যে ওয়ানডে এক সময় ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় গর্বের জায়গা, সেখানেই হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ১১ ওয়ানডেতে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে দল। সঙ্গে দলটি হেরেছে টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজে।
নিকট অতীতে বাংলাদেশ টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ হারেনি। এর আগে বাংলাদেশ দল সর্বশেষ টানা ৪টি ওয়ানডে সিরিজে হেরেছে ২০১১ সালে। সেবার অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ।
সবশেষ গত পরশু বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়েছে আফগানিস্তান। দাপটের সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয়টি জিতে নিয়েছে। এবার তাদের হোয়াইটওয়াশের মিশন। বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। সেই লড়াইয়ে আবুধাবিতে দুই দল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় মাঠে নামছে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে। আফগানরা আজকের সুযোগ নিশ্চিতভাবেই হাতছাড়া করতে চাইবে না।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ বেশ খারাপ সময়ের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও যে সংস্করণে সবচেয়ে ভালো খেলত, সেই ওয়ানডেতেই এখন সবচেয়ে বাজে অবস্থা বাংলাদেশের। বাজে ফর্মের প্রভাব পড়েছে র্যাঙ্কিংয়ে। ১৯ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এখন আছে সর্বনিম্ন ১০ নম্বরে। তাতে ২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেওয়াটাও পড়েছে শঙ্কায়।
২০২৭ সালের ৩১ মার্চ ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে সেরা নয়ে না থাকলে বাছাইপর্ব খেলতে হতে পারে বাংলাদেশকে। যদিও আগামী বছর একাধিক সিরিজ রয়েছে বাংলাদেশের। বিসিবি আশাবাদী সরাসরিই বাংলাদেশ খেলতে পারবে বিশ্বকাপ। তার আগে আজ আফগান পরীক্ষায় উৎরাতে হবে দলকে। নয়তো নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে।
ব্যাটিংটাই বাংলাদেশকে ডুবাচ্ছে নিয়মিত। ব্যাটিং বিপর্যয়, মানসিক দুর্বলতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন শট নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি যেন এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দলের আরেকটি বড় সমস্যা হলো দায়িত্ববোধের অভাব। অধিনায়ত মেহেদী হাসান মিরাজ স্বীকার করেছেন, ব্যাটসম্যানরা কেউই যথেষ্ট দায়িত্ব নিচ্ছেন না।
তিনি বলেছেন, ‘’টপ অর্ডারে আমাদের বড় জুটি দরকার। তাহলে গত দুই ওয়ানডে ম্যাচের চিত্র অন্যরকম হতো। কিন্তু কোনো ব্যাটারই দায়িত্ব নিতে পারেনি। এটি খুবই হতাশাজনক।’’
শেষ ম্যাচে ভালো করতে আত্মবিশ্বাসী মিরাজ, ‘’এখনও আমাদের একটি ম্যাচ বাকি আছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ব্যাটসম্যানদের আরও উন্নতি করতে হবে এবং দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।’’
ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২১ ম্যাচ খেলে ১১টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। আফগানদের জয় ১০টি। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ জিতলে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশই করবে না তারা, ওয়ানডেতে জয়-পরাজয় বিবেচনায় প্রথমবারের মতো সমানে-সমান হবে আফগানিস্তান।
ঢাকা/ ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন হ য় ইটওয় শ
এছাড়াও পড়ুন:
কঠিন পথ মাড়িয়ে সাফল্যের খোঁজে বাংলাদেশ
কে বলবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি আজ, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। কোনো হাক-ডাক নেই, কোনো উত্তেজনা নেই। অথচ সন্ধ্যা ৬টায় দুই দল মাঠে নামবে টি-টোয়েন্টি খেলতে।
টেস্ট সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার পর টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার প্রত্যাশা আকাশচুম্বি। সেই প্রত্যাশা হয়তো লিটন অ্যান্ড কোং পূরণ করতে পারবেন। তবে মাঠে নিজেদের সেরাটা দিয়েই সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। শক্তিমত্তা, পরিসংখ্যান বা অভিজ্ঞতা—সব দিক থেকেই এগিয়ে বাংলাদেশ। তবে টেস্টে যেভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে সফরকারী দল, টি-টোয়েন্টিতে এত সহজে হাল ছাড়ার দল নয় তারা।
দুই বছর আগে চট্টগ্রামে দুই দলের সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজটি বাংলাদেশ জিতলেও ছেড়ে কথা বলেনি আয়ারল্যান্ড। শেষ টি-টোয়েন্টিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন পল স্টার্লিংরা। দলটির একাধিক ক্রিকেটার এখন নিয়মিত বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে খেলেন। বাংলাদেশকে তাই সতর্ক থাকতেই হবে।
সঙ্গে চট্টগ্রামে সবশেষ সিরিজটি একটুও ভালো যায়নি বাংলাদেশের। একমাস আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লিটনের দল। গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফর থেকে শুরু করে আইরিশ সিরিজের আগ পর্যন্ত পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের চারটি জিতেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটাই নিজেদের শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ। এরপর বিপিএল খেলবে। তবে প্রস্তুতির বড় সুযোগ এই সিরিজই। তাইতো অধিনায়ক লিটনের চাওয়া, ২২ গজে কঠিন সময় আসুক তাদের জন্য।
‘‘আমি চাই, আমাদের খেলোয়াড়েরা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ুক। কিন্তু যে জিনিসটা হয়েছে, শেষ সিরিজে আমরা জিততে পারিনি। এবার চেষ্টা করব কঠিন সময় থেকে বের হয়ে যেন ম্যাচগুলো জিততে পারি।’’
দলীয় সাফল্যে বাংলাদেশ এই ফরম্যাটে এখন আত্মবিশ্বাসী তবে ভাবনা বাড়াচ্ছে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। বিশেষ করে মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স বেশ ভোগাচ্ছে দলকে। এর মধ্যে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়াতে দুই মেরুতে চলে গেছেন অধিনায়ক ও নির্বাচক। নতুন করে দলে যুক্ত করা হয়েছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। তার ওপর এখন রাজ্যের সব চাপ।
তবে লিটনের আশা দল ঘুরে দাঁড়াবে, ‘‘খুব একটা চিন্তিত না মিডল অর্ডার নিয়ে। অবশ্যই আমাদের খেলোয়াড়েরা শেষ দুয়েকটা সিরিজে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেনি। কিন্তু তারা সবাই প্রুভেন। আমি আশাবাদী, তারা এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়াবে।’’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলে ৫টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। নিজেদেরকে ফেভারিট মেনেই আজ বন্দরনগরীতে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামার অপেক্ষায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ঢাকা/ইয়াসিন