বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি, সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে: আসিফ নজরুল
Published: 22nd, October 2025 GMT
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, বরং অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষাৎ করে তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকে নিরপেক্ষ ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি। সে সঙ্গে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা ‘দলঘনিষ্ঠদের’ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘উনারা (বিএনপি) চেয়েছে ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তী) সরকার, যেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো ভূমিকা পালন করে। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। তো আমরা উনাদের বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা এমনকি এ অ্যাসিওরেন্স (নিশ্চয়তা) দিয়েছেন যে এখন জনপ্রশাসন বা অন্য কোনো জায়গায় বড় বড় বদলির ব্যাপারটা উনি নিজে দেখবেন। তো বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, এটা বলেনি। বলেছে, ইন্টেরিম সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো রোল (ভূমিকা) পালন করতে হবে।’
নির্বাচনকালীন সরকার পরিবর্তন হবে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, না। এ ধরণের কোনো কিছু আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার বিষয়। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে, না কেমন হবে, এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপিত হয়নি।
উপদেষ্টাদের মধ্যে দলীয় কেউ থাকলে তাঁদের ‘উপদেষ্টা পরিষদে’ না রাখার বিষয়ে বলেছে বিএনপি। এ বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, এটা তারা এর আগেও বলেছে। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই। প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সব দলই অভিযোগ করে, এক দল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে ওই দলের লোক আছে। যেহেতু সব দলই অভিযোগ করে, অন্য দলের লোক আছে। তার মানে হচ্ছে আমরা নিরপেক্ষভাবেই দায়িত্ব পালন করছি।’
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে তাদের এই কাজের প্রশংসা করেন আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে সেনাসদস্যদের যেভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে, এ কাজে সেনাপ্রশাসন, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা সেনাপ্রধান যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, সেটি অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। আইনের শাসনের প্রতি তাঁরা যে শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়েছেন, এটি ইতিবাচক।
আরও পড়ুনসরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়কের’ ভূমিকায় চায় বিএনপি১৩ ঘণ্টা আগেএই কর্মকর্তাদের সাবজেলে কেন রাখা হয়েছে বা কোথায় রাখা হবে, সেটি সম্পূর্ণভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভুক্ত বিষয় বলে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, যেটি প্রয়োজন ও যুক্তিযুক্ত, তাঁরা সেটিই করবেন।
আগামী নির্বাচন নিয়ে আস্থার অভাব আছে কি না, তা জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে আস্থার অভাব আছে কি না, তা জানা নেই। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে রকম অনৈক্য, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, সে কারণেই হয়তো এই আস্থার অভাব দেখা দিতে পারে। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখা গেলে এসব সংশয় দূর হবে।
আরও পড়ুননির্বাচন নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে১৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট সরক র র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বেনিনে সামরিক অভ্যুত্থান
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। শনিবার দেশটির সরকারি টেলিভিশনে একদল সেনা উপস্থিত হয়ে সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সামরিক কমিটি ফর রিফাউন্ডেশন নামে পরিচিত এই দলটি রবিবার রাষ্ট্রপতি এবং সব রাষ্ট্রীয় শীর্ষ কর্মকর্তাকে অপসারণের ঘোষণা দিয়েছে।
সেনারা জানিয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্যাসকেল টিগ্রিকে সামরিক কমিটির সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে।
১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভের পর পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি একাধিক অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছে, বিশেষ করে স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলোতে। ১৯৯১ সাল থেকে, মার্কসবাদী-লেনিনবাদী ম্যাথিউ কেরেকোর দুই দশকের শাসনের পর দেশটি রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি প্যাট্রিস ট্যালন ২০১৬ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর আগামী এপ্রিলে পদত্যাগ করার কথা ছিল।
ট্যালনের দলের মনোনীত প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী রোমাল্ড ওয়াদাগনি সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিলেন। বিরোধী প্রার্থী রেনাউড আগবোডজোরের পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষক না থাকার কারণে নির্বাচন কমিশন তাকে প্রত্যাখ্যান করে।
ঢাকা/শাহেদ