সবাই তাদের হিংসা করছে, আমাদের মধ্যে বড় কে?
Published: 11th, November 2025 GMT
সিনেমার চেয়ে ইদানীং তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েই আলোচনা হয় বেশি। নতুন নতুন সাক্ষাৎকারে হিন্দি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন অনুরাগ কশ্যপ। এবারও ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি কমল নাহতার পডকাস্টে হাজির হয়ে তিনি কথা বলেছেন নানা প্রসঙ্গে।
সিনেমার প্রচার ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
অনুরাগ কশ্যপ বলেন, বর্তমান হিন্দি চলচ্চিত্রশিল্প ধীরে ধীরে বিষাক্ত হয়ে উঠছে। কমল নাহতার সঙ্গে আলাপকালে অনুরাগ বলেন, সিনেমার প্রচারের প্রক্রিয়ায় প্রচুর অর্থ নষ্ট হয়। অনুরাগ বলেন, ‘কোনো অল্প বাজেটের সিনেমা সেভাবে সুযোগ পায় না। আগে সময় ছিল, যখন সিনেমা হল কম ছিল, কিন্তু মুখের কথায় বেশি ব্যাপকতা ছিল। আমার সাধারণ যুক্তি “ডেমন স্লেয়ার” বা “এফ ওয়ান’ ভারতে কেন চলছে? এটার প্রচারের জন্য কে এসেছে? ব্র্যাড পিট কি এখানে প্রচারের জন্য এসেছে?’
অনুরাগ আরও যোগ করেন, ‘প্রচার মানে অনেক অর্থ নষ্ট করা। যেমন দক্ষিণে প্রচারে সীমা থাকে, তাই এখানেও থাকা উচিত। এখন ম্যাডক ফিল্ম এত সাফল্য দেখিয়েছে, খুশি হওয়া উচিত! কিন্তু সবাই তাদের হিংসা করছে। আমাদের মধ্যে বড় কে? এটা ভাবতে ভাবতেই সবাই হারিয়ে যাচ্ছে।’
অনুরাগ কশ্যপ। কোলাজ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন র গ
এছাড়াও পড়ুন:
সনদের বিষয়ে সুরাহা না হওয়াটাই নির্বাচনের আগে একমাত্র সংকট
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদকালেই আমরা রাজনৈতিক দলগুলো মোটাদাগে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম। এগুলো হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ হবে, গণভোট হবে এবং গাঠনিক ক্ষমতা সামনের সংসদকে দিয়ে সেটাকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ঘোষণা দিয়ে সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তখন বিস্তারিত আলোচনা না হলেও মোটাদাগে এ বিষয়গুলোতে আমরা সবাই একমত ছিলাম। পরে ঐকমত্য কমিশন তাদের বিস্তারিত সুপারিশ সরকারের কাছে উপস্থাপন করেছে।
আমরা ভেবেছিলাম, সরকার যেহেতু গণ-অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট ও সংস্কারের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করছে, তারা ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু সরকার নিজে থেকে দায়িত্ব না নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রাজনৈতিক দলগুলোর দিকেই আবারও সংস্কারের বিষয়টাকে ঠেলে দিল। এটা আসলে সরকারের একটা গা বাঁচানোর মনোভাব থেকেই হয়েছে।
আরও পড়ুনজাতি নির্বাচনের মাঠে, সনদ বাস্তবায়নের দাবি কেন রাজপথে২ ঘণ্টা আগেআমরা রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছি। বিভিন্ন বিষয়ে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিকভাবে আমাদের যোগাযোগ চলছে। কিন্তু সরকারের কর্তব্য হলো তারা যেহেতু সংস্কারের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তারা জুলাই সনদের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে। যেসব দল জুলাই সনদের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন না চেয়ে আংশিক বাস্তবায়ন চায়, সরকার তাদের বিরাগভাজন হতে চায় না। এ কারণে তারা সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে এখনো দূরে রয়েছে।
সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনা করে মতৈক্যে পৌঁছাতে আবারও সময় দিয়েছে, সেই সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মুখাপেক্ষী না থেকে সরকার ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে জুলাই সনদের আদেশ জারি করবে।
আরও পড়ুনসনদের আইনি ভিত্তির পর জানুয়ারিতে ভোট হলেও আপত্তি নেই২ ঘণ্টা আগেজুলাই সনদের গুরুত্বপূর্ণ যে মৌলিক সংস্কারগুলো, তার অনেক কিছুতেই বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট ছিল। কিন্তু আমরা সরকারকে বারবার এটা জানিয়েছি, নোট অব ডিসেন্টের অর্থ হলো সেটা ইতিহাসের দলিলে অন্তর্ভুক্ত থাকা, সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হওয়া নয়। সেই জায়গা থেকে সরকার যদি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জুলাই সনদের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন, উচ্চকক্ষে পিআর এবং অন্যান্য বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, আমরা সেটাকে সাধুবাদ জানাব। আমরা বরাবরই এনসিপির পক্ষ থেকে জানিয়েছি, সরকার যে আদেশ জারি করবে, জুলাই সনদের ক্ষেত্রে সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ, জুলাই সনদের আদেশে যা কিছু অন্তর্ভুক্ত হবে বা হবে না, তার ওপরই নির্ভর করবে ভবিষ্যতে কতটুকু গৃহীত হলো আর কতটুকু বাদ থেকে গেল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশটাকে যদি সরকার পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তাহলে গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে খুব বড় ধরনের অনিশ্চয়তার জায়গা তৈরি হবে না। কিন্তু গণভোটের থেকেও জুলাই সনদের আদেশটা গুরুত্বপূর্ণ। আদেশটা সরকারকে সঠিকভাবে দিতে হবে। গণভোটটা জাতীয় নির্বাচনের আগে হলেই আমরা ভালো মনে করি, একই দিনে হলেও সমস্যা নেই।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পক্ষগুলো সবাই সামনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, সেটা প্রত্যাশা করে। সে ক্ষেত্রে জুলাই সনদের বিষয়ে সুরাহা না হওয়াটাই নির্বাচনের আগে একমাত্র সংকট হিসেবে আমরা দেখি। এই সংকট উত্তরণের বিষয়ে যাদের আপত্তি আছে, সেই আপত্তি প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সরকারকেই সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সরকার যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, তাহলে একে ঘিরে যে রাজনৈতিক সংকট এবং নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার জায়গা তৈরি হয়েছে, সেটা কেটে যাবে।
আখতার হোসেন: সদস্যসচিব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)