হিন্দি টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় তারকা জুটি আশ্লেষা সাওয়ান্ত ও সন্দীপ বাসওয়ানা। দীর্ঘ ২৩ বছর লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর সাতপাকে বাঁধা পড়লেন এই দম্পতি। গত ১৬ নভেম্বর বৃন্দাবনের চন্দ্রোদয় মন্দিরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। এসময় দুই পরিবারের সদস্যরা উপস্থিতিত ছিলেন।   

সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিয়ের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে সন্দীপ লেখেন, “মিস্টার অ্যান্ড হিসেবে ঠিক এভাবেই আমরা নতুন এক অধ্যায়ে পা রাখলাম.

..। ঐতিহ্য আমাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। সমস্ত আশীর্বাদের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।” 

আরো পড়ুন:

বিয়ে স্থগিত: হবু স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন গায়ক পলাশ?

ধর্মেন্দ্রর সেরা পাঁচ চরিত্র

বিয়ের খবর পেয়ে সন্দীপ-আশ্লেষার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এ আলাপচারিতায় সন্দীপ বলেন, “গত এপ্রিলে আশ্লেষা আর আমি বৃন্দাবন গিয়েছিলাম; সেখানে রাধা–কৃষ্ণের মন্দিরগুলোর সঙ্গে গভীর এক সংযোগ অনুভব করি। সেই সফরই আমাদের ২৩ বছর পর বিয়ে করার অনুপ্রেরণা দেয়। আমাদের বাবা-মা সবচেয়ে বেশি খুশি—তারা অনেক দিন ধরে এই মুহূর্তটির অপেক্ষায় ছিলেন। আমরা সবকিছু সহজ-সরল রাখতে চেয়েছি আর কৃষ্ণ মন্দিরে বিয়ে করার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে।” 

বিয়ের দারুণ আনন্দিত অশ্লেষা। এ অভিনেত্রী বলেন, “অবশেষে আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পেরে ভীষণ আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। বৃন্দাবন ছিল আদর্শ স্থান—সেখানে গিয়েই আমরা গভীর টান অনুভব করেছিলাম। এটা ছিল খুব স্বতঃস্ফূর্ত, হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্ত। আমরা এটিকে প্রাইভেট রাখারার সিদ্ধান্ত নিই, শুধু পরিবারের লোকজন সঙ্গে ছিলেন।” 

দীর্ঘ দিন লিভ-ইনের পর বিয়ে করেছেন এই তারকা জুটি। এ নিয়ে সন্দীপ বলেন, “অনেক বছর ধরে একসঙ্গে থাকার পরও কেন আমরা বিয়ে করিনি—এ প্রশ্নে শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমার কাছে তো মনে হতো আমরা অনেক আগে থেকেই বিবাহিত!”  

বিয়ের অনুভূতি ব্যক্ত করে সন্দীপ বলেন, “আমি আলাদা কিছু অনুভব করছি না। এটা এমন কিছু ছিল, যা আমরা একদিন না একদিন করবই—এবার সেটা করে ফেললাম। আমরা খুশি। ভালোবাসা-আশীর্বাদ পেয়ে আমরা আপ্লুত। আমরা সত্যিই ধন্য। কারণ আমাদের বন্ধু-বান্ধব এবং সুহৃদদের কাছ থেকে প্রচুর ভালোবাসা পাচ্ছি।”  

২০০২ সালে ‘কিউ কি সাস বি কাভি বহু থি’ ধারাবাহিকের শুটিং সেটে প্রথম দেখা সন্দীপ-আশ্লেষার। সেখান থেকেই প্রেম, অবশেষে পরিণয় পেল তাদের ভালোবাসা।

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র সন দ প ব আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রাতভর গবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

সাভারের আশুলিয়ায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শের আলীকে (২০) মেসে ডেকে নিয়ে রাতভর মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন তার সহপাঠীরা। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে উপজেলার পাথালিয়া ইউনিয়নের নলাম এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। রাতেই তাকে আশুলিয়ার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন সহপাঠীরা।

আরো পড়ুন:

‘উদাসীনতায়’ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সংকটে যবিপ্রবি

জাবিতে একাডেমিক নিপীড়ন প্রতিরোধে নতুন প্ল্যাটফর্মের যাত্রা শুরু

অভিযুক্তরা হলেন- অন্তু দেওয়ান (২২), মেহেদী হাসান (২১) ও আশরাফুল (২২)। তারা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। 

শের আলী একই বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জের মাহমুদপুর এলাকার বাসিন্দা। আশুলিয়ায় একটি মেসে থেকে পড়ালেখা করছেন। 

সরেজমিনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে গিয়ে শের আলীকে চিকিৎসাধীন দেখা যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, শারীরিক নির্যাতন ও মারধরের কারণে তার গায়ে জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে কয়েক দিন সময় লাগবে।

ভুক্তভোগী শের আলী বলেন, “আমরা যারা মেসে থাকি সবাইকে দাওয়াতের কথা বলে ডাকা হয়। প্রথমে আমরা মাজারে আসি, এরপর আমরা আশরাফুল ভাইয়ের মেস বাসায় যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমাকে এবং আমার সহপাঠী মাহিমকে পেঁয়াজ ছিলতে বলা হয়। আমি বলি, পেঁয়াজ ছিলতে পারি না, আমি রসুন ছিলব। রসুন ছিলছিলাম, তখন আশরাফুল ভাই আমাকে ডেকে বলেন, মুখে মুখে তর্ক করিস কেন? আমি বলি, বড় ভাইদের অসম্মান হয় এমন কিছু তো বলিনি।”

“তারপরে আশরাফুল ভাই বললেন, তোকে মারতে কী লাগবে? তোকে মারলে কী হবে? আমি তখন বলি, আমাকে মারলে কিছুই হবে না। এরপর আমি সেখান থেকে বাসায় চলে আসি”, যোগ করেন তিনি। 

এই শিক্ষার্থী বলেন, “রাত ৯টার দিকে সহপাঠীদের দিয়ে আমাকে আবার ওই বাসায় ডাকিয়ে নেন, আমি যাই। ভুল হয়েছে বলে আমি সবার কাছে ক্ষমা চাই। এরপর সেখানে রান্না করা খিচুড়ি খাই।”

শের আলী অভিযোগ করে বলেন, “খাবার খাওয়ার পর সবাইকে যেতে বলেন তারা। আমাকে একা আটকায়, এরপর এক পায়ে দাঁড়াতে বলে। আমি দাঁড়াই। অন্তু ভাই ডেকে বলেন, কখনো হস্তমৈথুন করছিস? আমি বললাম, যৌবনে সবাই করে। তখন অন্তু ভাই আমাকে টানা ৫-৬টা চড় মারেন। এরপর বলেন, প্যান্ট খোল, যখন অস্বীকৃতি জানাই, তখন তরিকুল ভাই আমাকে মারেন। এরপর আমাকে প্যান্ট খুলে অন্তু ভাই পেটে লাথি মারেন। ৩২ ব্যাচের মেহেদি ভাই, আশরাফুল ভাই দুইজন আমাকে চড় মারতে থাকেন। এরপর আমি তাদের পায়ে ধরি, মাফ চাই। সেখানে ১৫-২০ জন ছিল ৩২ ব্যাচের, তাদের পায়ে ধরি, আমার ভুল হয়ে গেছে বলি। এরপর আমাকে ছাড়ে।” 

“সেখান থেকে বের হয়ে আমি একটা মসজিদে যাই, তারপর বাইরে এলে বন্ধু মাহিম দেখে আমাকে নিয়ে যায়। পরে তারাই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে আসে।”

তিনি বলেন, “সকালে ৩২ ব্যাচের লাবিব ভাই হাসপাতালে এসে এটা আর বাড়াতে চাও, নাকি শেষ করবা বলে হুমকি দেয়। আমি এই ঘটনার যথাযথ বিচার চাই। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেব।” 

আহত শের আলীকে হাসপাতালে নেওয়া মাহিম খান বলেন, “সিনিয়রদের কাছে ডাকা হয়, আমরা সবাই যাই, শের আলীও যায়। তখন পেঁয়াজ ছিলি। শের আলীকেও পেঁয়াজ ছিলতে বলা হয়, সে বলে পারে না ওর চোখে সমস্যা। শের আলী রসুন ছিলে। তখন আশরাফুল ভাই ডেকে নেয়, শুনি চেচামেচির আওয়াজ। পরে ও বাসায় চলে যায়। আমাকে আর এক বন্ধুকে দিয়ে শের আলীকে রাত ৯টার দিকে ডাকিয়ে আনায়। সে এসে বড় ভাইদের কাছে মাফ চায়।” 

তিনি বলেন, “রাতে খাওয়ার পর সবাই চলে যায়, কিন্তু শের আলীকে তারা রাখে। বড় ভাইদের রুমে নেয়। কিছুক্ষণ পর দেখি কাঁদতে কাঁদতে বের হয়েছে। তখন বন্ধুদের ডেকে আনি, জানতে পারি মারধর হয়েছে। এরপর তাকে প্রথমে রুমে নেই, পরে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”

এই বিষয়ে জানতে অন্তু দেওয়ানের মোবাইলে কল করা হয়। প্রশ্ন করলে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না জানিয়ে কল কেটে দেন। পরবর্তীতে তিনি আর কল রিসিভ করেননি।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. নকিব জাহাঙ্গীর বলেন, “রাতে ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, ভর্তি করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা দেওয়া হবে।”

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য সচিব কনক চন্দ্র রায় বলেন, “হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীকে দেখে এসেছি। ভিসিসহ বিষয়টি নিয়ে বসা হয়েছে। এই বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, “ঘটনাটি জানা নেই। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ