পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সামুদ্রিক সহযোগিতা আরো জোরদার করার লক্ষ্যে পাকিস্তান জাতীয় জাহাজ চলাচল কর্পোরেশন (পিএনএসসি) ও বাংলাদেশ জাহাজ চলাচল কর্পোরেশন (বিএসসি) এর মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। 

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের বোমা হামলায় শিশুসহ ১০ আফগান নিহত

পাকিস্তানে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীদের হামলা

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার লন্ডনে বাংলাদেশের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড.

এম. সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে এক বৈঠকে পাকিস্তানের সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ জুনাইদ আনোয়ার চৌধুরী এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন।

এতে যৌথ কন্টেইনার ও বাল্ক জাহাজ চলাচল পরিষেবা, প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সমুদ্র পরিবহন উন্নয়নে সহযোগিতা, পারস্পরিক বন্দর-কল সুবিধা প্রদান এবং উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সম্পৃক্ততা জোরদার করার লক্ষ্যে বড় ধরনের অংশীদারিত্বের প্রস্তাব করা হয়েছে।

পাকিস্তানের সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রী আইএমও ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সমুদ্র পরিবহন-সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক আঞ্চলিক সমুদ্র পরিবহন সংস্থাগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাঠামো তৈরির পাকিস্তানের বৃহত্তর লক্ষ্যের উপর জোর দিয়েছেন।

তিনি আঞ্চলিক বাণিজ্য প্রবাহকে সমর্থন করার জন্য পাকিস্তানের প্রস্তুতির প্রমাণ হিসেবে কেপিটির ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা, চলমান আধুনিকীকরণ উদ্যোগ এবং উন্নত টার্নঅ্যারাউন্ড সময় তুলে ধরেন। পাকিস্তানের মন্ত্রী বলেন, বন্দর-থেকে-বন্দর সহযোগিতা আরো ঘনিষ্ঠ হলে সরবরাহ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ কমানো যাবে, আঞ্চলিক বাধা কমানো যাবে এবং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বাণিজ্যিক একীকরণের জন্য নতুন পথ খুলে যাবে।

বৈঠকে উভয় পক্ষই বলেছে যে, পাকিস্তান-বাংলাদেশ সমুদ্র আলোচনা শুরু করা বন্দর উন্নয়ন, জাহাজ চলাচল খাতের সহযোগিতা, মৎস্য ও অন্যান্য উদীয়মান সমুদ্র সমস্যা নিয়ে নিয়মিত আলোচনার জন্য একটি কাঠামোগত প্ল্যাটফর্ম হবে।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব র প রস ত সহয গ ত পর বহন মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের লাশ তুলে লেপ–কাঁথায় মোড়ালো ছেলে

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মোথাজুরী এলাকায় ঘটেছে চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। পারিবারিক কবরস্থান থেকে নিজের মায়ের লাশ তুলে এনে ঘরে মশারী টানিয়ে লেপ–কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে রেখেছে সজিব হোসেন নামের এক মাদকাসক্ত ছেলে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র কৌতুহল।

এলাকাবাসী, মৃতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোথাজুরী এলাকার আনতাজ আলীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী খোদেজা বেগম একমাত্র ছেলে সজিবকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। অসৎ সঙ্গে পড়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে সজিব। প্রায়ই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ ও শারীরিক নির্যাতন করত। 

গত শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে মা–ছেলের মধ্যে তীব্র বাক-বিতণ্ডা হয়। পরে অভিমান ও মানসিক যন্ত্রণায় খোদেজা বেগম গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। 

ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। কিন্তু রাতের কোনো একসময় সজিব গোপনে কবর খুঁড়ে লাশ তুলে নিজ ঘরে নিয়ে আসে। সেখানে মশারী টানিয়ে লেপ–কাঁথা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে। 

সোমবার সকালে কবরস্থানে গিয়ে কবর খোলা দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সজিব ঘর বন্ধ করে রেখেছে। আচরণেও অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সজিবের ঘরের তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। ঘরের ভেতর মশারীর নিচে লেপ–কাঁথায় মোড়া অবস্থায় পাওয়া যায় খোদেজা বেগমের লাশ। লাশ থেকে তখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।

এর আগের রাতে সজিব তার মামা আব্দুল মান্নান মিয়াকে ফোন দিয়ে ‘মাকে কেন দাফন করা হলো’ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দাফনকাজে অংশ নেওয়া স্বজনদের প্রাণনাশের হুমকিও দেন। এতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে ভয়–আতঙ্ক তৈরি হয়।

এ ঘটনা জানাজানি হলে আশপাশের বহু মানুষ ভিড় করে লাশ দেখতে। খোদেজার বড় ভাই আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘‘সজিব আমাকে ফোন করে বলেছে মাকে কেন মাটি দিলেন? সে আমাকে খুন করার হুমকিও দিয়েছে। আমারা বর্তমানে চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি।’’

কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুরুজ জামান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও মর্মান্তিক। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় লাশটি পুনরায় দাফন করা হয়েছে।”

ঢাকা/রেজাউল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ