়ে রাস্তায় নামতে হয়, পুলিশ লাঠিপেটা করে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।’ তিনি দ্রুত সময়ে শিক্ষকদের দাবি পূরণের আহ্বান জানান।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী ঘোষণা দেন, রাতের মধ্যে পূরণ না হলে আগামীকাল দুপুর ১২টায় শহীদ মিনার থেকে মার্চ টু সচিবালয় কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র অবস থ ন র জন য ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সোমবার থেকে কর্মবিরতি এমপিও শিক্ষকদের
বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাদের কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি এগিয়ে এনেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করা হবে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দেওয়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবি এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট।
কর্মসূচি এগিয়ে আনার ঘোষণা
রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী কর্মবিরতি কর্মসূচি এগিয়ে আনার ঘোষণা দেন।
এর আগে দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা সোমবারের মধ্যে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছিলেন। তখন তারা মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে সারা দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিলেন।
পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে কর্মসূচি এগিয়ে আনা
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, জলকামান দিয়ে ছত্রভঙ্গ এবং লাঠিচার্জ করা হয়। কয়েকজন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষকরা তাদের কর্মবিরতি কর্মসূচি এক দিন এগিয়ে এনে সোমবার থেকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/এএএম/রফিক