চট্টগ্রাম নগরের ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। কার্যক্রম–নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির সমর্থনে আজ মঙ্গলবার সকালে নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় এই মিছিল করেন তাঁরা।

মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের একটি ব্যানার নিয়ে মিছিলটিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। ব্যানারটির নিচে লেখা—‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম মহানগর’। মিছিলে শেখ হাসিনার নাম নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি মিছিল বের করেছে। সাত-আটজন ছেলে ১৫ সেকেন্ডের মিছিলটি বের করেন। সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এর আগে গত রোববার ভোরে নগরের ষোলশহর এলাকায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারের মাঠে মাঠে সোনালী ধানের হাতছানি

মৌলভীবাজারে অনুকূল আবহাওয়ায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকের মনে বিরাজ করছে আনন্দ। আর কয়েকদিন পরে শুরু হবে হেমন্তের ধান কাটার উৎসব। 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে প্রকৃতিতে রোদ-বৃষ্টির অপূর্ব এক ভারসাম্য বিরাজমান ছিল। এতে বৃষ্টির সাথে হালকা বাতাসে খেতের মাঠে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় উপকারী সার নাইট্রোজেন। যা ধানি জমির উর্বরা শক্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। ধান গাছের নিচে জমে থাকা পরিমিত পানি প্রচুর খাদ্য ও শক্তি যোগায়। এর প্রভাবে চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজারে ভালো ফলন হয়েছে আমনের। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে দুলছে সোনালী ধানের শীষ। আনন্দে ভরে উঠেছে কৃষকের মন।

মৌলভীবাজারের মনু, ধলাই হাকালুকি আর কাওয়াদীঘি হাওর পারের ক্ষেতের মাঠে এখন ধানি আমেজ।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৫ হেক্টর চাষবাদ কম হয়েছে। তবে ফলন ভালো হওয়ায় ধান উৎপাদনের মাত্রা ঠিক থাকবে।

কৃষকরা জানিয়েছেন শঙ্কা কেটে গেছে, বিগত কয়েক বছর পর পরিমিত রোদ বৃষ্টির কারণে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে গোলায় ধান তুলতে পারবেন তারা।

এখন হেমন্তের সোনালী রোদে ঝলমল করছে আমন ধানের সেই মাঠ। মৌলভীবাজারের রাজনগর, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়াসহ জেলার সাত উপজেলার মাঠে মৃদু হাওয়ায় দুলছে সোনালী ধানের শীষ।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জলাবদ্ধতার কারনে চলতি মৌসুমে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়নি। সারা জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৮ হাজার ৩৫ হেক্টর। আগাম জাতের বিনা-১৭ ও ৭ ব্রি - ধান ৭১-৭৫সহ কিছু জাত টিকে আছে। তবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করায় নতুন জাতের বি ধান-১০৩ লাগানোর পর এখন সোনালী ধানে মাঠ ভরে উঠেছে।

সরেজমিনে কমলগঞ্জের শ্রীনাথপুর, মুন্সিবাজারের রূপসপুর, শ্যামের কোনা এবং রাজনগরের বালিসহ, বড়গাও, মনসুরনগর ও কুলাউড়া উপজেলা হাওর হাকালুকি জাবদা এলাকার খেতের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ধানের শীষে বাতাসে ঢেউ খেলছে।

স্থানীয় কৃষকরা বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। রোদ ও বৃষ্টি ভারসাম্য থাকায় বিগত কয়েক বছরে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এবারের ধানে তেমন চিটা হয়নি।

কমলগঞ্জ উপজেলার শ্যামেরকোনা গ্রামের আব্দুল আহাদ বলেন, “ভালো ফলন হওয়ায় ২৫ বিঘা খেতে ৪৫০ মন ধান গোলায় উঠার আশা রাখি। ফসলে আর কোনো ক্ষতি হবে এমন শঙ্কা কমে গেছে।”

রাজনগর উপজেলার বালিসহর গ্রামের মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘‘আমন খেতের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ২৪ সালের বানের পানির সাথে পলি মাটি আসার পর থেকে এলাকার জমিতে ফসল ভালো হচ্ছে। এখন মাঠের সোনালী ধান মন কেড়ে নেয়।”

রাজনগর ঘরগাও গ্রামের আব্দুর রহীম বলেন, “আট বিঘা জমিতে বি-১০৩ নতুন জাতের ধান রোপন করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। এখন যদি আর কোন বিপর্যয় না আসে, তবে গোলায় ধান উঠবে।”

কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওর পারের জাবদা গ্রামের সুমন মিয়া। প্রবাসে যাওয়ার ইচ্ছা ত্যাগ করে কৃষি খেতে মন দিয়েছেন। তিনি চলতি মৌসুমে ১২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করে লাভবান হওয়ার আশায় আছেন।

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক কৃষিবিদ মো. জালাল উদ্দিন বলেন, “চলতি মৌসুমে আমাদের আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৮ হাজার ৩৫ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর। ১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়নি। চলতি মৌসুমে পরিমিত বৃষ্টি হওয়ায় ধানি জমিতে পানি থাকায় ধানের খাদ্যে ঘাটতি দেখা দেয়নি। এতে ফলন ভালো হয়েছে। ধানে চিটা হবে না। ফলন ভালো হওয়ায় ধান উৎপাদনের মাত্রা ঠিক থাকবে।”

ঢাকা/আজিজ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ