জুলাই সনদের বাইরে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে দায়দায়িত্ব সরকারের: বিএনপি
Published: 11th, November 2025 GMT
বিএনপি বলেছে, জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে গিয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে তার সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে। সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে তখন সেই সিদ্ধান্ত মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভার সিদ্ধান্ত জানাতে দলের স্থায়ী কমিটি আজকের এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ প্রায় এক বছরব্যাপী আলোচনা হয়। আলোচনার ভিত্তিতে কতিপয় নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত জুলাই জাতীয় সনদ গত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয়। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে সকলে অঙ্গীকারবদ্ধ।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে কোনো বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রসঙ্গে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তা বিভ্রান্তিকর। ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করার শামিল। তাঁরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চান, জুলাই জাতীয় সনদে উল্লিখিত বিষয়ের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সেই ক্ষেত্রে সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারের শেষ চেষ্টা, বিএনপি–জামায়াত–এনসিপি কী ভাবছে৫ ঘণ্টা আগেবিএনপির স্থায়ী কমিটি সরকারের প্রতি এ বিষয়ে ‘সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণের’ আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ই জ ত য় সনদ সরক র র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে সরকারকে দায় নিতে হবে
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের সময় প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এমন কার্যক্রম প্রমাণ করে যাঁরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি এই দলগুলোর কোনো শ্রদ্ধা নেই। এমনকি ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বেলায়ও এটাই সত্য।
রাজনৈতিক দলগুলো এখন দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতিগত মতপার্থক্যকে সামনে এনে এবং নিজেদের পছন্দমতো পদ্ধতিকে সবার ওপর চাপিয়ে দিয়ে এরা প্রমাণ করতে চাইছে, তারাই প্রভাবশালী দল। এই প্রভাব বিস্তারকারী শক্তি প্রদর্শন করে নির্বাচনের আগেই তারা বিজয়ী দল হিসেবে ভোটের মাঠের দখল নিতে চায়।
আরও পড়ুনসরকার যেদিকে যাবে, পরিস্থিতি সেদিকে ঘুরবে৪১ মিনিট আগেঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণভোট, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বৈত ক্ষমতা তথা সংসদ সদস্যের ক্ষমতা এবং কনস্টিটুয়েন্ট পাওয়ার (গাঠনিক ক্ষমতা) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতভেদ ছিল না। মতভিন্নতা ছিল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে। অধিকাংশ দল চেয়েছে উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) প্রশ্নে বিএনপি তাদের অবস্থান থেকে যেন সরে আসে, অর্থাৎ উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি যেন মেনে নেয়। কিন্তু এখানে বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছে। নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে সমাধান করতে পরে ঐকমত্য কমিশন চতুরতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। সরকারও এ ক্ষেত্রে সমাধানের পথে না গিয়ে দায়িত্বহীন আচরণ করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে তার বৈশিষ্ট্য এবং দায়িত্ব মনে রাখতে হবে। কতগুলো দায়িত্ব দিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। তারা কোনো রাজনৈতিক দল হিসেবে ক্ষমতা অর্জন করেনি। সব দলের সমর্থনে তারা কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের কাজ করছে। তারা কোনো দলের পক্ষ বা কোনো দলের প্রতিপক্ষ হতে পারবে না। সরকারকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে, দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
আরও পড়ুনসরকারের সিদ্ধান্ত না মানলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে১ ঘণ্টা আগেএখন সরকার বলছে, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা বসে যেন ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দেয়। সরকারের উচিত ইনফরমালি হলেও বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বসা, আলোচনা করা। সরকার যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে, তাহলে একটা সমাধান আসবে।
আর যদি সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে কোনো সমাধানে না আসতে পারে কিংবা এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে না পারে, তাহলে তা জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। সরকারকে মনে রাখতে হবে, উদ্ভূত জটিল পরিস্থিতির কারণে আগামী নির্বাচন যদি ফেব্রুয়ারিতে না হয়, তাহলে এর দায়দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলো নেবে না, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
হাসনাত কাইয়ূম: সভাপতি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
আরও পড়ুনন্যূনতম ঐক্য না হলে নির্বাচন শঙ্কায় পড়বে৩ ঘণ্টা আগে