ম্যাচ-আপ তত্ত্ব ও বাংলাদেশের ভরাডুবি গল্প
Published: 22nd, October 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ-আপ তত্ত্বে গভীরভাবে আক্রান্ত। বোলিংয়ে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে ডানহাতি স্পিনার বল করতে পারবে না। ঠিক আবার বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে বাঁহাতি স্পিনার বল করতে পারবে না। ব্যাটিংয়ে আবার উল্টো।
এমন কোনো নিয়ম এমসিসি লিখে রাখেনি। কিন্তু, এমন অলিখিত নিয়ম জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে, যা ২২ গজে দেখা যায় হরহামেশা। বাংলাদেশ ক্রিকেট যে তত্ত্বকে একেবারে লিখিত নিময়ই বানিয়ে রেখেছে। যদি না-ই বানাত, তাহলে গতকাল সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিনারের বিপক্ষে কেন দুজন ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল না টিম ম্যানেজমেন্ট।
মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওয়ানডে টাই হয়। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের বিপক্ষে ১০ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমবারের মতো সুপার ওভারের অভিজ্ঞতা পাওয়া বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১১ রান।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রিশাদ হোসেন ও সাইফ হাসান রয়েছেন ফর্মে। বাকিরা আসা-যাওয়ার ভেতরেই আছেন। রিশাদ হোসেন মূল ম্যাচে ১৪ বলে ৩৯ রান করেন ৩টি করে চার ও ছক্কায়। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ দুইশর বেশি পুঁজি পায়। কিন্তু, সুপার ওভারে তাকে ব্যাটিংয়ে দেখতে না পেয়ে অবাক হয়েছেন অনেকেই। সাইফ আসলেও দলের দাবি মেটাতে পারেননি।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে পাঠায় সৌম্য সরকারকে। তিনে শান্তকে। কারণ প্রতিপক্ষ শিবির বোলিং দিচ্ছে বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনকে। ম্যাচ-আপ তত্ত্ব অনুযায়ী, এখানে সফলতার হার বেশি থাকবে।
ব্যাটিংয়ে নামার আগে দলের ডাগ আউটে কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এবং অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে লম্বা সময় কথা বলতে দেখা যায়। দুজনের আলাপচারিতায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ব্যাটসম্যান নির্বাচন করছিলেন তারা। এ সময়টায় প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ছিলেন নিরব ভূমিকায়। তাকে ডাগআউটে কেবল বসে থাকতেই দেখা যায়। ম্যাচের পরও ঠিক একই জায়গায় ছিলেন তিনি। কেন রিশাদ হোসেনকে ব্যাটিংয়ে নামানো হলো না, সেই প্রশ্ন বারবার উঠে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে।
উত্তরে কোচ ও অধিনায়কের পরিকল্পনার কথা বলেন বাঁহাতি ওপেনার, “হ্যাঁ, এটা (রিশাদকে সুপার ওভারে না পাঠানো) কোচ আর অধিনায়ক পরিকল্পনা করেছেন। এটা তাদের পরিকল্পনার একটা অংশ ছিল। তারা চিন্তা করেছে যে, মূল ব্যাটারদের পাঠাবে এই সময়ে।”
আরেক প্রশ্নে কোচ-অধিনায়কের এমন সিদ্ধান্তের পেছনে কারণটাও বোঝানোর চেষ্টা করেন সৌম্য, “দেখুন এখানে বাঁহাতি স্পিনার বল করছিল। তাই, বাঁহাতি ব্যাটার উইকেটে যাওয়ার চিন্তা করাই সবচেয়ে ভালো। তো এটাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বাঁহাতি ব্যাটার গেলে দলের জন্য ভালো হবে। তাই, এটি ভেবেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
অথচ, রিশাদ মূল ম্যাচে যে ৩টি ছক্কা মেরেছেন ২টি ছিল ছোট সীমানা দিয়ে। মেরেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার গুদাকেশ মোতিকে। ওই প্রান্ত দিয়েই সুপার ওভারে ব্যাটিং করেছিল বাংলাদেশ। ফলে, তার কাজটা আরো সহজ হয়ে যেত। কিন্তু, বাংলাদেশের অধিনায়ক ও কোচের ম্যাচ-আপ তত্ত্বই বাংলাদেশকে ম্যাচ হারিয়েছে।
এমন ম্যাচ-আপের পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে আসতে পারত কি না বাংলাদেশ? উত্তরে আবারও কোচ-অধিনায়কের সিদ্ধান্তের পক্ষে কথা বলেন সৌম্য, ‘‘এটা নিয়ে তো দলের সবাই আমরা চিন্তা করিনি। এটা কোচ-অধিনায়ক চিন্তা করেছে। ওইখানে আমরা জানতাম না যে, আকিল বল করবে। যদি আমরা দুইটা বাঁহাতি ব্যাটার নেমে যেতাম, ওই সময় যদি কোনো অফ-স্পিনার আসত, তখন কিন্তু দুজন বিপদে পড়তাম। তাই, ডানহাতি-বাহাতি ছিল। ওদের ক্ষেত্রেও দেখবেন, ওরাও বাঁহাতি-ডানহাতি ব্যাটিং করেছে।”
ঢাকা/ইয়াসিন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী শুক্র-শনিবার চলবে বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখতে শুক্র ও শনিবার শুল্কায়ন কার্যক্রম পুরোদমে চলবে। ঢাকা কাস্টমস হাউসের সব শুল্ক দল তাদের নিজ নিজ অফিসে উপস্থিত থেকে কার্যক্রম চালাবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই আদেশ জারি করেছে। বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে কুরিয়ার সার্ভিস এবং আমদানি অংশে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।