জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শিকলবন্দী সেই দলছুট বানরকে উদ্ধার করে মুক্ত করেছে বন বিভাগ। আজ সোমবার দুপুরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা পৌরসভার তুলসীগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বানরটিকে মুক্ত করেন।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বানরটিকে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের ছাদে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। সে সময় কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বানরটিকে কলা ও পাউরুটি খেতে দেন। এরপর কয়েক দিন ধরে বানরটি ইউএনও কার্যালয়ের ছাদ ও আশপাশের গাছপালায় বিচরণ করছিল।

তবে ১০-১২ দিন আগে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবেদ আলী কলা দিয়ে প্রলুব্ধ করে বানরটিকে ধরে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিকল পরিয়ে রাখেন। এমনকি তিনি বানরটি বিক্রিরও চেষ্টা করেন এবং দাম চেয়েছিলেন ১২ হাজার টাকা। বিষয়টি জানাজানি হলে জয়পুরহাট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কামরুল হাসান উপজেলা বন কর্মকর্তাকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে বন বিভাগের একটি দল আবেদ আলীর বাড়িতে গিয়ে বানরটিকে উদ্ধার করে মুক্ত করে দেয়।

এ বিষয়ে আবেদ আলী বলেন, ‘বানরটিকে আমার শিকল পরিয়ে ধরে রাখা ঠিক হয়নি। বানরকে বন্দী করে রাখা যাবে না, এটা জানতাম না। বন বিভাগের লোকজনের সামনে বানরটিকে ছেড়ে দিয়েছি।’ জয়পুরহাট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বানরটিকে সফলভাবে মুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে এটি নিরাপদে আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র কর মকর ত ম ক ত কর ব নরট ক

এছাড়াও পড়ুন:

শিকলে বাধা শান্তর চিকিৎসায় ইউএনওর সহায়তা

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে টাকার অভাবে শিকলবন্দী জীবন কাটছে ১৪ বছর বয়সী শান্তর। জন্মের পর থেকেই মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। পরিবার তাকে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করে। তবে অর্থ সংকটে নিয়মিত চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দিন–দিন অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। সে কারণে রাতে ঘরে, আর দিনে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে রাখতে বাধ্য হন অভিভাবকরা।

গত রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে শান্তর বাড়িতে যান নবাগত জেলা প্রশাসক মো. ইকবাল হোসেন। তিনি শিশুটির অবস্থা দেখে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে শান্তর বাড়িতে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করার জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা শান্তর বাবা জসীম উদ্দীনের হাতে তুলে দেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার পীযূষ কুমার, সমাজসেবা কর্মকর্তা জামশেদ আলী, মিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মারফত আফ্রিদি।

এ ব্যাপারে শান্তর পিতা জসিম উদ্দিন জানান, ২০১১ সালে জন্ম নেওয়ার পর শান্ত সাড়ে তিন বছর বয়সে নানা অস্বাভাবিক আচরণ ও অখাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেলে দীর্ঘ পাঁচ বছর চিকিৎসা চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

দারিদ্র্যের কারণে নিয়মিত ওষুধ কিনতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। কিছুটা ভালো হওয়ার পর আবার সমস্যার পুনরাবৃত্তি হলে ২০১৮ সালে ফের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেবারও পাঁচ বছর ধরে ওষুধ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ আসে। কিন্তু দৈনিক ১০০-২০০ টাকার ওষুধ বাবদ খরচ মেটানো তার পক্ষে সম্ভব হয়নি।

জসিম আরো জানান, করোনাকালে গণমাধ্যমে শান্তর ভিডিও ভাইরাল হলে সেসময়ের পুলিশ সুপার তানভির আরাফাত চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে তিনি বদলি হলে চিকিৎসা থেমে যায়। বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার ২ হাজার ৬০০ টাকা তিন মাস পরপর পেলেও তা খাবার, কাপড় ও পরিচর্যায় শেষ হয়ে যায়। 

তিনি বলেন, “গত ২৪ নভেম্বর ডিসি স্যার শান্তকে দেখতে আসেন এবং চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। গতকাল ইউএনও স্যার ১৫ হাজার টাকা প্রদান করলেন এবং শান্তর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।”

মিরপুরের ইউএনও মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “শান্তকে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতার কারণে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসার পর তিনি নিজে গিয়ে শিশুটির খোঁজ খবর নেন। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা প্রদান করি। সরকারি সকল সহযোগিতা থেকে শান্তর চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাহাড়চূড়ায় ‘অতিকায় জাহাজ’, দূরে তাকালে সাগর, কোথায় এমন জায়গা
  • শিকলে বাধা শান্তর চিকিৎসায় ইউএনওর সহায়তা
  • ১৬৬ উপজেলায় নতুন ইউএনও
  • কেমন আছে রাজবাড়ী জেলার নদীগুলো