বাসিন্দাদের ‘ঘুম পাড়িয়ে’ ৪ ঘরে চুরি
Published: 25th, November 2025 GMT
দুপুরে খাবারের পর থেকেই ঘুম ঘুম ভাব ছিল স্কুলশিক্ষক সাহাব উদ্দিনের। ঘরে থাকা স্ত্রী-পুত্রও ঝিমাচ্ছিলেন। তাই গতকাল সোমবার রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করে একটু আগেভাগেই ঘুমিয়ে পড়েন সাহাব উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার সকালে যখন তাঁর ঘুম ভাঙে, তখন তিনি দেখেন, ঘরের দরজা খোলা, ভেতরে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে আসবাব ও কাপড়চোপড়। লোহার আলমারির দরজা, কাঠের আলমারির ড্রয়ার—সবকিছুই ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ঘরে রাখা তিন ভরি স্বর্ণালংকার, পাঁচ হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নেই।
সাহাব উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে। গতকাল রাতের কোনো এক সময়ে তাঁর বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘরের লোহার আলমারির দরজা ভেঙে লুটপাট এবং জিনিসপত্র তছনছ করা হলেও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকায় কিছুই বুঝতে পারেননি সাহাব উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
কেবল সাহাব উদ্দিনের ঘর নয়, গত চার দিনে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছে সন্তোষপুর ইউনিয়নের আরও তিনটি ঘরে। ভুক্তভোগীদের দাবি, চোরেরা তাঁদের কোনো বিশেষ কৌশলে ঘুম পাড়িয়ে ঘরের মালামাল লুট করেছে।
স্কুলশিক্ষক সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল বেলা দুইটার পর থেকেই চোখে ঘুম আর ভাবনায়ও অসারতা দেখা দেয়। রাতে বিছানায় শুতেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। রাতে খাটের পাশে থাকা লোহার আলমারি ভাঙার শব্দও বুঝতে পারিনি। বদ্ধ ঘরে চোর কখন, কীভাবে ঢুকেছে তার কোনো আলামত নেই।’
রাতে বিছানায় শুতেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। রাতে খাটের পাশে থাকা লোহার আলমারি ভাঙার শব্দও বুঝতে পারিনি। বদ্ধ ঘরে চোর কখন, কীভাবে ঢুকেছে, তার কোনো আলামত নেই।সাহাব উদ্দিন, বাসিন্দা, সন্তোষপুর ইউনিয়ন, সন্দ্বীপ।শিক্ষক সাহাব উদ্দিনের ছেলে শাহীন (২৫) স্থানীয় মুনশিরহাটে একটি দোকান করেন। গতকাল বিকেলে দোকানেই তিনি ঝিমুতে শুরু করেন। পরিবারের সবারই গতকাল ঘুম ঘুম ভাব থাকায় শাহীনের ধারণা, ঘরে দুপুরের খাবারের সঙ্গে কেউ কিছু মিশিয়ে দিয়েছেন। শাহীন বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল প্রেশার লো (রক্তচাপ কমে যাওয়া) হয়ে গেছে। গতকাল বিকেলেই দোকানে বারবার ঢলে পড়ে যাচ্ছিলাম। পরে আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রেশারও চেক করি।’
আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় সাহাব উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে মুখোমুখি তিনটি ঘর। সাহাব উদ্দিনের ঘরের আসবাব ও কাপড়চোপড় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে আছে মেঝেতে। ভাঙা আলমারি পড়ে আছে। কয়েকটি খোলা ব্যাগও পড়ে আছে মেঝেতে। সাহাব উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের চোখে তখনো ঘুম ঘুম ভাব।
একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমানত আলী সেরাংয়ের বাড়ির মিজানুর রহমানের ঘরেও গত রাতে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘরটিতে রাতে আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র ও টাকা চুরির ঘটনা ঘটলেও টের পাননি বাসিন্দারা। মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী ঘটেছিল জানি না। আমার শোবার ঘর থেকেই একটি ব্রিফকেস নিয়ে গেল, লোহার আলমারি ভেঙে সব জিনিসপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রেখে গেল—আমি, আমার স্ত্রী আর মা কিছুই টের পাইনি।’
গত রোববার রাতে একই কায়দায় চুরি হয় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবাসী ফরিদ উদ্দিনের ঘরে। ফরিদ বলেন, ‘বিকেল থেকেই ঘরের সবার ঝিমুনি ছিল। রাতে তাড়াতাড়ি সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে ৮টায় ঘুম ভেঙে দেখি ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মুঠোফোন চুরি করা হয়েছে। কে আমাদের এভাবে ঘুম পাড়িয়ে সবকিছু চুরি করে নিয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
গত শুক্রবার রাতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গতকাল বাসিন্দাদের সঙ্গে এ বিষয়ে মতবিনিময় করেছি। তাঁদের সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের টহল বাড়ানোর সিদ্ধান্তও হয়। তবে এরপর রাতেই দুটি ঘরে চুরির ঘটনা ঘটেছে।’ ওসি বলেন, ‘হয়তো নেশাজাতীয় কোনো দ্রব্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে চুরির ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত নই। আমরা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখছি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স হ ব উদ দ ন র ল হ র আলম র চ র র ঘটন জ ন সপত র গতক ল ব র র দরজ ন র ঘর
এছাড়াও পড়ুন:
বাসিন্দাদের ‘ঘুম পাড়িয়ে’ ৪ ঘরে চুরি
দুপুরে খাবারের পর থেকেই ঘুম ঘুম ভাব ছিল স্কুলশিক্ষক সাহাব উদ্দিনের। ঘরে থাকা স্ত্রী-পুত্রও ঝিমাচ্ছিলেন। তাই গতকাল সোমবার রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করে একটু আগেভাগেই ঘুমিয়ে পড়েন সাহাব উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার সকালে যখন তাঁর ঘুম ভাঙে, তখন তিনি দেখেন, ঘরের দরজা খোলা, ভেতরে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে আসবাব ও কাপড়চোপড়। লোহার আলমারির দরজা, কাঠের আলমারির ড্রয়ার—সবকিছুই ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ঘরে রাখা তিন ভরি স্বর্ণালংকার, পাঁচ হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নেই।
সাহাব উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে। গতকাল রাতের কোনো এক সময়ে তাঁর বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘরের লোহার আলমারির দরজা ভেঙে লুটপাট এবং জিনিসপত্র তছনছ করা হলেও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকায় কিছুই বুঝতে পারেননি সাহাব উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
কেবল সাহাব উদ্দিনের ঘর নয়, গত চার দিনে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছে সন্তোষপুর ইউনিয়নের আরও তিনটি ঘরে। ভুক্তভোগীদের দাবি, চোরেরা তাঁদের কোনো বিশেষ কৌশলে ঘুম পাড়িয়ে ঘরের মালামাল লুট করেছে।
স্কুলশিক্ষক সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল বেলা দুইটার পর থেকেই চোখে ঘুম আর ভাবনায়ও অসারতা দেখা দেয়। রাতে বিছানায় শুতেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। রাতে খাটের পাশে থাকা লোহার আলমারি ভাঙার শব্দও বুঝতে পারিনি। বদ্ধ ঘরে চোর কখন, কীভাবে ঢুকেছে তার কোনো আলামত নেই।’
রাতে বিছানায় শুতেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। রাতে খাটের পাশে থাকা লোহার আলমারি ভাঙার শব্দও বুঝতে পারিনি। বদ্ধ ঘরে চোর কখন, কীভাবে ঢুকেছে, তার কোনো আলামত নেই।সাহাব উদ্দিন, বাসিন্দা, সন্তোষপুর ইউনিয়ন, সন্দ্বীপ।শিক্ষক সাহাব উদ্দিনের ছেলে শাহীন (২৫) স্থানীয় মুনশিরহাটে একটি দোকান করেন। গতকাল বিকেলে দোকানেই তিনি ঝিমুতে শুরু করেন। পরিবারের সবারই গতকাল ঘুম ঘুম ভাব থাকায় শাহীনের ধারণা, ঘরে দুপুরের খাবারের সঙ্গে কেউ কিছু মিশিয়ে দিয়েছেন। শাহীন বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল প্রেশার লো (রক্তচাপ কমে যাওয়া) হয়ে গেছে। গতকাল বিকেলেই দোকানে বারবার ঢলে পড়ে যাচ্ছিলাম। পরে আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রেশারও চেক করি।’
আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় সাহাব উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে মুখোমুখি তিনটি ঘর। সাহাব উদ্দিনের ঘরের আসবাব ও কাপড়চোপড় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে আছে মেঝেতে। ভাঙা আলমারি পড়ে আছে। কয়েকটি খোলা ব্যাগও পড়ে আছে মেঝেতে। সাহাব উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের চোখে তখনো ঘুম ঘুম ভাব।
একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমানত আলী সেরাংয়ের বাড়ির মিজানুর রহমানের ঘরেও গত রাতে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘরটিতে রাতে আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র ও টাকা চুরির ঘটনা ঘটলেও টের পাননি বাসিন্দারা। মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী ঘটেছিল জানি না। আমার শোবার ঘর থেকেই একটি ব্রিফকেস নিয়ে গেল, লোহার আলমারি ভেঙে সব জিনিসপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রেখে গেল—আমি, আমার স্ত্রী আর মা কিছুই টের পাইনি।’
গত রোববার রাতে একই কায়দায় চুরি হয় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবাসী ফরিদ উদ্দিনের ঘরে। ফরিদ বলেন, ‘বিকেল থেকেই ঘরের সবার ঝিমুনি ছিল। রাতে তাড়াতাড়ি সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে ৮টায় ঘুম ভেঙে দেখি ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মুঠোফোন চুরি করা হয়েছে। কে আমাদের এভাবে ঘুম পাড়িয়ে সবকিছু চুরি করে নিয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
গত শুক্রবার রাতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীমের ঘরেও চুরির ঘটনা ঘটে। ইব্রাহীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকেই আমি এবং আমার স্ত্রীর ঝিমুনি শুরু হয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। রাতে পুরো ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে দেড় ভরি স্বর্ণালংকার ও ৭০ হাজার টাকা চুরি করা হয়েছে। আমার পাকা ঘরে কোন দিক দিয়ে চোর ঢুকেছে, সেটিও বুঝতে পারছি না। যতটুকু মনে পড়ে, আমরা দরজা বন্ধ করেই ঘুমিয়েছি।’
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গতকাল বাসিন্দাদের সঙ্গে এ বিষয়ে মতবিনিময় করেছি। তাঁদের সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের টহল বাড়ানোর সিদ্ধান্তও হয়। তবে এরপর রাতেই দুটি ঘরে চুরির ঘটনা ঘটেছে।’ ওসি বলেন, ‘হয়তো নেশাজাতীয় কোনো দ্রব্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে চুরির ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত নই। আমরা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখছি।’