যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিসর, লেবানন ও জর্ডানে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে তাঁর সহযোগীদের নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, মুসলিম ব্রাদারহুডের এসব শাখা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে সমর্থন দেয়।

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইসরায়েলের শত্রুদের বিরুদ্ধে চাপ জোরালো করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই গতকাল সোমবার ট্রাম্প এ আদেশ দিয়েছেন।

আদেশে বলা হয়েছে, জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারা হামাসকে বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছে এবং সংগঠনটির লেবানন শাখা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে হামাস ও হিজবুল্লাহর পক্ষ নিচ্ছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের লেবানন শাখাটি আল-জামা আল-ইসলামিয়া নামে পরিচিত।

আরও পড়ুনমুসলিম ব্রাদারহুডকে কেন ত্যাগ করছেন এরদোয়ান১২ আগস্ট ২০২৩

ট্রাম্পের আদেশে আরও বলা হয়েছে, মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের এক নেতা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ চলাকালে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাপনায়’ সহিংস হামলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে হোয়াইট হাউস এটি দিয়ে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। মুসলিম ব্রাদারহুড মিসরে নিষিদ্ধ। তারা বেশির ভাগ সময় সেখানে গোপনে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তদেশীয় নেটওয়ার্ককে মোকাবিলা করছেন। এ নেটওয়ার্ক মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র এবং মিত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডকে উসকে দেয়।

ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়েছে, জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারা হামাসকে বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছে এবং সংগঠনটির লেবানন শাখা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে হামাস ও হিজবুল্লাহর পক্ষ নিচ্ছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের লেবানন শাখাটি আল-জামা আল-ইসলামিয়া নামে পরিচিত।

ট্রাম্পের আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে দেশটির গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে পরামর্শ করে ৩০ দিনের মধ্যে এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ তকমা পাবে।

প্রক্রিয়াটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তকমা দেওয়ার কাজটি দ্রুতই হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুনমুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করে বিপদে জর্ডান০৩ মে ২০২৫

ট্রাম্পের আদেশ মুসলিম ব্রাদার হুডের অন্য শাখাগুলোকেও নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পথ খুলে দিচ্ছে।

হোয়াইট হাউস এসব সংগঠনকে ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করারও চেষ্টা করছে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তদেশীয় নেটওয়ার্ককে মোকাবিলা করছেন। এ নেটওয়ার্ক মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র এবং মিত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডকে উসকে দেয়।

এসব তকমা দেওয়ার পর মুসলিম ব্রাদারহুডকে যেকোনো ধরনের সহায়তা দেওয়াকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হবে। এ ছাড়া এর আওতায় সংগঠনটির বর্তমান ও সাবেক সদস্যদের মধ্যে বড় অংশেরই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। সংগঠনটির আয়ের উৎস নষ্ট করতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের সুযোগ তৈরি হবে।

মিসরের মুসলিম চিন্তাবিদ হাসান আল-বান্না ১৯২৮ সালে মুসলিম ব্রাদারহুড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সংগঠনটির বিভিন্ন শাখা আছে।

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়। সংগঠনটির দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক অংশগ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল ব নন শ খ য ক তর ষ ট র ন টওয় র ক ইসর য় ল র স গঠনট র সন ত র স

এছাড়াও পড়ুন:

মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের বৈঠক

ইসরায়েল ও হামাস বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও গাজার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার কায়রোতে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা গত মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিল।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নিহত ৬৯ হাজার ছাড়াল ০৯ নভেম্বর ২০২৫

এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় এটি হুমকির মুখে পড়েছে।

হামাসের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন নির্বাসনে থাকা হামাস নেতা খলিল আল-হায়া। তিনি মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বন্ধ এবং এসব ঘটনা নথিবদ্ধ করতে একটি ‘স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া’ ঠিক করার আহ্বান জানান।

হামাস আরও জানায়, গাজার দক্ষিণের রাফাহ অঞ্চলের সুড়ঙ্গগুলোয় অবস্থানরত হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে বের করতে মিসরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এসব যোদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজার সুড়ঙ্গগুলোয় কেন আটকে আছেন হামাস যোদ্ধারা১৭ নভেম্বর ২০২৫

চলতি মাসের শুরুতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকা পড়া হামাস যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমাধান খুঁজছেন মধ্যস্থতাকারীরা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের এক যোদ্ধা গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার পর গত শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের পাঁচ জ্যেষ্ঠ সদস্যকে হত্যা করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হামাসের এক স্থানীয় কমান্ডারও ছিলেন।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় দেড় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস ইসরায়েলের১২ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাউলদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা অপরিহার্য: আসক
  • মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের বৈঠক