মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় ২ কোটি টাকার এসওপি সার জব্দ করা হয়েছে। তবে এর মালিক কে তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের চাপের মুখে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে ৩ হাজার ৩৬০ বস্তা সার জব্দ করে গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলামের জিম্মায় রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।

এ সময় গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন, গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফ্ফার উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সারের দাম বাড়বে না: কৃষি উপদেষ্টা 

কুড়িগ্রামে বেশি দামে সার বিক্রি করায় জরিমানা

স্থানীয়রা জানান, শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে কয়েকটি ট্রাকে করে ৩ হাজার ৩৬০ বস্তা সার মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়কের গাংনী উপজেলার বসুন্ধরাপাড়ায় আরএ এন্টারপ্রাইজের গোডাউনে আনলোড করা হয়। এই গোডাউনের মালিক গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম এবং পরিচালনা করেন বাপ্পি ও আব্দুল হালিম। 

এই গোডাউন থেকে রবিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কয়েকজন ওই সার ট্রাকে লোড শুরু করেন। এতে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ, পুলিশে খবর দেয়। এক পর্যায়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসককেও এ তথ্য জানান হয়। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সারের মালিকানা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। 

পরে গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলামসহ শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন এসে জানান, এসওপি সারগুলো ঝিনাইদহ জেলার জন্য একটি তামাক কোম্পানি নিয়ে এসেছে। ওখানে সমস্যার কারণে এই গোডাউনে রাখা হয়েছে। সারগুলো চিটাগাঙের নাফকো কোম্পানি থেকে কিনেছে টোবাকো কোম্পানিটি। 

আরএ এন্টারপ্রাইজের একজন পরিচালক বাপ্পি বলেন, ‘‘এটা আমাদের রড সিমেন্টের দোকান। শ্রমিকলীগ নেতা মনিরুজ্জামান ফোন করে বলেছেন- সারগুলো নামবে, পরে এসে কোম্পানির লোকজন নিয়ে যাবে। তারা ভাড়া দেবে। আমাদের গোডাউন ফাঁকা ছিল। তাই গোডাউনে সার নামিয়েছি। আজকে তারা নিয়ে যাচ্ছে।’’ 

গাড়ির চালকেরা জানান, সার বোঝেই থাকলে ট্রাকের চাকা নষ্ট হয়ে যাবে, এ জন্য তারা সারগুলো এখানে নামিয়ে রেখেছেন। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু থানার অফিসার না থাকায় করা হয়নি। 

শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও ট্রান্সপোর্টের এজেন্ট আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘‘এই সার চুয়াডাঙ্গার জীবনগরে আনলোড হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কী কারণে যেন সেখানে সার আনলোড করা হয়নি। আমাদের ফোন করে বলল, গাংনীতে মাল আনলোড করতে। আমরা এখনো জানি না কী কারণে এখানে আনলোড করেছে।’’ 

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘‘এই সার ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানি এখানে নিয়ে এসেছে। সারটা আপাতত জব্দ করে এবং তাদের চালানের কাগজপত্র নিয়েছি। আগামীকাল সারের প্রকৃত মালিকদের আসতে বলেছি। তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসনে বলেন, ‘‘সার যারা কিনেছেন, তাদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তার কথা হয়েছে। তারা আসার পর উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হবে।’’ 

এসওপি সারের প্রতি কেজির দাম ১৪০ টাকা। প্রতি বস্তার (৫০ কেজি) সরকারি ডিলার মূল্য ৬ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু অবৈধভাবে বাজারে ৬ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। 

ঢাকা/ফারুক/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত গ ড উন স রগ ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কড়াইলবাসীর জন্য জরুরি মানবিক সেবাকেন্দ্র চালু

রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অসহায় মানুষদের সহায়তা দিতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী বস্তির অভ্যন্তরে একটি মানবিক সেবাকেন্দ্র চালু করেছে। 

শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের নির্দেশনায় এ সেবাকেন্দ্রটি কার্যক্রম চালু করা হয়।

মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, “এই সেবাকেন্দ্রের লক্ষ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে প্রাথমিক মানবিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে জরুরি খাদ্য, পানি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে তাদের জীবনের নিরাপত্তা সহায়তা ও কিছুটা স্বস্তি নিশ্চিত করা।”

মানবিক সেবাকেন্দ্রটি প্রতিদিন দুই বেলা প্রায় দুই হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করবে, যা আজ থেকে শুরু করে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি নিরাপদ পানির চাহিদা পূরণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেবাকেন্দ্র এলাকায় নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যায়।

এই ব্যবস্থা পানীয়জল সংকট কমানোর পাশাপাশি পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। সেবাকেন্দ্র চালুর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দ্রুত খাদ্য সহায়তা পেয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছে। খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেয়ে অনেক পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও প্রবীণদের কাছে দ্রুত মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বার্তা হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান গনী এই মহতী কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

‘মানুষ মানুষের জন্য’—এই মানবিক অঙ্গীকার নিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ভবিষ্যতেও সব সংকটময় মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ